কুমিল্লার তিতাস উপজেলায় চাচির অনৈতিক সম্পর্কের দৃশ্য দেখে “দেইখা ফালাইছি হগলরে কইয়া দিমু” বলায় সায়মন নামের এক শিশুকে হত্যার ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় শনিবার রাতে একজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
রবিবার (৩১ ডিসেম্বর) কুমিল্লা জেলা পুলিশ সুপার মো. আব্দুল মান্নান সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান।
সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার জানান, গত ১৬ আগস্ট তিতাস উপজেলার কলাকান্দি গ্রামের খোরশেদা আক্তারের (৪০) ছেলে সায়মন (৭) আগস্ট নিখোঁজের পর ১৯ আগস্ট সকালে তার অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার করা হয়। পরে শিশুর মা খোরশেদা আক্তার তিতাস থানায় মামলা করেন।
পুলিশ সুপার জানান, এঘটনার পর পুলিশ মো. বিল্লাল পাঠানকে (৪২) গ্রেফতার করে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে হত্যাকান্ডে সে এবং এই মামলার এজাহারনামীয় আসামি শেফালী আক্তার জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে।
সে জানায় যে, শেফালী আক্তার সম্পর্কে তার জেঠস (স্ত্রীর বড় বোন)। শেফালীর স্বামী প্রবাসী হওয়ায় তাদের মাঝে একটা অবৈধ পরকীয়া প্রেমের সম্পর্ক হয়। ১৬ আগস্ট বিকেলে বিল্লাল পাঠান ও শেফালী অনৈতিক কাজে লিপ্ত হয়। তাদের এই অনৈতিক কর্মকান্ডে লিপ্ত থাকা অবস্থায় ঐ বাড়িতে খেলতে যাওয়া শিশু সায়মন তাদেরকে নগ্ন অবস্থায় দেখে ফেলে।
এসময় সায়মন বলে যে, “দেইখা ফালাইছি হগলরে কইয়া দিমু।” শিশু সায়মনের এমন কথা শুনে বিল্লাল আতঙ্কিত হয়ে সায়মনের গলা ও মুখ চেপে ধরে।
একই সাথে সায়মন যেনো এই কথা কাউকে জানাতে না পারে এটি নিশ্চিত করার জন্য হত্যার পরিকল্পনা করে। শেফালী তার ঘরে থাকা আলমারীর ওপর থেকে ছুরি এনে দিলে আসামি বিল্লাল শিশু সায়মনের বুকের দুই পাশে তিন থেকে চারটি গভীর ছুরিকাঘাত করে। এভাবে সে দাঁড়িয়ে থেকে শিশু সায়মনের মৃত্যু নিশ্চিত করে।
এরপর আসামি বিল্লাল ও শেফালী ঘরে থাকা প্লাস্টিকের বস্তায় সায়মনের লাশ ঢুকিয়ে খাটের নিচে রেখে দেয়। রাত ১২টার পর লাশ গুম করার জন্য বাড়ির পাশে বালুর মাঠে কাশবনের ঝোঁপের মধ্যে বস্তাবন্দী লাশ ফেলে দিয়ে নিজ বাড়িতে চলে আসে।
পুলিশ সুপার আরও জানান, শেফালী আক্তারকে ঘটনার চারদিন পর গত ২০ আগস্ট ডিবির তিতাস উপজেলা থেকে গ্রেফতার করে আদালতে প্রেরণ করে।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার খন্দকার আশফাকুজ্জামান, মো. নাজমুল হাসান, জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রাজেশ বড়ুয়া প্রমুখ।
আরও পড়ুন- ডাকাতির টাকা ভাগাভাগি নিয়ে খুন হন কুমিল্লার সেই আ.লীগ নেতা