সাম্প্রতিক অস্থিতিশীল পরিস্থিতি ও দেশের বিভিন্ন স্থানে বড় ধরনের বন্যার কারণে সৃষ্ট অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জগুলো কাটিয়ে উঠতে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের গৃহীত নানা পদক্ষেপের প্রশংসা করেছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)।
বাংলাদেশের জন্য আইএমএফ মিশন চিফ ক্রিস পাপেজর্জিউ বাসসকে বলেন, ‘চ্যালেঞ্জিং পরিস্থিতিতে প্রতিক্রিয়া হিসাবে ক্রমাগত আর্থিক কৃচ্ছ্রতা ও অপ্রধান মূলধন ব্যয়কে যুক্তিপূর্ণভাবে সমন্বয় শুরু করার জন্য কর্তৃপক্ষের প্রচেষ্টা প্রশংসনীয়।’
বাংলাদেশের সাম্প্রতিক উন্নয়ন ও কর্তৃপক্ষের সংস্কার অগ্রাধিকার নিয়ে আলোচনা করতে পাপেজর্জিউ’র নেতৃত্বে আইএমএফ মিশন টিম ২৪-৩০ সেপ্টেম্বর ঢাকা সফর করে।
আইএমএফ মিশন চিফ বলেন, যথাসময়ে একটি অন্তর্বর্তী সরকার গঠন, অর্থনীতিকে ধীরে ধীরে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসার পাশাপাশি রাজনৈতিক ও নিরাপত্তা পরিস্থিতি স্থিতিশীল করতে সহায়ক হয়েছে।
পাপেজর্জিউ আরও বলেন, তবু অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড কিছুটা মন্থর গতিতে চলছে। যদিও সাম্প্রতিক অস্থিতিশীলতা ও বন্যা সত্ত্বেও মুদ্রাস্ফীতি দুই অঙ্কের স্তরে রয়েছে। অর্থপ্রদানের ভারসাম্যের অবনতি বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের ওপর অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি করেছে। এটা বাণিজ্য ঋণের বহিঃপ্রবাহ প্রতিফলিত করে।
তবে অর্থনৈতিক ইস্যুতে সরকার যে পদক্ষেপ নিয়েছে, তা সত্যিই প্রশংসনীয় বলে তিনি উল্লেখ করেন।
বিগত সরকারের আর্থিক লক্ষ্যমাত্রা সম্পর্কে এক প্রশ্নের জবাবে পাপেজর্জিউ বলেন, বাজেটটি আশাবাদী কর রাজস্ব ও উচ্চাভিলাষী মূলধন ব্যয়ের অনুমানসহ একটি উচ্চাকাঙ্খী বাজেট হিসাবে বিবেচিত হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, ঐতিহাসিকভাবে, দুর্বল রাজস্ব সংগ্রহের কারণে সরকারকে পুনরাবৃত্ত ব্যয় ও বড় বিনিয়োগ উভয়ই কমাতে হয়েছিল।
আইএমএফ মিশন চিফ বলেন, বাজেট ঘাটতি তাদের লক্ষ্যমাত্রার মধ্যে রাখতে এটি (রাজস্ব সংগ্রহ) গুরুত্বপূর্ণ।
তিনি বলেন, ‘এ প্রেক্ষাপটে ক্রমাগত উচ্চ মূল্যস্ফীতি ও বাহ্যিক চাপের পরিপ্রেক্ষিতে কার্যকর ক্ষমতা বিবেচনা করে এবং অ-অগ্রাধিকারমূলক প্রকল্পগুলো কমিয়ে মূলধন ব্যয়কে যুক্তিযুক্ত করতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রচেষ্টাকে আমরা সমর্থন করছি।’
তিনি বলেন, উচ্চাভিলাষী রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণে কর্তৃপক্ষের লক্ষ্যকে আইএমএফ সমর্থন করে। এ লক্ষ্যগুলোকে অবশ্যই নিখুঁত রাজস্ব-উৎপাদনমূলক ব্যবস্থা দ্বারা সমর্থিত হতে হবে।
পাপেজর্জিও বলেছেন, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বাংলাদেশের ট্যাক্স-টু-জিডিপি অনুপাতের সামান্য উন্নতি হয়েছে।
তিনি বলেন, টেকসই রাজস্ব সংগ্রহের জন্য একটি বহুমুখী পদ্ধতির প্রয়োজন। যার মধ্যে কর নীতি ও রাজস্ব প্রশাসন ব্যবস্থা উভয়ই রয়েছে।
তিনি বলেন, কর নীতিতে সংস্কারের মূল ক্ষেত্রগুলোর মধ্যে রয়েছে বাণিজ্য থেকে করের বোঝা সরিয়ে আয়কর ও ভ্যাটের দিকে নিয়ে যাওয়ার কৌশলের অংশ হিসাবে ব্যাপক কর ছাড় কমানো, মূল্য সংযোজন কর (ভ্যাট) ব্যবস্থাকে সরল করা ও করের ভিত্তি প্রসারিত করা।
তিনি বলেন, কর প্রশাসনের উন্নয়নের জন্য অগ্রাধিকার সংস্কারের মধ্যে ট্যাক্স সংগ্রহের প্রক্রিয়াগুলির ডিজিটালাইজেশন ও আরও ভালো কর কমপ্লায়েন্স ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা অন্তর্ভুক্ত।
সম্পাদক : শাদমান আল আরবী | নির্বাহী সম্পাদক : তানভীর আল আরবী
ঠিকানা : ঝাউতলা, ১ম কান্দিরপাড়, কুমিল্লা-৩৫০০। ফোন : ০১৩১৬১৮৬৯৪০, ই-মেইল : [email protected], বিজ্ঞাপন: [email protected], নিউজরুম: [email protected] © ২০২৩ রাইজিং কুমিল্লা সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত। | Design & Developed by BDIGITIC