জুন ৬, ২০২৫

শুক্রবার ৬ জুন, ২০২৫

ঈদের ছুটিতে নিরবচ্ছিন্ন স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতে হাসপাতালে ১৭ নির্দেশনা

Rising Cumilla - Hospital
ছবি: সংগৃহীত

আসন্ন পবিত্র ঈদ-উল-আজহার ছুটিতে সারা দেশের হাসপাতালগুলোতে জরুরি স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে ১৭ দফা নির্দেশনা জারি করেছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। গত ২৮ মে অধিদপ্তরের এক অফিস আদেশে এ তথ্য জানানো হয়।

আজ বুধবার (৪ জুন) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক (হাসপাতাল ও ক্লিনিকসমূহ) আবু হোসেন মো. মঈনুল আহসান গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

ঈদের ছুটিতে রোগীদের ভোগান্তি কমাতে এবং নিরবচ্ছিন্ন স্বাস্থ্যসেবা প্রদানের লক্ষ্যে এই নির্দেশনাগুলো দেওয়া হয়েছে বলে অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে।

নির্দেশনাসমূহের মধ্যে রয়েছে:

১. চিকিৎসক উপস্থিতি: জরুরি বিভাগে প্রয়োজনে অতিরিক্ত চিকিৎসক পদায়ন করে সার্বক্ষণিক চিকিৎসকের উপস্থিতি নিশ্চিত করতে হবে।

২. সার্বক্ষণিক বিভাগ চালু: জরুরি বিভাগ, লেবার রুম, ইমার্জেন্সি ওটি এবং ল্যাব সার্বক্ষণিক চালু রাখতে হবে।

৩. পর্যায়ক্রমিক ছুটি: কর্মস্থলে পর্যাপ্ত জনবল ও চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করার জন্য ঈদের আগে ও পরে সমন্বয় করে জনবলকে পর্যায়ক্রমে ছুটি দেওয়া যেতে পারে।

৪. ছুটি মঞ্জুর: প্রতিষ্ঠান প্রধান নিরবচ্ছিন্ন জরুরি চিকিৎসা কার্যক্রম ও জনস্বার্থকে প্রাধান্য দিয়ে ছুটি মঞ্জুর করবেন।

৫. জেলা পরিবর্তন: সিভিল সার্জন ও বিভাগীয় পরিচালককে অবহিত করে শুধুমাত্র ঈদের ছুটিকালীন সময়ে নিজ জেলার মধ্যে অতি প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রে জেলা পরিবর্তনের অনুমতি দেওয়া যাবে।

৬. তদারকি ও সেবা: হাসপাতালের অন্তঃবিভাগ ইউনিট প্রধানেরা দৈনিক তাদের বিভাগীয় কার্যক্রম তদারকি করবেন। মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল, বিশেষায়িত হাসপাতাল, জেলা সদর হাসপাতাল ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সসমূহে জরুরি সেবা, এক্স-রে সেবা সার্বক্ষণিক চালু রাখতে হবে। উপজেলা পর্যায়ে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের অন-কল সেবা চালু রাখতে হবে।

৭. ওষুধ ও সরঞ্জাম মজুদ: ছুটি শুরু হওয়ার পূর্বেই ছুটিকালীন সময়ের জন্য পর্যাপ্ত ওষুধ, আইভি ফ্লুইড, কেমিক্যাল রি-এজেন্ট, সার্জিক্যাল সামগ্রী মজুদ এবং তাৎক্ষণিক সরবরাহের ব্যবস্থা রাখতে হবে। এক্ষেত্রে স্টোর কিপার অথবা ছুটিকালীন দায়িত্বপ্রাপ্ত স্টাফ অবশ্যই নিজ জেলা ও উপজেলায় অবস্থান করবেন।

৮. অ্যাম্বুলেন্স সার্ভিস: অ্যাম্বুলেন্স সার্ভিস সার্বক্ষণিক চালু রাখতে হবে।

৯. নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ: ছুটিকালীন সময়ে হাসপাতালের নিরাপত্তার জন্য স্থানীয় প্রশাসন ও আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে আগাম পত্র দিতে হবে।

১০. অগ্নি নির্বাপণ: ছুটিকালীন সময়ে সকল স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানে অগ্নি নির্বাপণ বিষয়ক সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।

১১. যোগাযোগ ও কুশল বিনিময়: প্রতিষ্ঠান প্রধান ও বিভিন্ন বিভাগের প্রধানগণ ছুটিকালীন সেবা প্রদানকারী কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের সাথে নিয়মিত যোগাযোগ করবেন এবং ঈদের দিন কুশল বিনিময় করবেন।

১২. দায়িত্ব হস্তান্তর: প্রতিষ্ঠান প্রধান ছুটি নিলে অবশ্যই বিধি মোতাবেক কাউকে দায়িত্ব দিয়ে যাবেন এবং দায়িত্ব গ্রহণকারী কর্মকর্তা সকল দায়িত্ব সুষ্ঠুভাবে পালন করবেন। দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তির নাম ও মোবাইল নম্বর ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করতে হবে।

১৩. রোগীদের উন্নত খাবার: প্রতিষ্ঠান প্রধান ঈদের দিন রোগীদের উন্নতমানের খাবার পরিবেশন তদারকি করবেন এবং রোগীদের সাথে শুভেচ্ছা বিনিময় করবেন।

১৪. বহিঃবিভাগ খোলা রাখা: বহিঃবিভাগ একাধারে ৭২ ঘণ্টার অধিক বন্ধ রাখা যাবে না। এর ভিত্তিতে প্রতিষ্ঠান প্রধানগণ স্ব-স্ব প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবেন।

১৫. বেসরকারি হাসপাতাল নির্দেশনা: * সকল বেসরকারি ক্লিনিক হাসপাতাল রেজিস্টার্ড চিকিৎসকের অধীনে সার্বক্ষণিক জরুরি ও প্রসূতি বিভাগ খোলা রাখবে। * কোনো রোগী রেফার করার আগে প্রয়োজনীয় প্রাথমিক চিকিৎসা এবং যাত্রাপথের চিকিৎসা নিশ্চিত করতে হবে।

১৬. পশুর হাটের প্রস্তুতি: পশুর হাটের নিকটবর্তী স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানগুলিতে বিশেষ প্রস্তুতি নিতে হবে।

১৭. নিয়ন্ত্রণ কক্ষে অবহিতকরণ: যেকোনো দুর্যোগ, অনাকাঙ্ক্ষিত দুর্ঘটনা সম্পর্কে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কন্ট্রোলরুমকে তাৎক্ষণিকভাবে অবহিত করতে হবে।

এই নির্দেশনাগুলো সঠিকভাবে পালনের মাধ্যমে আসন্ন ঈদুল আজহার ছুটিতে দেশের জনগণ নির্বিঘ্নে জরুরি স্বাস্থ্যসেবা পাবেন বলে আশা প্রকাশ করেছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।

আরও পড়ুন