
সাধারণত বিয়েতে মানুষ তার নিকটাত্মীয় ও বন্ধুবান্ধবদের আমন্ত্রণ জানায়। কিন্তু চীনের এক দম্পতি তাদের বিয়ে সম্পন্ন করলেন ২০০ উদ্ধারকৃত কুকুর আর ৩০০ স্বেচ্ছাসেবকের উপস্থিতিতে। চীনের তিয়ানজিনে অবস্থিত একটি কুকুর আশ্রয়কেন্দ্রেই ব্যতিক্রমী এই বিয়ের আয়োজন করেন ইয়াং এবং চাও।
এনডিটিভির প্রতিবেদন অনুযায়ী, ৩১ বছর বয়সী ইয়াং, যিনি বর্তমানে এই কুকুর আশ্রয়কেন্দ্রের পরিচালক, একসময় একজন ধনী ব্যবসায়ী ছিলেন। তার সম্পদের পরিমাণ ছিল ১৪ লাখ মার্কিন ডলারেরও বেশি। কিন্তু মহামারীর সময় লকডাউনের কারণে তার ব্যবসা পুরোপুরি ধসে পড়ে। কর্মীদের বেতন আর দেনা মেটাতে গিয়ে তাকে নিজের বাড়ি, দুটি গাড়িসহ প্রায় সবকিছুই বিক্রি করে দিতে হয়। এরপরই তিনি মন দেন কুকুর উদ্ধারের কাজে।
ছোটবেলায় পাঁচটি পোষা কুকুরছানাকে অসুস্থতার কারণে হারানোর গভীর কষ্ট ইয়াংয়ের মনে গেঁথে ছিল। সেই স্মৃতি থেকেই তিনি কুকুরদের সেবায় নিজেকে নিয়োজিত করেন। ইয়াং জানান, “সেই সময় আমার পকেটে মাত্র ২৩ ইউয়ান ছিল, যা আশ্রয়কেন্দ্রের জন্যই বরাদ্দ ছিল।” এরপর তিনি মানুষের কাছে সাহায্য চাওয়া শুরু করেন এবং স্বেচ্ছাসেবক নিয়োগ দেন।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ২০২২ সালে চাও নামের এক তরুণী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী থাকাকালীন স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে এই আশ্রয়কেন্দ্রে যোগ দেন। কুকুরদের প্রতি তার গভীর সহানুভূতি ছিল এবং নিজের খণ্ডকালীন উপার্জনের সবটাই তিনি কুকুরদের খাবার কেনার জন্য দান করতেন। একসঙ্গে কাজ করতে করতে ইয়াং ও চাও একে অপরের কাছাকাছি আসেন। তাদের মধ্যে প্রেম হয় এবং এরপর তারা বিয়ের সিদ্ধান্ত নেন।
ইয়াং চেয়েছিলেন, তাদের বিয়ের অনুষ্ঠান যেন আশ্রয়কেন্দ্রের কুকুরদের সামনেই হয়, কারণ এই প্রাণীদের উপস্থিতিই তার কাছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। চাওও সানন্দে এতে সম্মতি দেন। সোশ্যাল মিডিয়ায় অনেকেই এই দম্পতির ব্যতিক্রমী উদ্যোগের প্রশংসা করছেন।
একজন লিখেছেন, “এ ভাবনাটা অসাধারণ। কুকুরগুলো নিশ্চয়ই খুব খুশি হয়েছে! দম্পতির জন্য অনেক শুভকামনা।” আরেকজন মন্তব্য করেছেন, “এই নীরব বন্ধুদের আশীর্বাদ তাদের জীবনে সুখ নিয়ে আসবে, কারণ তাদের হৃদয়ে আছে অপরিসীম মমতা।” একজন ব্যবহারকারী মজার ছলে লিখেছেন, “আমার বিয়ের অতিথি হোক শুধু এমন চারপেয়ে বন্ধুরা।”