
পাবনার আতাইকুলায় চাঞ্চল্যকর কাঠ ব্যবসায়ী জাইদুল মোল্লা (৫৩) হত্যা মামলার রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। ক্লুলেস এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে আকরাম হোসেন (৩০) ও সিহাব (৩০) নামের দুই ব্যক্তিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এছাড়াও রুবেল নামের আরও একজন আসামি পলাতক রয়েছে।
পাবনা পিবিআই বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) এক প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এই তথ্য নিশ্চিত করেছে। গ্রেফতারকৃত আসামিদের আদালতে পাঠানো হলে তারা ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে এবং হত্যাকাণ্ডে নিজেদের সম্পৃক্ততার কথা স্বীকার করেছে।
পিবিআই জানায়, গত ৯ এপ্রিল সকালে আতাইকুলা থানার তেবাড়ীয়া গ্রামের জনাব খাঁর বটতলার পাশে ঝোপের মধ্যে অজ্ঞাতপরিচয় এক ব্যক্তির লাশ দেখতে পান স্থানীয়রা। পরে লাশটি সাঁথিয়া থানার সিলন্দার পাথাইল গ্রামের কাঠ ব্যবসায়ী জাইদুল মোল্লার বলে শনাক্ত করা হয়।
এই ঘটনার পরপরই পাবনা পিবিআইয়ের পুলিশ সুপার মোমতাজুল এহসান আহাম্মদ হুমায়ুনের তত্ত্বাবধানে এবং পুলিশ পরিদর্শক মোঃ আসাদুজ্জামানের নেতৃত্বে একটি বিশেষ তদন্ত দল ছায়া তদন্ত শুরু করে।
তদন্তের ধারাবাহিকতায়, বুধবার গভীর রাতে সাথিয়া এলাকায় অভিযান চালিয়ে আকরাম ও সিহাবকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয় পিবিআই। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে।
প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে আরও উল্লেখ করা হয়েছে যে, জনৈক টিপুর সাথে পূর্ব শত্রুতার জের ধরেই জাইদুল মোল্লাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। টিপু, আকরাম ও রুবেল এই কিলিং মিশনে সরাসরি অংশ নেয়। টিপু পেশায় মাটি কাটার ট্রলি গাড়ির চালক এবং পলাতক আসামি রুবেল তার ভাগ্নে। রুবেল সর্বহারা দলের আত্মসমর্পণকারী সদস্য এবং টিপু অর্থের বিনিময়ে রুবেল ও আকরামকে ভাড়া করে।
পরিকল্পনা অনুযায়ী, গত ৮ এপ্রিল বিকেলে টিপু, রুবেল ও সিহাব একত্রিত হয়ে হত্যার পরিকল্পনা ও স্থান নির্ধারণ করে। একই দিন রাত আনুমানিক সাড়ে ৮টার দিকে আসামিরা কৌশলে জাইদুলকে মোটরসাইকেলে করে সিলন্দা এলাকা থেকে ঘটনাস্থল আতাইকুলা থানার জনাব খাঁর বটতলায় নিয়ে যায়। সেখানে টিপু, রুবেল এবং আকরাম ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে জাইদুলকে হত্যা করে রাস্তার পাশে ফেলে রাখে। এরপর টিপু ও রুবেল রাস্তার ওপরের রক্ত পরিষ্কার করে ঘটনাস্থল ত্যাগ করে।
পিবিআই জানিয়েছে, পলাতক আসামি রুবেলকে গ্রেফতারের চেষ্টা অব্যাহত আছে।