কুমিল্লার লালমাই পাহাড়ে কাজু বাদাম চাষে আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছেন চাষিরা। বেশি লাভের আশায় কুমিল্লা বাড়ছে বিদেশি কাজু বাদামের চাষ। কৃষকরা স্বপ্ন দেখছেনে এ বাদাম বিদেশে রপ্তানি করে বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের।
কৃষি অফিসের সূত্র মতে, কুমিল্লার আদর্শ সদর, সদর দক্ষিণ ও লালমাই উপজেলায় কাজু বাদামের চাষ হচ্ছে। তার মধ্যে আদর্শ সদরে তিনটি স্থানে। সদর দক্ষিণে তথা লালমাই পাহাড় এলাকায় আটটি স্থানে কাজু বাদামের চাষ করা হচ্ছে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, শাল গাছের সঙ্গে আঁকাবাঁকা কাজু বাদাম গাছের সারি। কোনোটির বাদাম এখনো কাঁচা। কোনোটি পেকে গেছে। শ্রমিকরা ফল সংগ্রহ করছেন। পাকা রঙিন ফলের গা থেকে ভেসে আসে মিষ্টি ঘ্রাণ। ফলের ওপরের অংশ থেকে বাদাম পাওয়া যায়, নিচের অংশ থেকে জুস, ভিনেগার ও মসলা তৈরি করা হয়।
কুমিল্লা গার্ডেনার্স সোসাইটির পরিচালক ডা. আবু মোহাম্মদ নাঈম বলেন, কাজু বাদাম হৃৎপিন্ডের শক্তি বৃদ্ধি করে। হাড় ও দাঁতের গঠনে সাহায্য করে। ক্যান্সার প্রতিরোধ ও হজমে সাহায্য করে। এ ছাড়া ডায়াবেটিস রোগীর জন্য উপকারী ও অবসাদ দূর করে।
লালমাই পাহাড়ের বড় ধর্মপুর এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, পাহাড়ের ঢালুতে কাজু বাদামের গাছের সারি। শ্রমিকরা আগাছা পরিষ্কার করছেন। গাছের গ্রোথও ভালো। এ বাগানের উদ্যোক্তা তারিকুল ইসলাম মজুমদার বলেন, কৃষি বিভাগের সহযোগিতা কাজু বাদাম চাষ করছি। ফসলের অবস্থা ভালো। লালমাই পাহাড় এ ফসলের উপযোগী।
সদর দক্ষিণ উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা হাবিবুল বাশার চৌধুরী বলেন, পাহাড়ি মাটি, আবহাওয়া সবই কাজু বাদাম চাষের বিশেষ উপযোগী। বীজ থেকে চারা হয়। চারা লাগানোর তিন থেকে চার বছরের মধ্যে ফল ধরে। ফেব্রুয়ারি-মার্চে ফুল ধরে। ফল সংগ্রহ শুরু মে মাস থেকে। রোগ-বালাইও কম। আর একটি গাছে জাতভেদে ৪ থেকে ৪০ কেজি পর্যন্ত বাদাম হয়। সাধারণত পেকে নিচে পড়ে গেলে সংগ্রহ করে শুকানো হয়। আর শুকালে ১ বছর রাখা সম্ভব।
কৃষি কর্মকর্তাদের আশাবাদ- কৃষকরা আন্তরিক পরিচর্যা করলে এখানে ভালো কাজু বাদাম উৎপন্ন হবে। লালমাই পাহাড়ে কাজু বাদামের চাষ বাড়লে দেশের কাজু বাদামের চাহিদা পূরণে ভূমিকা রাখতে পারবে। ইকোপার্কের কাজু বাদামের বাগানটি সঠিকভাবে পরিচর্যা করা হলে এ থেকে বাড়বে রাজস্ব আয়।
রাজেশপুর ইকোপার্কের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হুমায়ুন কবির বলেন, এখানে সীমানা প্রাচীর নেই। অনেকে কাজু বাদামের গুরুত্ব বুঝে না। না বুঝে নষ্ট করে ফেলেন। বন কর্মীদের অক্লান্ত পরিশ্রমে বাগানটি ৩৫ বছর ধরে ফল দিয়ে যাচ্ছে।
এ বিষয়ে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর কুমিল্লার উপ-পরিচালক মো. মিজানুর রহমান বলেন, আমরা দুই বছর ধরে সদর, সদর দক্ষিণ ও লালমাই উপজেলার বিভিন্ন স্থানে কাজু বাদামের চাষ করেছি। কম্বোডিয়া, ভারত ও ভিয়েতনামের বীজ লাগিয়েছি। এতে ভালো ফল আসবে। তা রপ্তানিও করা যাবে। আমাদের কিছু গাছে ফুল এসেছে। আশা করছি এক-দুই বছরের মধ্যে ভালো ফল পাব।
সম্পাদক : শাদমান আল আরবী | নির্বাহী সম্পাদক : তানভীর আল আরবী
ঠিকানা : ঝাউতলা, ১ম কান্দিরপাড়, কুমিল্লা-৩৫০০। ফোন : ০১৩১৬১৮৬৯৪০, ই-মেইল : [email protected], বিজ্ঞাপন: [email protected], নিউজরুম: [email protected] © ২০২৩ রাইজিং কুমিল্লা সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত। | Design & Developed by BDIGITIC