
দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ আবারও ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা দেখাচ্ছে। চলতি অক্টোবর মাসের প্রথম আট দিনেই প্রবাসী আয় হিসেবে দেশে এসেছে প্রায় ৮০ কোটি মার্কিন ডলার। এই প্রবাহ রিজার্ভকে শক্ত অবস্থানে নিয়ে যেতে সাহায্য করছে।
এরই মধ্যে গত বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ ব্যাংক বাজার থেকে ১০টি বাণিজ্যিক ব্যাংক থেকে ১০ কোটি ৭০ লাখ ডলার কিনেছে। ফলে ওই দিন শেষে দেশের মোট বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ দাঁড়িয়েছে প্রায় ৩১.৯৪ বিলিয়ন ডলার, যা কার্যত ৩২ বিলিয়ন ডলার ছোঁয়ার পথে।
তবে, আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) হিসাব পদ্ধতি বিপিএম-৬ অনুযায়ী এই রিজার্ভের পরিমাণ বর্তমানে ২৭ দশমিক ১২ বিলিয়ন ডলার। এই তথ্য নিশ্চিত করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, গত ৫ অক্টোবর পর্যন্ত দেশের রিজার্ভ ছিল ৩১ দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলার। আইএমএফের হিসাব অনুযায়ী ওই সময় রিজার্ভ ছিল ২৬ দশমিক ৬২ বিলিয়ন ডলার। অর্থাৎ, এক সপ্তাহের ব্যবধানে রিজার্ভ বেড়েছে আরও প্রায় অর্ধ বিলিয়ন ডলার।
বর্তমান অর্থবছরের প্রথম তিন মাসে বাংলাদেশ ব্যাংক বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর কাছ থেকে ১৪টি নিলামের মাধ্যমে ২ বিলিয়নের বেশি ডলার কিনেছে। এসব নিলাম অনুষ্ঠিত হয়েছে মাল্টিপল প্রাইস পদ্ধতিতে, যেখানে প্রতি ডলারের গড় মূল্য ছিল ১২১ টাকা ৮০ পয়সা।
এদিকে, প্রবাসী আয়ও গত এক বছর ধরে ধারাবাহিকভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে। সদ্য বিদায়ী সেপ্টেম্বর মাসে প্রবাসীরা দেশে পাঠিয়েছেন ২৬৮ কোটি ৫৮ লাখ ডলার, যা আগস্ট মাসের চেয়ে প্রায় ১৬ কোটি ৫০ লাখ ডলার বেশি। এটি উল্লেখ্য যে, গত মার্চ মাসে প্রবাসী আয় রেকর্ড ৩২৯ কোটি ডলার ছাড়ায়—যা এক মাসে দেশে আসা সর্বোচ্চ প্রবাসী আয়।
বিশ্লেষকদের মতামত ও ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা:
অর্থনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, প্রবাসী আয়ে এই ইতিবাচক ধারা ও রিজার্ভ বৃদ্ধির পেছনে প্রধান কারণ হলো অর্থপাচার ও হুন্ডি লেনদেনের হার কমে আসা। পাশাপাশি ব্যাংকিং চ্যানেলে স্থিতিশীল বিনিময় হার প্রবাসীদের বৈধ পথে অর্থ পাঠাতে উৎসাহিত করছে।
অর্থনীতিবিদরা বলছেন, এই প্রবণতা অব্যাহত থাকলে বছর শেষে রিজার্ভ আরও বাড়বে, যা দেশের আমদানি ব্যয় মেটানো ও অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা রক্ষায় ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে।