অতিবৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা প্রবল পানির স্রোতে কুমিল্লা বুড়িচং উপজেলা প্লাবিত হওয়ার পর এবার সেই পানিতে পার্শ্ববর্তী উপজেলা ব্রাহ্মণপাড়া ডুবতে শুরু করেছে। ইতিমধ্যে চারটি ইউনিয়ন বন্যার পানিতে প্লাবিত হয়েছে।
গতকাল শনিবার (২৪ আগস্ট) বিকাল থেকে পানি আসতে শুরু করলেও সন্ধ্যায় ডুবে হয়ে যায় উপজেলার মানুষের বাড়িঘর।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ২২ আগস্ট রাতে গোমতীর বুড়িচং উপজেলার বুরবুড়িয়া এলাকায় বাঁধ ভেঙে লোকালয়ে পানি প্রবেশ করে। রাতেই প্লাবিত হয় বুড়িচং উপজেলা। এতে আকস্মিক বন্যার সৃষ্টি হয় উপজলাজুড়ে। শনিবার সেই পানি প্রবেশ করে পাশ্ববর্তী ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলায়।
এছাড়া সকালে ব্রাহ্মণপাড়া এলাকায় ঘুংঘুর নদীর বাঁধ ভেঙে উপজেলায় পানি ঢুকতে থাকে। এখন পর্যন্ত ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার চার ইউনিয়নের ২৩ গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এর মাঝে মালাপাড়া, সাহেবাবাদ, শশীদল, নাইঘর, নোয়াপাড়া, কল্পবাস, ধান্যদৌল, ডগ্রাপাড়া, ব্রাহ্মণপাড়া সদর, নাগাইশ, বড় দুশিয়া ও চান্দলার গ্রামের বাড়িঘরে পানি ঢুকেছে বলে জানা গেছে।
এ বিষয়ে ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এস এম আজহারুল ইসলাম গণমাধ্যমকে বলেন, বুড়িচং থেকে বিভিন্ন পয়েন্টে প্রবল বেগে পানি ঢুকে চারটি ইউপি প্লাবিত হয়েছে। অল্প সময়ের মধ্যে আমার উপজেলা পরিষদের অফিসেও পানি ঢুকেছে। ইতিমধ্যে উপজেলা শিক্ষা অফিসের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানগুলোতে সমন্বয় করে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।‘
তিনি জানান, ‘২৯ টি আশ্রয় কেন্দ্রের ব্যবস্থা করা হয়েছে। আমাদের ৮টি উদ্ধার করে টিম সহ স্বেচ্ছাসেবীদের নিয়ে উদ্ধার কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছি৷ পাশাপাশি ঢাকা থেকে ড্রাম এনে উদ্ধার কাজে সহযোগিতার জন্য ভেলা তৈরি করেছি। স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবক, প্রশাসন ও সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে সমন্বয় করা হচ্ছে। যারা আশ্রয়কেন্দ্রে এসেছেন, তাদের জন্য শুকনো খাবারের ব্যবস্থা করা হয়েছে। যারা পানিবন্দি অবস্থায় আছেন, তাদের জন্য বিকল্প ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।‘
উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, এখন পর্যন্ত সাড়ে সাত হাজার মানুষ আশ্রয়কেন্দ্রে উঠেছেন। উপজেলার সব স্কুল কলেজ বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। প্রায় ৪০ হাজার মানুষ সন্ধ্যা থেকে পানিবন্দি ছিলেন। এ অবস্থায় আশ্রয়কেন্দ্রে না গিয়ে ঘরবাড়ি ছেড়ে উঁচু স্থানে অবস্থান নিয়েছেন এসব মানুষ।