বৃহস্পতিবার ৩১ জুলাই, ২০২৫

আপনার নামে কয়টি সিম আছে, জানবেন কীভাবে?

ছবি: সংগৃহীত

এবার ফেসবুক-হোয়াটসঅ্যাপ, ইমো এবং টেলিগ্রামসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রতারণা রোধে কঠোর হচ্ছে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি)। নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, একজন গ্রাহক তার জাতীয় পরিচয়পত্রের বিপরীতে সর্বোচ্চ ১০টি সিম ব্যবহার করতে পারবেন।

এই সীমা অতিক্রমকারী সিমগুলো ধাপে ধাপে বন্ধ করে দেওয়া হবে বলে জানিয়েছে বিটিআরসি।

বিটিআরসি’র ২৯৬তম কমিশন সভায় গৃহীত এই সিদ্ধান্তের মূল কারণ হলো জাতীয় নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, অপারেটরদের মধ্যে অসুস্থ প্রতিযোগিতা কমানো এবং আন্তর্জাতিক অনুশীলনের সাথে সঙ্গতি রাখা। মে মাসে কমিশন মিটিংয়ে এই বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় এবং সম্প্রতি ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ এর অনুমোদন দিয়েছে। বিটিআরসি’র তথ্য অনুযায়ী, এই পদক্ষেপের ফলে প্রায় ২৬ লাখ গ্রাহকের ৬৭ লাখ সিম বন্ধ হয়ে যাবে।

গ্রাহকদের জন্য সুযোগ ও সময়সীমা:

বিটিআরসি জানিয়েছে, গ্রাহকরা তাদের অপ্রয়োজনীয় সিম বন্ধ করার জন্য পর্যাপ্ত সময় পাবেন। প্রাথমিকভাবে, আগামী ১ আগস্ট থেকে গ্রাহকদের ৩ মাসের সময় দেওয়া হবে নিজ উদ্যোগে অতিরিক্ত সিমের নিবন্ধন বাতিল করার জন্য। বিটিআরসি’র চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) মোহাম্মদ এমদাদ উল বারী বলেন, মানুষের ভোগান্তি এড়াতেই এই সময় দেওয়া হচ্ছে। পুরো প্রক্রিয়া শেষ হতে ৫ থেকে ৬ মাস সময় লাগতে পারে।

গ্রাহকদের সিম বাতিলের প্রক্রিয়া:

  • তালিকা প্রণয়ন: প্রথমে বিটিআরসি’র নিয়োগকৃত সেন্ট্রাল বায়োমেট্রিক ভেরিফিকেশন মনিটরিং প্ল্যাটফর্মের ভেন্ডর প্রতিষ্ঠান ১০টির বেশি সিম ব্যবহারকারী গ্রাহকদের তালিকা তৈরি করবে।
  • অপারেটরদের মাধ্যমে যোগাযোগ: এই তালিকা সংশ্লিষ্ট মোবাইল অপারেটরদের কাছে পাঠানো হবে। অপারেটররা তাদের গ্রাহকদের সাথে যোগাযোগ করে সিমের সংখ্যা ১০টিতে নামিয়ে আনার জন্য অনুরোধ জানাবে।
  • এসএমএস এবং বিজ্ঞপ্তি: অপারেটররা প্রতি সপ্তাহে অন্তত একটি এসএমএস পাঠিয়ে গ্রাহকদের এই বিষয়ে অবহিত করবে। পাশাপাশি তাদের ওয়েবসাইট এবং বিটিআরসি’র পক্ষ থেকে প্রিন্ট, ইলেকট্রনিক ও অনলাইন সংবাদমাধ্যমে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হবে।
  • স্বয়ংক্রিয় বন্ধ: নির্ধারিত সময়ের পরও যেসব গ্রাহকের ১০টির বেশি সিম থাকবে, তাদের তালিকা পুনরায় অপারেটরদের কাছে পাঠানো হবে। এই তালিকার ভিত্তিতে বিটিআরসি’র ভেন্ডর প্রতিষ্ঠান প্রতিটি গ্রাহকের জন্য সর্বোচ্চ ১০টি সিম নির্ধারণ করবে, যেখানে সব অপারেটরের অন্তত একটি সিম রাখার চেষ্টা করা হবে এবং সর্বোচ্চ রাজস্ব আহরণকারী সিমগুলোকে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে। এরপর বাকি সিমগুলো নভেম্বরের মধ্যে বন্ধ করে দেওয়া হবে।

আপনার নামে কয়টি সিম আছে, জানবেন যেভাবে:

গ্রাহকরা *১৬০০১# নম্বরে ডায়াল করে তাদের জাতীয় পরিচয়পত্রের বিপরীতে নিবন্ধিত সিমের সংখ্যা ও নম্বর জানতে পারবেন। যদি অতিরিক্ত সিম থাকে, তবে সেগুলো ‘ট্রান্সফার অব ওনারশিপ’ এর মাধ্যমে অন্য কারো নামে হস্তান্তর করা যাবে।

যদি  কোন গ্রাহকের প্রয়োজনীয় সিম বন্ধ হয়ে যায়?

বিটিআরসি আশ্বস্ত করেছে যে, এই প্রক্রিয়ায় কোনো গ্রাহকের প্রয়োজনীয় সিম যদি ভুলবশত বাতিল হয়ে যায়, তবে অপারেটরের সাথে যোগাযোগ করে পুনরায় সেটি নিবন্ধন করে নেওয়ার সুযোগ থাকবে।

আরও পড়ুন