জানুয়ারি ১২, ২০২৫

রবিবার ১২ জানুয়ারি, ২০২৫

৭ মার্চ উপলক্ষ্যে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির পৃথক আলোচনা সভা

Separate discussion meeting of Cumilla University Teachers Association on the occasion of March 7
ছবি: রাইজিং কুমিল্লা

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুবি) ঐতিহাসিক ৭ই মার্চ উপলক্ষ্যে পৃথক আলোচনা সভার আয়োজন করেছে শিক্ষক সমিতি। বৃহস্পতিবার (৭ মার্চ) সকাল সাড়ে ১১ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের শিক্ষক মিলনায়তনে এই আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।

শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সহযোগী অধ্যাপক মেহেদী হাসান এর সঞ্চালনায় ও সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. আবু তাহের এর সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় প্রধান আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ড. জি.এম. মনিরুজ্জামান। এছাড়া আরও উপস্থিত ছিলেন শিক্ষক সমিতি সদস্য, শিক্ষক ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা।

অনুষ্ঠানের প্রধান আলোচক অধ্যাপক ড. জি.এম. মনিরুজ্জামান বলেন, বঙ্গবন্ধু যখন জন্মগ্রহণ করেছেন সেটা ছিল একটি পরাধীন সমাজ। তিনি নিজ চোখে পরাধীনতার শৃঙ্খল দেখেছেন। ভারত ভাগের পরবর্তী সময় পাকিস্তান সমাজে ভাষাগত বৈষম্য থেকে অন্যান্য বৈষম্য, অত্যাচার ও নির্যাতন দেখেছেন। এই সকল কিছু নিংড়ে দিয়েছেন ৭ মার্চের ভাষণে। যার প্রভাব আমাদের স্বাধীনতা।

তিনি আরো বলেন, ৭ মার্চ এর ভাষণের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান একটি সোনার বাংলা তৈরি করতে চেয়েছেন। যা থেকে আমরা শিক্ষা নিতে পারি। ৭ মার্চের শিক্ষা হলো একটি টেকসই ও আধুনিক বাঙালি জাতিসত্তা তৈরি করা। আর বঙ্গবন্ধু কন্যা মাননীয় শেখ হাসিনা সেই লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছেন।

শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. আবু তাহের বলেন, বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ১৮ মিনিটের বক্তব্য পূর্বলিখিত ছিল না। কিন্তু তার বক্তব্যের প্রতিটি শব্দ ও শব্দচয়ন বাঙালি জাতিকে উদ্বুদ্ধ করেছে। বাঙালিরা যুদ্ধে ঝাপিয়ে পড়ার রসদ জুগিয়েছে। তৎকালীন পাকিস্তানিরা যেভাবে বাঙালিদের শোষণ করেছে। আজকে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বিশেষ করে উপাচার্য বিভিন্ন ভাবে শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও কর্মচারীদের উপর শোষণ করে আসছে।

এসময় তিনি বর্তমান প্রশাসনের বিভিন্ন শোষণ ও দুর্নীতির কথা উল্লেখ করতে গিয়ে বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে বর্তমান উপাচার্যের যোগদান একটা ভুল প্রক্রিয়ায় হয়েছে। তিনি তার বায়োডাটায় তথ্য গোপন করেছেন। তার দ্বৈত নাগরিকত্ব থাকার পরেও তিনি তা বায়োডাটায় উল্লেখ করেন নি।

এছাড়াও একজন রিটায়ার্ড পার্সন কখনোই ইনক্রিমেন্ট নিতে পারেন না। কিন্তু তিনি তা নিয়ে থাকেন। যা একটি ফাইনাশিয়াল ক্রাইম। কিন্তু উনাকে এ বিষয়ে জিজ্ঞেস করা হলে উনি ক্ষেপে যান। এদিকে বঙ্গবন্ধুর হাতে গড়া সংগঠন ছাত্রলীগের শাখাকে টুকরো টুকরো করার পেছনে উপাচার্যের প্রয়াস এবং শিক্ষকদের মধ্যে বিবাদ তৈরিতে উপাচার্য জড়িত বলে উল্লেখ করেন তিনি।

উল্লেখ্য, গত ১৯ ফেব্রুয়ারি শিক্ষক সমিতির সদস্যরা উপাচার্যের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ কালে উপাচার্যের নির্দেশে প্রক্টরিয়াল বডির উপস্থিতিতিতে শিক্ষকদের উপর হামলা চালায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মচারী ও কিছু বহিরাগত শিক্ষার্থী। উপাচার্যকে সেই হামলায় জড়িতদের বিচার করার আহ্বান জানান এবং প্রক্টরের পদত্যাগ চায় দাবি করেন।

যার প্রেক্ষিতে শিক্ষক সমিতি আজকে আলাদা আলোচনা সভার আয়োজন করে। গত ২১ ফেব্রুয়ারি মাতৃভাষা দিবসে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সাথে ফুল দেননি। মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষ্যে প্রশাসন আলোচনা সভা না করায় গত ২৫ ফেব্রুয়ারি আলোচন সভা করেন।