
এসি (এয়ার কন্ডিশনার) এখন আর বিলাসিতা নয়, বরং অনেকের জন্যই প্রয়োজনীয়তা। কিন্তু এসি চালানোর সঙ্গে সঙ্গেই মনে আসে মাসিক বিদ্যুৎ বিলের চিন্তা।
অনেকেই জানতে চান যদি প্রতিদিন ৮ ঘণ্টা করে এসি ব্যবহার করা হয়, তাহলে মাসের শেষে আনুমানিক কত টাকা বিল আসতে পারে? এই হিসেবটা যদিও কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের ওপর নির্ভর করে, তবুও একটি স্পষ্ট ধারণা থাকলে আগাম পরিকল্পনা করা সহজ হয়।
আপনার মাসিক বিদ্যুৎ বিল কত হবে, তা প্রধানত তিনটি বিষয়ের ওপর নির্ভরশীল:
১. এসির ক্ষমতা: এসি কত দ্রুত ঘর ঠান্ডা করতে পারে।
২. বিদ্যুতের ইউনিট চার্জ: প্রতি ইউনিট বিদ্যুতের দাম কত।
৩. ব্যবহারের ধরন: আপনি কোন তাপমাত্রায় কতক্ষণ এসি চালাচ্ছেন।
দৈনিক ৮ ঘণ্টা এসি চালালে মাসিক বিলের একটি সহজ হিসেব
যদি বিদ্যুতের গড় দাম প্রতি ইউনিট ৬-৮ টাকা ধরা হয়, তাহলে বিভিন্ন ক্ষমতার এসির ক্ষেত্রে মাসিক বিল কেমন হতে পারে, তার একটি ধারণা নিচে দেওয়া হলো:
| এসির ক্ষমতা | প্রতি ঘণ্টায় বিদ্যুৎ খরচ (ইউনিট) | দৈনিক ৮ ঘণ্টায় বিদ্যুৎ খরচ (ইউনিট) | মাসিক বিদ্যুৎ খরচ (ইউনিট) | আনুমানিক মাসিক বিল (টাকা) |
| ১ টন এসি | ০.৮ – ১ ইউনিট | ৬.৪ – ৮ ইউনিট | ১৯২ – ২৪০ ইউনিট | ১৩০০ – ১৬০০ টাকা |
| ১.৫ টন এসি | ১.২ – ১.৫ ইউনিট | ৯.৬ – ১২ ইউনিট | ২৮৮ – ৩৬০ ইউনিট | ২০০০ – ২৫০০ টাকা |
| ২ টন এসি | ১.৮ – ২ ইউনিট | ১৪.৪ – ১৬ ইউনিট | ৪৩২ – ৪৮০ ইউনিট | ৩০০০ – ৩৫০০ টাকা বা তার বেশি |
অর্থাৎ, প্রতিদিন ৮ ঘণ্টা এসি চালালে মাসিক বিদ্যুৎ খরচ ১৯২ থেকে ৪৮০ ইউনিট পর্যন্ত হতে পারে।
বিদ্যুৎ বিল কমানোর কার্যকরী সহজ টিপস
মাসিক বিদ্যুৎ বিলের এই চাপ কমাতে কয়েকটি সাধারণ নিয়ম মেনে চললে খরচ কিছুটা হলেও কমানো সম্ভব। এসি চালানোর আগে এই টিপসগুলো মাথায় রাখলে আপনি বিদ্যুৎ বিলের বোঝা হালকা করতে পারবেন:
ইনভার্টার এসিতে বিনিয়োগ: ইনভার্টার প্রযুক্তিযুক্ত এসি ব্যবহার করলে ৩০-৪০ শতাংশ পর্যন্ত বিদ্যুৎ সাশ্রয় করা সম্ভব।
আদর্শ তাপমাত্রা সেট করুন: এসি ২৪ থেকে ২৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় চালান। কম তাপমাত্রায় (যেমন ১৮-২০ ডিগ্রি) রাখলে কমপ্রেসরকে বেশি কাজ করতে হয় এবং বিদ্যুৎ খরচও বাড়ে।
টাইমার ব্যবহার করুন: এসি-তে টাইমার সেট করে দিন, যাতে নির্দিষ্ট সময় পর এসি স্বয়ংক্রিয়ভাবে বন্ধ হয়ে যায় বা ফ্যান মোডে চলে আসে।
ঘরের পরিবেশ নিয়ন্ত্রণ: রুমের দরজা-জানালা বন্ধ রাখুন এবং জানালা ও দরজায় মোটা পর্দা ব্যবহার করুন। এতে ঠান্ডা বাতাস ধরে রাখা যায় এবং এসি কম বিদ্যুৎ খরচ করে।
নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণ: এসির ফিল্টার নিয়মিত পরিষ্কার করুন। নোংরা ফিল্টার বাতাসের প্রবাহে বাধা সৃষ্টি করে, ফলে এসিকে ঘর ঠান্ডা করতে অতিরিক্ত শক্তি ব্যয় করতে হয়।
এই সহজ উপায়গুলো মেনে চললে এসি ব্যবহারের আরামও উপভোগ করা যাবে, আবার বিদ্যুৎ বিলের চাপও কিছুটা কমানো সম্ভব হবে।










