পবিত্র আখেরি চাহার সোম্বা আজ। যা মুসলিম বিশ্বের কাছে অত্যন্ত মর্যাদাপূর্ণ একটি দিন। বাংলাদেশে সরকারিভাবে সাধারণ ছুটি না থাকলেও, এটি ঐচ্ছিক ছুটি হিসেবে বিবেচিত হয়। এ উপলক্ষে দেশের সব ধরনের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আজ বন্ধ থাকবে।
শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের বার্ষিক ছুটির তালিকা অনুযায়ী, আখেরি চাহার সোম্বা উপলক্ষে আজ দেশের সব স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা এবং সরকারি-বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। ইতোমধ্যে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় এবং অন্যান্য অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে এই ছুটির বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।
ইসলামি ঐতিহ্যে, আখেরি চাহার সোম্বা পালন করা হয় মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.)-এর সাময়িক সুস্থতাকে স্মরণ করে। এর আক্ষরিক অর্থ হলো 'শেষ চতুর্থ বুধবার'।
রসূলুল্লাহ (সা.) এর পবিত্র জীবনের প্রতিটি কথা, প্রতিটি কাজ আর সমস্ত আচার-ব্যবহার, চাল-চলন, গতি-বিধি, পদক্ষেপ, সময়-ক্ষণ তথা সমগ্র জীবনই উত্তম আদর্শের অনুপম নিদর্শন। যা কুরআন শরিফে নানা আঙ্গিকে ব্যক্ত হয়েছে। তবে মক্কায় তার নবুওয়্যাত- রেসালত জীবনের ১৩টি বছরই তাকে মক্কার কাফের কোরাইশদের নানামুখী কঠোর নির্যাতন নীরবে সহ্য করতে হয়েছে।
হিজরতের পর মদীনায় আগমনের পরও রাসূলুল্লাহ (সা.) ইহুদী-মোনাফেকদের নতুন ষড়যন্ত্রের শিকার হয়েছেন। মক্কার কাফেররা তাকে, মদীনার ইহুদি মোনাফেকদের যোগ সাজশে স্বস্তিতে-শান্তিতে থাকতে দেয়নি এবং তারা সর্বদা আগ্রাসী ষড়যন্ত্র লিপ্ত থাকে এমনকি বহু রণাঙ্গনে অবতীর্ণ হতে বাধ্য করে এবং সর্বক্ষেত্রেই ওরা শোচনীয় পরাজয় করে। ঐতিহাসিক সত্য এই যে, ওরা মহানবী (সা.) এর প্রাণনাশের পর্যন্ত অপচেষ্টা চালাতে থাকে। মোনাফেক ইহুদি চক্র বিধর্মীরা মর্মে মর্মে অনুভব করতে পারে যে, ইসলামের বিজয়কে প্রতিহত করা সম্ভব নয়।
অবশেষে রসুলুল্লাহ (সা.) এর অসুস্থ হবার খবর ছড়িয়ে পড়লে ইহুদি ও মোনাফেকদের আনন্দের সীমা রইল না, অপর দিকে মুসলমানদের দুঃশ্চিন্তাও বেড়ে যেতে থাকে, তারা দারুণভাবে আতঙ্কিত হয়ে পড়েন, হুজুর (সা.) এর চিরবিদায়ের আশঙ্কায়।
তাদের চরম উদ্বেগ-উৎকণ্ঠার মধ্যে হঠাৎ সাময়িকভাবে তিনি আরোগ্য লাভ করার সংবাদে সাহাবায়েকরামের মাঝে যে বিপুল আনন্দ-উল্লাসের সঞ্চার হয়, তা এক অভূতপূর্ব ঘটনা। মহানবী (স.) এর সুস্থতার খবরে সাহাবিরা উচ্ছ্বসিত হয়ে অনেক দান-খয়রাত করেন। দিনটি ছিল সফর মাসের শেষ বুধবার। এ দিনকে স্মরণ করে মুসলিম উম্মাহর মধ্যে যে ইবাদত ও উৎসব প্রচলিত তাই ‘আখেরি চাহার সোম্বা’।
আখেরি চাহার সোম্বা মূলত 'শুকরিয়া দিবস' হিসেবে পালিত হয়। মুসলমানরা এই দিনে গোসল করে দুই রাকাত শুকরানা-নফল নামাজ আদায় করেন। পাশাপাশি, রোগ থেকে মুক্তি এবং সুস্থতার জন্য দোয়া ও দান-খয়রাত করা হয়।
বাংলাদেশসহ বিশ্বের অনেক দেশের মুসলিমরা রাষ্ট্রীয় ও ব্যক্তি উদ্যোগে এ উৎসব-ইবাদত যথাযথ ধর্মীয় ভাবগম্ভীর্যের মাধ্যমে পালন করে থাকেন। এ উপলক্ষে দেশের বিভিন্ন মসজিদ, মাদ্রাসা এবং খানকায় ওয়াজ-নসিহত, জিকির-আজকার, মিলাদ মাহফিল ও বিশেষ দোয়া অনুষ্ঠিত হয়।
সম্পাদক : শাদমান আল আরবী | নির্বাহী সম্পাদক : তানভীর আল আরবী
ঠিকানা : ঝাউতলা, ১ম কান্দিরপাড়, কুমিল্লা-৩৫০০। ফোন : ০১৩১৬১৮৬৯৪০, ই-মেইল : [email protected], বিজ্ঞাপন: [email protected], নিউজরুম: [email protected] © ২০২৩ রাইজিং কুমিল্লা সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত। | Design & Developed by BDIGITIC