কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় (কুবি) সাংবাদিক সমিতি’র (কুবিসাস) দশম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন, প্রকাশনা উৎসব,দায়িত্ব হস্তান্তর ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠিত হয়েছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার (১৫ ফেব্রয়ারি) বিজ্ঞান অনুষদের কন্ফারেন্স রুমে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
এসময় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির কেক কেটে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আনুষ্ঠানিকতা শুরু করেন। পরে সাংবাদিক সমিতির বিদায়ী কমিটির নেতারা নব-নির্বাচিত কার্যনির্বাহী কমিটির কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে দায়িত্ব হস্তান্তর করেন।
পরে তিন বিভাগে মোট সাতজনকে বার্ষিক রিপোর্টিং অ্যাওয়ার্ড প্রদান করা হয়। এর আগে, কুবিসাস’র বার্ষিক প্রকাশনা ‘সংকট সন্ধিক্ষণে গণমাধ্যম: প্রেক্ষিত বাংলাদেশ’র মোড়ক উন্মোচন করেন পিআইবির মহাপরিচালক জাফর ওয়াজেদ।
আলোচনা অনুষ্ঠানে দৈনিক যায়যায়দিনের ক্যাম্পাস প্রতিনিধি মোহাম্মদ ইকবাল মুনাওয়ার (রুদ্র ইকবাল) স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক রেজিস্ট্রার ও পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. আবু তাহের, পরিসংখ্যান বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ড. দুলাল চন্দ্র নন্দী ও নৃবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মোহাম্মদ আইনুল হক বক্তব্য প্রদান করেন।
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও মার্কেটিং বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মেহেদী হাসান বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন অসঙ্গতি তুলে ধরে বক্তব্য দেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির বলেন, ‘কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির স্লোগান ‘সত্য ও ন্যায়ের পথে অবিচল’।
তবে সত্য ও ন্যায়ের পথে অবিচল থাকা এত সহজ না। এটা ফেব্রুয়ারি মাস বাঙালির জীবনের একটা মাহেন্দ্রক্ষণ। আড়াই হাজার বছরের বাঙালির যে ইতিহাস, সেই ইতিহাসের শ্রেষ্ঠতম সময় ১৯৪৮ ও ৫২ সালের ভাষা আন্দোলন। ভাষা আন্দোলন আমাদের শিখিয়েছে মাথা নত না করার। সত্যের পথে অবিচল থাকতে।’
তিনি আরও বলেন, ‘ভালো-মন্দ পাশাপাশি থাকে। সেখানে থেকে আমাদের ভালোকে বেছে নিতে হবে। আজ কুবিসাস’র ১০ম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন করছে। যা অত্যন্ত গৌরবের একটি দিন। কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৮ বছরে যত অর্জন রয়েছে, সেই অর্জনের পিছনে সাংবাদিকদের অনেক অবদান রয়েছে। আমাদের বড় বড় অর্জনগুলো জাতি জানতে পারে সাংবাদিকদের মাধ্যমে। বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল অসংগতি ও সাফল্য গণমাধ্যমে তুলে ধরতে আহ্বান জানাই।’
প্রধান আলোচকের বক্তব্যে জাফর ওয়াজেদ বলেন, ‘দুর্নীতি নিয়ে দেওয়া বক্তব্যকে কেন্দ্র করে সম্প্রতি আলোচনায় আসেন কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য। বর্তমানে শুধু এই উপাচার্য নয়, অনেক উপাচার্যের এমন ঘটনা রয়েছে। মূলত মেধাবীরা উপাচার্যের পদে আসতে চায় না। যার কারণে বর্তমানে এই অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে। সম্প্রতি কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে সাংবাদিককে বহিষ্কার খুবই নিন্দনীয় একটি ঘটনা।
এর ফলে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের যে নেতিবাচক প্রভাব তা সমাজেও পড়ছে। আর বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর অবস্থা এমন থাকবেই তবুও আপনাদের কাজ করতে হবে। সাংবাদিকদের ঝুঁকি নিতেই হবে। সাংবাদিকদের কিছু কিছু বিষয়ে অ্যাক্টিভিসস্ট হতে হবে। কেননা সাংবাদিকরা জনগণের জনমত তৈরি করে।’
এতে সাংবাদিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আহমেদ ইউসুফ আকাশের সঞ্চালনায় ও সাংবাদিক সমিতির সভাপতি মুহা. মহিউদ্দিন মাহির সভাপতিত্বে শিক্ষক সমিতির-২০২২ কমিটির সভাপতি অধ্যাপক ড. দুলাল চন্দ্র নন্দী ও পিআইবি’র পরিচালক (প্রশাসন) মো. জাকির হোসেন বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন।
এছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও কুমিল্লা জেলায় বিভিন্ন গণমাধ্যমে কর্মরত সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, ২০১৩ সালে ৬ ডিসেম্বর ‘সত্য ও ন্যায়ের পথে অবিচল’ স্লোগানকে ধারণ করে কুমিল্লা কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতি (কুবিসাস) আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা আরম্ভ করে।