আর মাত্র ক'টা দিন পরেই পবিত্র ঈদ-উল-আজহা। কোরবানির মাংস সংরক্ষণ নিয়ে অনেকেই চিন্তায় থাকেন। সঠিকভাবে সংরক্ষণ না করলে অল্প দিনেই মাংস নষ্ট হয়ে যেতে পারে, এমনকি এর স্বাদ ও পুষ্টিগুণও কমে যায়।
তাই আসুন জেনে নিই, মাংস দীর্ঘক্ষণ তাজা ও পুষ্টিকর রাখার কিছু কার্যকরী উপায়।
১. রেফ্রিজারেশন পদ্ধতি: সবচেয়ে সহজ ও প্রচলিত উপায়
মাংস সংরক্ষণের সবচেয়ে সহজ ও জনপ্রিয় পদ্ধতি হলো ডিপ রেফ্রিজারেটরে রাখা। মাংসের প্রায় ৫০-৭৫% অংশই পানি, যা পচনশীল জীবাণু সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়ায়। তাই শূন্য ডিগ্রি ফারেনহাইট (-১৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস) তাপমাত্রার নিচে মাংস সংরক্ষণ করা আবশ্যক। -২০ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেডের নিচে মাংসের প্রায় ৯৮% পানিই ক্রিস্টাল হয়ে পচন রোধ করে।
সংরক্ষণের সময়সীমা:
গুরুত্বপূর্ণ টিপস:
২. ঘরোয়া পদ্ধতি: প্রাকৃতিকভাবে মাংস সংরক্ষণ
কিছু ঘরোয়া উপাদান ব্যবহার করেও মাংস সংরক্ষণ করা সম্ভব। আদা গুঁড়া, মিট এনহ্যান্সার, সয়া প্রোটিন পাউডার, সিরকা, কিউরিং সল্ট, ভেজিটেবল প্রোটিন, পাপরিকা পাউডার, সেলারি পাউডার এবং আলু এক্ষেত্রে সহায়ক হতে পারে।
৩. ড্রাইং পদ্ধতি: প্রাচীন ও সাশ্রয়ী উপায়
এটি মাংস সংরক্ষণের একটি প্রাচীন পদ্ধতি। অতীতে রেফ্রিজারেটর না থাকাকালীন এই পদ্ধতি ব্যবহার করা হতো। এই পদ্ধতিতে মাংস রোদে বা চুলায় ৭০ থেকে ৮০ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড তাপমাত্রায় সম্পূর্ণ পানি শুকিয়ে নিতে হয়। এটি অর্থনৈতিকভাবে বেশ সাশ্রয়ী। চর্বি ফেলে দিয়ে পাতলা করে কাটা মাংস ভ্যাকিউম-সিল্ড করে ফ্রিজে এক বছর পর্যন্ত রাখা যায়।
৪. স্মোকিং পদ্ধতি: সুগন্ধ ও সুরক্ষার যুগলবন্দী
এটিও মাংস সংরক্ষণের একটি পুরনো পদ্ধতি, যা দুটি উপায়ে করা হয়:
৫. সল্টিং পদ্ধতি: পুষ্টিগুণ বজায় রেখে সংরক্ষণ
এই পদ্ধতিতে লবণ, কিউরিং লবণ, মসলা এবং ব্রাউন চিনি অথবা খাবার লবণ, সোডিয়াম নাইট্রেট ও সোডিয়াম ল্যাকটেট দিয়ে মাংস মেখে ২৪ ঘণ্টা রেখে ফ্রিজে এক মাস পর্যন্ত সংরক্ষণ করা যায়। এই পদ্ধতির বিশেষত্ব হলো মাংসের অক্সিডেটিভ ও মাইক্রোবিয়াল পচন প্রতিরোধ করা। টিএফডিএ অনুমোদিত এই সল্টিং বা লবণ পদ্ধতিতে মাংস সবচেয়ে বেশি টাটকা এবং পুষ্টিগুণসমৃদ্ধ থাকে।
৬. ক্যানিং পদ্ধতি: থার্মাল স্টেরিলাইজেশনের মাধ্যমে দীর্ঘ সংরক্ষণ
এই পদ্ধতিটি থার্মাল স্টেরিলাইজেশন নামেও পরিচিত। প্রথমে প্রায় ২৫০ ডিগ্রি ফারেনহাইট তাপমাত্রায় মাংস ড্রাই করে ঠান্ডা করা হয়। এরপর কাচের জার বা বয়ামের মুখ আটকে তাতে এই মাংস প্রায় এক বছর পর্যন্ত রাখা যায়। এই পদ্ধতিতে সংরক্ষণ করতে গেলে মাংস কাটা, রান্নার আগে সিমিং, তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ, ঠান্ডা করা ইত্যাদি বিষয়ে মনোযোগ দিতে হয়।
৭. কোল্ড স্টেরিলাইজেশন পদ্ধতি: আধুনিক ও পুষ্টিগুণ অক্ষুণ্ণ রাখা
এই আধুনিক পদ্ধতিতে মাংসের সঙ্গে আয়োনাইজড রেডিয়েশন, অর্থাৎ কোবাল্ট, গামা রেডিয়েশন, আল্ট্রা ভায়োলেট রেডিয়েশন ইত্যাদির মতো রেডিয়েন্ট এনার্জি ব্যবহার করা হয়। এই পদ্ধতিতে অধিকাংশ মাইক্রো অর্গানিজম মেরে ফেলা হয়, ফলে মাংসের সব পুষ্টিগুণ অক্ষুণ্ণ থাকে।
সম্পাদক : শাদমান আল আরবী | নির্বাহী সম্পাদক : তানভীর আল আরবী
ঠিকানা : ঝাউতলা, ১ম কান্দিরপাড়, কুমিল্লা-৩৫০০। ফোন : ০১৩১৬১৮৬৯৪০, ই-মেইল : [email protected], বিজ্ঞাপন: [email protected], নিউজরুম: [email protected] © ২০২৩ রাইজিং কুমিল্লা সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত। | Design & Developed by BDIGITIC