
দেশের বাজারে আজ ১ আগস্ট থেকে খোলা সয়াবিন তেল বিক্রি বন্ধ হচ্ছে। এতে আরও দুর্ভোগ বাড়বে স্বল্প আয়ের মানুষের। কারণ, ৫০, ১০০ বা ২০০-২৫০ মিলিলিটার সয়াবিন তেলের কোনো প্যাকেট এখনো বাজারে নেই। আবার বোতলজাত তেলের দাম খোলা তেলের চেয়ে বেশি হওয়ায় তাদের খরচও বাড়বে।
এদিকে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর বলছে, পরিস্থিতি তদারকি করতে ১ আগস্ট থেকেই মাঠে থাকবে সংস্থাটি। অবশ্য ভোক্তাদের দাবি, নিম্ন আয়ের মানুষের কথা ভেবে নিষেধাজ্ঞা কার্যকরে আরেকটু সময় দেওয়া উচিত।
অপরদিকে পণ্যের মান নির্ধারণকারী প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ডস অ্যান্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউশন (বিএসটিআই) বলছে, খোলা ভোজ্যতেলে ভিটামিন ‘এ’ সঠিক মাত্রায় থাকে না। ভোজ্যতেলের মান নিশ্চিত করতেই সরকার এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তবে পাইকারি ভোজ্যতেল ব্যবসায়ীরা বলছেন, এই সিদ্ধান্ত আত্মঘাতী।
দেশে বর্তমানে ভোজ্যতেলের বার্ষিক চাহিদা ২৪ লাখ টন। এর মধ্যে দেশীয় উৎস থেকে আসে মাত্র ৩ লাখ টন বা ১২ শতাংশ। চাহিদার বাকি ৮৮ শতাংশই পূরণ হয় আমদানি করা সয়াবিন ও পাম অয়েল থেকে। আমদানি করা সয়াবিন তেলের ৬০ শতাংশ এবং পাম অয়েলের ৯৭ শতাংশই বিক্রি হয় খোলা অবস্থায়।
এ অবস্থায়, ১ আগস্ট থেকে খোলা সয়াবিন তেল বিক্রি নিষিদ্ধ করেছে শিল্প মন্ত্রণালয়। ভোজ্যতেলের দাম নিয়ন্ত্রণ, ভেজাল বন্ধসহ মান বজায় রাখতেই প্যাকেটজাত করে বিক্রির নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এটি কার্যকরে মাঠে থাকার কথা জানিয়েছে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর।
সরকার-নির্ধারিত প্রতি লিটার খোলা সয়াবিন তেলের দাম ১৫৯ এবং বোতলজাত ১৭৯ টাকা। খোলা তেল বিক্রি বন্ধ হলে এর প্রভাবে বাজারে তেলের দাম বাড়ার আশঙ্কা করছেন ব্যবসায়ীরা। দেশে ভোজ্যতেলের ৬৫ শতাংশই ড্রামজাত বা খোলা হিসেবে বিক্রি হয়। দরিদ্র ও হতদরিদ্র মানুষ সাধারণত ৫০ বা ১০০ গ্রাম বা এর কিছু বেশি পরিমাণ ভোজ্যতেল কিনে থাকে। তাদের ভরসা খোলা তেল। গ্রামের ৮০ শতাংশ মানুষ খোলা তেল কেনে।
ব্যবসায়ীরা জানান, তেল রিফাইনারি কোম্পানিগুলো সরকার নির্ধারিত দামে প্যাকেটজাত করলে সুবিধা পাবে ক্রেতারা। এক বিক্রেতা বলেন, ‘খোলা তেলটা যদি প্যাকেটজাত করে দেওয়া হয়, তাহলে সাধারণ মানুষের জন্য এটি কষ্টকর হবে না।’