মঙ্গলবার ২ ডিসেম্বর, ২০২৫

লক্ষ্মীপুরে চার শ্রেণির বার্ষিক পরীক্ষা একাই নিলেন প্রধান শিক্ষক

রাইজিং কুমিল্লা ডেস্ক

Rising Cumilla - Headmaster takes annual exams for class 4 alone in Lakshmipur
লক্ষ্মীপুরে চার শ্রেণির বার্ষিক পরীক্ষা একাই নিলেন প্রধান শিক্ষক/ছবি: সংগৃহীত

লক্ষ্মীপুরে প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোর কর্মবিরতির কারণে বার্ষিক পরীক্ষায় চরম বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হয়েছে। সদর উপজেলা পরিষদের পাশে অবস্থিত শহীদ স্মৃতি আদর্শ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সোমবার (১ ডিসেম্বর) দুপুরে দেখা গেছে ব্যতিক্রমী এক চিত্র—সহকারী শিক্ষকরা অফিস কক্ষে আড্ডায় ব্যস্ত, আর প্রধান শিক্ষক একাই চারটি শ্রেণির পরীক্ষা নিচ্ছেন।

শিক্ষা কর্মকর্তা পরীক্ষা গ্রহণের নির্দেশ দিলেও সহকারী শিক্ষকরা শ্রেণিকক্ষে যাননি। বাধ্য হয়ে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কে. এম. জহির উদ্দিন প্রথম, তৃতীয়, চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণির বাংলা ও ইংরেজি বিষয়ের মোট ৩০৮ শিক্ষার্থীর পরীক্ষা একাই পরিচালনা করেন। এতে পরীক্ষার হলে ঠিকমতো তদারকি না থাকায় শিক্ষার্থীদের একে অপরের খাতা দেখে লেখা ও বিভিন্ন বিশৃঙ্খলা করতে দেখা যায়।

অভিভাবকদের মধ্যে এ নিয়ে ব্যাপক ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে। অভিভাবক মো. মাসুমসহ কয়েকজন বলেন, “আজ ইংরেজি পরীক্ষা হওয়া সত্ত্বেও কক্ষে কোনো শিক্ষক নেই। একজন প্রধান শিক্ষক চারটি ক্লাসের পরীক্ষা নিচ্ছেন—এতে পরীক্ষার মান নিশ্চিত হওয়া সম্ভব নয়। এটা শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যতের জন্য হুমকিস্বরূপ।”

প্রধান শিক্ষক কে. এম. জহির উদ্দিন বলেন, “সহকারী শিক্ষকরা কেন্দ্রীয় কর্মসূচি অনুযায়ী কর্মবিরতি পালন করছেন। শিক্ষা কর্মকর্তার নির্দেশ সত্ত্বেও কেউ পরীক্ষায় অংশ নেয়নি। তাই ম্যানেজিং কমিটির সহায়তায় দুই ধাপে পরীক্ষা নিতে হয়েছে। যথাসাধ্য সঠিকভাবে পরীক্ষা নেয়ার চেষ্টা করেছি।” তিনি আরও জানান, শুধু তাদের বিদ্যালয় নয়, জেলার প্রায় সব বিদ্যালয়েই প্রধান শিক্ষকরা একাই পরীক্ষা নিয়েছেন।

অন্যদিকে আন্দোলনরত সহকারী শিক্ষিকা মোজাহান বেগমসহ তিনজন শিক্ষক অভিযোগ করেন, দীর্ঘদিন ধরে সহকারী শিক্ষকরা বৈষম্যের শিকার। ১১তম গ্রেড, পদোন্নতি ও আরও দুটি দাবিসহ মোট তিন দফা দাবী আদায় না হওয়া পর্যন্ত তারা কর্মবিরতি চালিয়ে যাবেন বলে জানান। তারা বলেন, “সরকার পরিপত্র জারি করলেই আমরা কর্মবিরতি তুলে নেব। প্রয়োজনে বন্ধের মধ্যেই পরীক্ষা নেবো। দাবী মানা না হলে আরও কঠোর কর্মসূচি দেয়া হবে।”

বিষয়টি তাৎক্ষণিকভাবে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জামসেদ আলম রানাকে জানানো হলে তিনি সদর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে পাঠানো হচ্ছে বলে জানান। তবে শিক্ষা কর্মকর্তা ঘটনাস্থলে যাননি।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আমজাদ হোসেন বলেন, “সহকারী শিক্ষকদের আন্দোলনের কারণে এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। বিষয়টি আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে লিখিতভাবে জানিয়েছি।”

আরও পড়ুন