
ত্বকের যত্নে অ্যালোভেরা জেলের তুলনা নেই। প্রাকৃতিক এই উপাদানটির অসাধারণ গুণের কারণেই অনেকেই এটিকে নিত্যদিনের রূপচর্চায় ব্যবহার করেন। তবে বেশিরভাগ মানুষই বাজার থেকে কেনা অ্যালোভেরা জেল মুখে মাখেন, যাতে বিভিন্ন ধরনের রাসায়নিক মেশানো থাকে।
আবার কেউ কেউ আরও ভালো ফল পাওয়ার আশায় তাজা অ্যালোভেরার পাতা কেটে নির্যাস নিয়ে সরাসরি মুখে লাগান। কিন্তু এভাবে জেল লাগানো কি আদৌ ঠিক? এই প্রশ্ন অনেকের মনেই থেকে যায়।
অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে ভরপুর অ্যালোভেরা জেলে রয়েছে ভিটামিন এ, বি, সি এবং ই-এর মতো অত্যন্ত কার্যকরী উপাদান। এই উপাদানগুলি ত্বকের সানবার্ন, ব্রণ, বলিরেখা, দাগছোপ কমাতে দারুণভাবে সাহায্য করে।
তবে সরাসরি এই জেল লাগালে ত্বকে নানা ধরনের সমস্যা হতে পারে। এর প্রধান কারণ হলো অ্যালোভেরার পাতায় থাকা একটি যৌগ, যার নাম ‘অ্যালোইন’। অ্যালোভেরার পাতা কাটলে একটি হলুদ রঙের পদার্থ নির্গত হয়, যা আসলে এই ‘অ্যালোইন’।
এই পদার্থ ত্বকের সংস্পর্শে এলে ত্বকে র্যাশ বেরোতে পারে। এছাড়াও জ্বালা ভাব, চুলকানি, ফুসকুড়ির মতো অ্যালার্জিক সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাই উপকারিতার জন্য ব্যবহার করতে গিয়ে ত্বকের ক্ষতি না হয়, সেদিকে খেয়াল রাখা জরুরি।
ত্বকের ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা কমাতে এবং অ্যালোভেরার পূর্ণ উপকারিতা পেতে হলে সঠিকভাবে জেল তৈরি করে ব্যবহার করা উচিত। নিচে সহজ ধাপগুলো তুলে ধরা হলো:
১. পাতা পরিষ্কার করুন: প্রথমে একটি পরিষ্কার অ্যালোভেরার পাতা বেছে নিন।
২. ‘অ্যালোইন’ মুক্ত করুন: পাতা কাটার পরে সেটি পানিভর্তি কোনো পাত্রে ১৫ মিনিট ডুবিয়ে রাখুন। এর ফলে এতে থাকা অ্যালোইন বা হলুদ রঙের ক্ষতিকর পদার্থটি বেরিয়ে যাবে।
৩. নির্যাস সংগ্রহ করুন: এবার অ্যালোভেরার পাতার খোসা ছাড়িয়ে ভিতরের স্বচ্ছ নির্যাস বা জেল অংশটি বের করে নিন।
৪. ধুয়ে নিন: সংগৃহীত এই নির্যাস ভালো করে পানিতে ধুয়ে নেবেন, যাতে সামান্যতম অ্যালোইনের অংশও লেগে না থাকে।
৫. পেস্ট তৈরি করুন: এর পরে ওই নির্যাসটি ব্লেন্ডারে দিয়ে পেস্ট করে নিন।
৬. যোগ করুন ভিটামিন ই: এই মিশ্রণে চাইলে ভিটামিন ই অয়েলও মেশাতে পারেন, যা ত্বকের জন্য অতিরিক্ত পুষ্টি জোগাবে।
এভাবে সহজেই তৈরি হয়ে যাবে আপনার ভেষজ এবং সম্পূর্ণ রাসায়নিকমুক্ত অ্যালোভেরা জেল।
তৈরি করা এই অ্যালোভেরা জেল দিয়ে আইস কিউব বানিয়েও রাখতে পারেন। ঠান্ডা আইস কিউব ত্বকের জ্বালা কমাতে বা সতেজতা ফিরিয়ে আনতে সাহায্য করবে। এতে ত্বকের ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কাও কম।
তবে মনে রাখবেন, এই প্রাকৃতিক জেল ফ্রিজে ২-৩ দিনের বেশি রাখার পর ব্যবহার করা ঠিক নয়। টাটকা জেল ব্যবহার করাই সবচেয়ে ভালো। এই জেল ত্বকের পাশাপাশি চুলের যত্নেও নিশ্চিন্তে ব্যবহার করতে পারেন।
সূত্র : এই সময়









