আপনি কি প্রায়ই ঘুমের অভাব বোধ করেন? কাজের চাপে, রাত জাগার কারণে বা অন্য কোন কারণে? জানেন কি, পর্যাপ্ত ঘুম না পাওয়া শুধু ক্লান্তিই নয়, কার্ডিওভাসকুলার রোগ, উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস, স্থূলতা, বিষণ্নতা, হার্ট অ্যাটাক এবং স্ট্রোকের মতো গুরুতর সমস্যার ঝুঁকি বাড়িয়ে তুলতে পারে।
যুক্তরাষ্ট্রের একদল গবেষক বয়সভেদে মানুষকে কত সময় ঘুমাতে হবে তা নিয়ে বিস্তারিত গবেষণা করেছেন। আমেরিকান অ্যাকাডেমি অব স্লিপ মেডিসিন এবং দ্য স্লিপ রিসার্চ সোসাইটির মতে, বেশিরভাগ মানুষ পর্যাপ্ত ঘুম পায় না। সুস্থ থাকতে হলে প্রত্যেকেরই বয়স অনুযায়ী নির্দিষ্ট পরিমাণ ঘুমের প্রয়োজন।
টাইমস অব ইন্ডিয়ার একটি প্রতিবেদনে এই বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য উঠে এসেছে।
বয়স অনুযায়ী কতক্ষণ ঘুমানো উচিত:
মানুষের জীবনযাত্রা এবং কাজের ধরন বয়সের সঙ্গে সঙ্গে পরিবর্তিত হয়। একজন স্কুলছাত্র এবং একজন প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তির দৈনন্দিন কাজের ধরন এক নয়। তাই গবেষকরা বয়সভেদে ঘুমের প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্ব আরোপ করেছেন।
- নবজাতক: জন্মের পর নবজাতকরা বেশিরভাগ সময় ঘুমিয়ে থাকে। বিশেষজ্ঞদের মতে, জন্মের পর প্রথম তিন মাসের শিশুদের প্রতিদিন ১৪ থেকে ১৭ ঘণ্টা ঘুমানো উচিত।
- ৪ থেকে ১১ মাস: এই বয়সে শিশুদের বিভিন্ন বিকাশ ঘটে, তাই ঘুমের বিষয়টিতে বাবা-মায়ের সচেতন থাকা জরুরি। চার থেকে এগারো মাস বয়সী শিশুদের ১২ থেকে ১৫ ঘণ্টা ঘুমাতে হবে।
- ১ থেকে ২ বছর: এক বছর বয়সের পর শিশুদের চঞ্চলতা এবং কাজের ধরনে বেশ পরিবর্তন আসে। এক থেকে দুই বছর বয়সী শিশুদের ১১ থেকে ১৪ ঘণ্টা ঘুমাতে হবে।
- ৩ থেকে ৫ বছর: এই বয়সে শিশুরা প্রাক্স্কুলে যাওয়া শুরু করে। তারা বিভিন্ন বিষয় শিখতে থাকে এবং খেলাধুলায় ব্যস্ত থাকে। এই সময়ে শিশুদের ১০ থেকে ১২ ঘণ্টা ঘুমাতে হবে।
- ৬ থেকে ১২ বছর: বেশিরভাগ শিশু ৬ বছর বয়স থেকে স্কুলে যায়। ক্লাস, পড়াশোনা, খেলাধুলা সব মিলিয়ে তাদের অনেক ব্যস্ততা থাকে। তাই পর্যাপ্ত ঘুম না পেলে বিভিন্ন সমস্যা হতে পারে। ৬ থেকে ১২ বছর বয়সী শিশুদের ৯ থেকে ১২ ঘণ্টা ঘুমাতে হবে।
- ১৩ থেকে ১৮ বছর: কিশোর-কিশোরীদের জীবনে নানান পরিবর্তন আসে। তারা নতুন নতুন কাজে মনোযোগ দেয় এবং শারীরিক পরিবর্তনও হয়। তাই এই বয়সে তাদের প্রতিদিন ৮ থেকে ১০ ঘণ্টা ঘুমাতে হবে।
- ১৮ থেকে ৬০ বছর: ১৮ বছর বয়সের পর মানুষের জীবনে অনেক দায়িত্ব আসে। চাকরি, ব্যবসা এবং পরিবারের দায়িত্ব পালন করতে হয়। এই সময়ে ৭ থেকে ৯ ঘণ্টা ঘুমাতে হবে।
- ৬১ বছর এবং তার বেশি: বয়স্কদের কাজের চাপ কম থাকলেও, নানা রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তাই নিজেকে সুস্থ রাখতে ৭ থেকে ৮ ঘণ্টা ঘুমাতে হবে।
মনে রাখবেন, ব্যক্তিভেদে ঘুমের প্রয়োজনীয়তা ভিন্ন হতে পারে। যদি আপনি ঘুমের সমস্যায় ভুগছেন, তাহলে একজন বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন।