ঈদুল আজহায় দেশে ১ কোটি ৩ লাখ ৯৪ হাজার ৭৩৯টি কোরবানির পশুর সম্ভাব্য চাহিদা রয়েছে। এর মধ্যে কোরবানিযোগ্য পশু রয়েছে ১ কোটি ২৫ লাখ ৩৬ হাজার। অর্থাৎ, এ বছর ২১ লাখ ৪১ হাজার ৫৯৪টি পশু বেশি রয়েছে বলে জানিয়েছে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম।
বুধবার সচিবালয়ে এক ব্রিফিংয়ে এসব কথা বলেন তিনি।
প্রাণিসম্পদমন্ত্রী বলেন, গত বছরের চেয়ে এ বছর ৪ লাখ ১১ হাজার ৯৪৪টি কোরবানিযোগ্য পশু বেশি রয়েছে। গত বছর কোরবানিযোগ্য পশুর সংখ্যা ছিল ১ কোটি ২১ লাখ ২৪ হাজার ৩৮৯টি। চলতি বছর কোরবানিযোগ্য পশুর মধ্যে ৪৮ লাখ ৪৩ হাজার ৭৫২টি গরু ও মহিষ, ৭৬ লাখ ৯০ হাজার ছাগল-ভেড়া এবং অন্যান্য প্রজাতির পশু রয়েছে ২ হাজার ৫৮১টি।
তিনি আরো বলেন, দেশে কোরবানির পশুর কোনো ঘাটতি বা সংকট নেই। গত চার-পাঁচ বছরের মতো এবারও দেশে উৎপাদিত পশু দিয়েই কোরবানির চাহিদা মেটানো সম্ভব হবে। বিদেশ থেকে পশু আমদানির কোনো প্রয়োজন নেই। পার্শ্ববর্তী দেশ থেকে সীমান্ত পথে যেন অবৈধভাবে গবাদিপশু আসতে না পারে সেজন্য কঠোর নজরদারি করা হচ্ছে।
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী বলেন, গত বছর ছয়টি পশুর হাটে ৩৩ কোটি টাকা ডিজিটাল লেনদেন হয়েছে। এ বছরও ঢাকা-চট্টগ্রামের হাটগুলোতে ক্যাশলেস লেনদেনের উদ্যোগ নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। হাটগুলোতে কিউআর কোড, স্মার্ট অ্যাপ, এটিএম বুথ, পয়েন্ট অব সেলস মেশিন, মোবাইল ফিনান্সিয়াল সার্ভিস (এমএফএস), এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে লেনদেন করা হবে। এছাড়া প্রাণিসম্পদ অধিদফতরের সহায়তায় ২৬টি জেলায় ১০টি ব্যাংক ও ৩টি মোবাইল ফিনান্সিয়াল সার্ভিস (এমএফএস) প্রোভাইডারের মাধ্যমে ডিজিটাল লেনদেন শুরু হয়েছে।
শ ম রেজাউল বলেন, কোরবানির পশুর হাটে কোনভাবেই রোগাক্রান্ত বা অসুস্থ পশু বিক্রি করতে দেওয়া হবে না। এ লক্ষ্যে গত বছরের মত এবারও সারাদেশে পশুর প্রাথমিক চিকিৎসা প্রদানের জন্য ভেটেরিনারি মেডিকেল টিম কাজ করবে। ভেটেরিনারি মেডিকেল টিমের কার্যক্রম মনিটরিংয়ের জন্য কেন্দ্রীয় মনিটরিং টিম এবং বিশেষজ্ঞ মেডিকেল টিম গঠন করা হবে।
তিনি আরও বলেন, বিগত তিন বছরের ধারাবাহিকতায় এবারও অনলাইন প্ল্যাটফর্মে গবাদিপশু বিক্রি কার্যক্রম চলবে। এক্ষেত্রে প্রতারণা রোধে অনলাইনে আপলোড করা পশুর মালিকের নাম, ঠিকানা, মোবাইল নম্বর, পশুর বয়স, ওজন, মূল্য ও ছবি সংযোজন করতে হবে।
এদিকে মাঠপর্যায় সূত্রে জানা গেছে, এবার কোরবানিযোগ্য প্রায় ৪৮ লাখ ৪৪ হাজার গরু-মহিষ, ৭৬ লাখ ৯০ হাজার ছাগল-ভেড়া ও আড়াই হাজার অন্যান্য প্রজাতির পশু প্রস্তুত রয়েছে।
অপরদিকে কোরবানিযোগ্য পশুর জোগান বাড়লেও তা হাটে পরিবহনকালে চাঁদাবাজি নিয়ে আশঙ্কায় আছেন খামারিরা। তাদের মতে, চাঁদাবাজির পাশাপাশি অন্তত দুটি হাটের খাজনা দেওয়ার পরই কেবল ভোক্তার হাতে একটি কোরবানির পশু তুলে দেওয়া সম্ভব হয়। এতে পশুর দামও বেড়ে যায়, যা কোরবানিদাতাদের খরচ বাড়িয়ে দেয়। এ অবস্থায় কোরবানির পশুর ট্রাকে চাঁদাবাজি বন্ধে সরকারের কাছে আনুষ্ঠানিক আবেদন জানাবে খামারিদের সংগঠন বিডিএফএ।
বিডিএফএ সভাপতি ও সাদিক অ্যাগ্রোর কর্ণধার মো. ইমরান হোসেন বলেন, ‘কোরবানির পশুর ট্রাকে বেপরোয়া চাঁদাবাজির কারণে দাম বেড়ে যায়। সড়ক-মহাসড়কে অমুক-তমুক ইজারাদার লেখা হলুদ পোশাকের লোকজন “ঈদ বকশিশ” নামে চাঁদাবাজিতে নামে। সুযোগ পেলে ৮-১০ জন মিলে পশুর ট্রাক আটকিয়ে চাঁদাবাজি করে। এদের দেখার কেউ নেই। পাশাপাশি গ্রাম থেকে শহরে পশু আনতে গেলে স্থানীয় হাট কর্তৃপক্ষ খাজনা নেয়, আবার শহরের হাটেও খাজনা দিতে হয়। এবারের আন্তমন্ত্রণালয় সভায় আমরা এর প্রতিকার চাইব।’
সম্পাদক : শাদমান আল আরবী | নির্বাহী সম্পাদক : তানভীর আল আরবী
ঠিকানা : ঝাউতলা, ১ম কান্দিরপাড়, কুমিল্লা-৩৫০০। ফোন : ০১৩১৬১৮৬৯৪০, ই-মেইল : [email protected], বিজ্ঞাপন: [email protected], নিউজরুম: [email protected] © ২০২৩ রাইজিং কুমিল্লা সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত। | Design & Developed by BDIGITIC