বুধবার ৮ অক্টোবর, ২০২৫

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইলের সেই জাল দলিলের লেখক আবু বক্করকে খুঁজছে পুলিশ

সরাইল, ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি

Rising Cumilla - Police are looking for Abu Bakkar, the author of the fake document in Sarail, Brahmanbaria.
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইলের সেই জাল দলিলের লেখক আবু বক্করকে খুঁজছে পুলিশ/ছবি: প্রতিনিধি

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইলে জাল দলিল সিজনের অপরাধে আবু বক্কর (৩৮) নামের সরাইল সাব-রেজিস্ট্রি অফিসের এক দলিল লেখকের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। ঘটনা জানাজানির পর থেকে আত্নগোপনে থাকা এই দলিল লেখককে গ্রেফতার করতে তৎপর রয়েছে পুলিশ।

রবিবার (২১ সেপ্টেম্বর) সরাইল সদর ভূমি অফিসের উপ-সহকারী কর্মকর্তা মোঃ অলিউর রহমান বাদী হয়ে সরাইল থানায় এ মামলা দায়ের করেন।

অভিযুক্ত দলিল লেখক সরাইল উপজেলা’র পানিশ্বর ইউনিয়নের বড়ইবাড়ি এলাকার মুসলিম মিয়া-র ছেলে।

এজাহার সূত্রে জানা গেছে, সরাইল উপজেলা সদরের নতুন হাবলী গ্রামের শামসুল আলম ঠাকুরের ছেলে রাকিবুল ইসলাম ঠাকুর ২৪০৬ নং দলিল মূলে গত (১৮ আগস্ট) নামজারী জমাখারিজ আবেদন নং- ৯৩৩১৪৭৪ এবং নামজারী মোকদ্দমা নং- ২১৯১/২০২৫-২৬ এর নামজারীর আবেদন করেন এবং চলতি মাসে’র (১৫ সেপ্টেম্বর) এটি মঞ্জুর হয়, কিন্তু পরবর্তী কর্মদিবস অর্থাৎ (১৬ সেপ্টেম্বর) দাখিলকৃত দলিলের প্রতিলিপি সন্দেহজনক মনে হলে বিবিধ মোকদ্দমা নং- ৩১/২০২৫-২৬ রুজু করা হয়। এবং পক্ষগণকে ১৭ই সেপ্টেম্বর বিবিধ মোকদ্দমা শুনানিতে উপস্থিত থাকার জন্যে নোটিশ প্রদান করা হয়।

১৮ই সেপ্টেম্বর পক্ষগণ উপস্থিত হলে আবেদনকারী রাকিবুল ইসলাম ঠাকুরের হাতে প্রাপ্ত একটি দলিলে সরাইল সাব-রেজিষ্টার অফিসের ২০০২ সালের ১৮ই জুন রেজিস্ট্রিকৃত ২৪০৬ নং দলিলে দাতা সামছুল আলম ঠাকুর, পিতা- তাহের উদ্দিন ঠাকুর ও গ্রহীতা রফিকুল ইসলাম ঠাকুর- পিতা সামছুল আলম ঠাকুর দেখা যায় এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা রেজিষ্টারের কার্যালয়ে যাচাই করা হলেও একই চিত্র মিলে।

তবে নামজারী আবেদন নং- ৯৩৩১৪৭৪ এবং নামজারী মোকদ্দমা নং- ২১৯১/২০২৫-২৬ এর আবেদনে অনলাইনে দাখিলকৃত সরাইল সাব-রেজিস্ট্রার অফিসের ১৮/০৬/২০০২ ইং তারিখের রেজিস্ট্রিকৃত ২৪০৬ নং দলিলে দাতা ০১। শফিকুল হোসেন, ০২। রফিকুল হোসেন, ০৩। তোফাজ্জল হোসেন, পিতা- দেওয়ান মোহাম্মদ ঠাকুর, ০৪। ছুফিয়া খাতুন, পিতা-তাইজ উদ্দিন, ০৫। রাজিয়া বেগম, পিতা- আবদুল খালেক, ০৬। আঙুরা বেগম, পিতা- সিরাজুল ইসলাম ও অভিযুক্ত ব্যক্তি রাকিবুল ইসলাম ঠাকুর, পিতা- সামছুল আলম ঠাকুর, সাং- নতুন হাবলী উল্লেখ করা হয়।

শুনানির এক পর্যায়ে খারিজ আবেদনে ব্যবহৃত দলিলটি জাল এবং দলিল লেখক আবু বক্কর ও অজ্ঞাত ৩, ৪ জনের যোগসাজশে এবং সহযোগিতা’য় জাল দলিলের মাধ্যমে অন্যের জমি নিজ নামে খারিজের চেষ্টা করার বিষয়টি স্বীকার করেন আবেদনকারী রাকিবুল ইসলাম ঠাকুর।

পরবর্তীতে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে সরাইল উপজেলা সহকারী কমিশনার ভূমি ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট শারমিন বেগম অপরাধী রাকিবুল ইসলাম ঠাকুর’কে ১৮৬০ এর ১৮৮ ধারা লঙ্গনের দায়ে ৬ মাসের বিনাশ্রম কারাদন্ড প্রদান করেন। এবং অভিযুক্ত দলিল লেখক আবু বক্করের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ প্রদান করেন।

মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে সরাইল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ মোরশেদুল আলম চৌধুরী বলেন, দলিল লেখক আবু বক্করের বিরুদ্ধে মামলা রুজু করা হয়েছে। তাকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।

আরও পড়ুন