
সপ্তাহ পেরিয়েছে চলমান ইরান-ইসরায়েল যুদ্ধ। এক সপ্তাহের বেশি সময় ধরে চলা এ যুদ্ধে পারস্পরিক হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত দুই দেশই। ইসরায়েলের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ভেদ করে দেশটিতে আঘাত হানছে ইরানের মিসাইল। এমন প্রেক্ষাপটে ফেসবুকে ৮ সেকেন্ডের একটি ভিডিও শেয়ার করে দাবি করা হচ্ছে, ইরানের আক্রমণের মুখে ইসরায়েলি নাগরিকরা ইরানের কাছে ক্ষমা চাচ্ছে।
ভিডিওটিতে একদল নারী-পুরুষকে বলতে শোনা যাচ্ছে, ‘ইরান! স্টপ দ্য ওয়ার, উই আর সরি, উই ওয়ান্ট পিস।’ ফ্যাক্টওয়াচের অনুসন্ধানে দেখা যায়, ভাইরাল ভিডিওটি বাস্তব নয়, এটি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সাহায্যে তৈরি।
ভিডিওটির সত্যতা যাচাইয়ে এটি পর্যবেক্ষণে বেশকিছু অসঙ্গতি চোখে পড়ে। যেমন, ভিডিওটির শুরুতেই নীল জামা পরা একজন পুরুষকে স্লোগান দিতে দেখা যায়। এ সময় তাকে খালি হাতে দেখা গেলেও চোখের পলকেই অস্বাভাবিকভাবে তার হাতে একটি ইসরায়েলি পতাকা দেখা যায়।
কোথাও কোথাও স্লোগান দানকারীরা একে অপরের মধ্যে বিলীন হয়ে যাচ্ছেন। এসব অস্বাভাবিকতা সাধারণত কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সাহায্যে তৈরি ভিডিওর ক্ষেত্রে দেখা যায়।
পরে ভিডিওটি ডিপফেক কনটেন্ট শনাক্তের টুল হাইভ মডারেশন দিয়ে যাচাই করে দেখা হয়। টুলটির বিশ্লেষণে এটি এআই দিয়ে তৈরির সম্ভাবনা ৯৯ দশমিক ১ শতাংশ।
ডিপফেক ভিডিও শনাক্তের টুল ‘’ডিপফেক ও মিটার’’ দিয়েও যাচাই করে দেখা হয়। টুলটি একাধিক মডেলের সাহায্যে যাচাই করে জানায়, এটি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সাহায্যে তৈরি ভিডিও।
এ ছাড়া ভিডিওটির নিচে ডান পাশে “Veo” লেখা একটি ওয়াটার মার্ক বা জলছাপ দেখা যায়। “Veo” হল গুগল ডিপ মাইন্ডের উন্নত একটি এআইভিত্তিক টেক্সট‑টু‑ভিডিও জেনারেশন মডেল, যা এখন সর্বশেষ Veo 3 সংস্করণ পর্যন্ত পৌঁছেছে। অর্থাৎ এই মডেলটি লেখা (prompt) পড়ে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ভিডিও তৈরি করে।
এসব ফলাফলের ভিত্তিতে এটি নিশ্চিত, ইরানের আক্রমণের মুখে ইসরায়েলি নাগরিকরা ইরানের কাছে ক্ষমা চাওয়ার দাবিতে ভাইরাল ভিডিওটি বাস্তব নয়। ফলে ফ্যাক্টওয়াচ ভিডিওটিকে মিথ্যা হিসেবে শনাক্ত করছে।