শনিবার ১৩ ডিসেম্বর, ২০২৫

ইনকিলাব মঞ্চের ওসমান হাদীকে গুলির প্রতিবাদে কুবি শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ

কুবি প্রতিনিধি

ইনকিলাব মঞ্চের ওসমান হাদীকে গুলির প্রতিবাদে কুবি শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ
ইনকিলাব মঞ্চের ওসমান হাদীকে গুলির প্রতিবাদে কুবি শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ/ছবি: প্রতিনিধি

রাজধানীতে ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ও ঢাকা-৮ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী শরিফ ওসমান হাদির উপর সশস্ত্র হামলার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) শিক্ষার্থীরা। পাশাপাশি হাদির সুস্থতা কামনায় দোয়া করেছেন কুবি শিক্ষার্থীরা।

শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) রাত সাড়ে ৭টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকে শিক্ষার্থীরা সমবেত হয়ে বিক্ষোভ মিছিল করেন। মিছিল শেষে ওসমান হাদির দ্রুত সুস্থতা কামনায় মোনাজাত করেন তারা।

বিক্ষোভ চলাকালে শিক্ষার্থীরা হামলার তীব্র প্রতিবাদ জানান। এ সময় “তুমি কে আমি কে, হাদি-হাদি”; “হাদি ভাইয়ের কিছু হলে, জ্বলবে আগুন ঘরে ঘরে”; “হাদি ভাই আহত কেন, প্রশাসন জবাব চাই”; “ইন্টেরিম জবাব দে, জুলাই যোদ্ধা আহত কেন”; “ধিক্কার ধিক্কার, প্রশাসন ধিক্কার”; “ভারতীয় আধিপত্য, ভেঙে দাও গুড়িয়ে দাও”; “দিল্লি না ঢাকা, ঢাকা ঢাকা”—বলে স্লোগান দিয়েছেন।

লোক প্রশাসন বিভাগের স্নাতকোত্তর শিক্ষার্থী হাসান অন্তর বলেন, “এই বাংলার বুকে যে সত্য কথা বলে, তার বিরুদ্ধেই ষড়যন্ত্রকারী শক্তি ঝাঁপিয়ে পড়ে। সরকার ভুলে গেলে চলবে না, আপনারা শহিদের রক্তের ওপর দাঁড়িয়ে আছেন। তাই ২৪ ঘণ্টার মধ্যে হামলাকারীদের গ্রেপ্তার করে শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। এক হাদি গেলে হাজার হাদি জন্ম নেবে।”

গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থী সোয়াইব হোসেন আল আমিন বলেন, “আমরা জুলাইয়ের মাধ্যমে ১৭ বছরের ফ্যাসিস্ট শাসনব্যবস্থাকে হটিয়েছি। কিন্তু এখনো আমরা নিরাপত্তাহীন। যেখানে হাদী ভাইয়ের মতো মানুষের ওপর হত্যার উদ্দেশ্যে গুলি চালানো হয়, সেখানে আমি-আপনি কেউই নিরাপদ নই। এই বাংলাদেশ হাজার হাদি জন্ম নেবে, অন্যায় ও দমন-পীড়নের বিরুদ্ধে দাঁড়াতে। আমরা মৃত্যুকে ভয় করি না, কারণ ৫ আগস্টেই আমরা মৃত্যুকে জয় করেছি।”

কুবি ছাত্রশিবিরের সেক্রেটারি মোজাম্মেল হোসেন আবির বলেন, “২০২৪ এর জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের পরবর্তী সময়ে আমরা অন্তর্বর্তী সরকারকে দেশের নিরাপত্তা জন্য দায়িত্ব দিয়েছি, কিন্তু তারা বার বার ব্যর্থ হয়েছে। স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে নিরাপত্তার জন্য এভাবে আন্দোলন করতে হবে আমরা ভাবতেও পারি নাই। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার নির্বাচনের তফশিল ঘোষণার ২৪ ঘণ্টা না পেরুতেই একজন স্বতন্ত্রপ্রার্থীকে হত্যার উদ্দেশ্যে গুলি করা হয়। ওসমান হাদী ভারতীয় আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে এক প্রতিবাধী কণ্ঠস্বর। আমরা দেখেছি ভারতীয় আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে যখন বুয়েটের আবরার ফাহাদ কথা বলেছিলো তখন তাকে কী নির্মম ভাবে হত্যা করা হয়েছিল, ঠিক একই কায়দায় ওসমান হাদীদের শেষ করে দিতে চাই ফ্যাসিস্টরা। জুলাইয়ে হাজারো ছাত্র জনতা আওয়ামী মসনদ চুরমার করে দিয়েছে, কিন্তু তারা আবার মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে।

তিনি আরও বলেন, “আপনারা যদি আওয়ামী সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হয়ে প্রতিবাদ না করেন, তাহলে তারা আবারও গোলামির শিকলে আবদ্ধ হতে বেশিদিন নাই। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে বলবো আপনারা সকাল নাগরিকের নিরাপত্তা নিশ্চিত করুন। যদি আপনারা নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হন আপনারা পদত্যাগ করুন।

ইনকিলাব মঞ্চ কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার আহ্বায়ক মো. হান্নান রাহিম বলেন, আওয়ামী লীগকে পুশ করার জন্য ভারত ৫ই আগস্টের পর থেকেই বারবার চেষ্টা করে যাচ্ছে। কিন্তু যখন দেখেছে তফশিল ঘোষণাই হয়ে গিয়েছে, আওয়ামী লীগকে অন্তর্বর্তীকালীন (ইন্টারিম) কোনোভাবে জায়গা দিচ্ছে না, তখনই আওয়ামী লীগ, ভারতীয় গুপ্তচররা আমাদের দেশপ্রেমিক ভাইদের, জুলাই যোদ্ধাদের তারা বেছে বেছে হত্যা করছে। ৫ই আগস্টের পরে বিভিন্ন জায়গায় হত্যা চেষ্টা হয়েছে। কিন্তু সেগুলোর বিচার হয়নি। সেসব ঘটনার যদি সুষ্ঠু তদন্ত হতো, বিচার হতো, আজকে আমরা হাদি ভাইয়ের এই ঘটনা দেখতাম না। আগামী ১২ ঘণ্টার মধ্যে হাদি ভাইয়ের উপর যারা হামলা করেছে, তাদেরকে আইনের আওতায় নিয়ে আসতে হবে।”

আরও পড়ুন