ডিসেম্বর ১২, ২০২৪

বৃহস্পতিবার ১২ ডিসেম্বর, ২০২৪

পুরুষের অণ্ডকোষে ‘মাইক্রোপ্লাস্টিক’ শনাক্ত, কমছে প্রজনন ক্ষমতা

Plastic
প্রতীকি ছবি/সংগৃহীত

পুরুষের যৌন শক্তি দিন দিন হ্রাস পাচ্ছে বিশ্বজুড়ে। এই নিয়ে চিকিৎসা বিজ্ঞানিরা উদ্বিগ্ন। কমে যাচ্ছে প্রজনন ক্ষমতা। বিশেষ করে চীন, দক্ষিণ কোরিয়া, জাপান, ইউরোপের বিভিন্ন দেশে ব্যাপক হারে কমে গেছে সন্তান জন্মের হার।

বিয়েতে অনাগ্রহ দেখাচ্ছে বর্তমান সময়ের তরুণরা। তরুণীরাও এক্ষেত্রে পিছিয়ে নেই।

জানা গেছে, পুরুষের অণ্ডকোষে মাইক্রোপ্লাস্টিক পাওয়া গেছে। এ কারণে পুরুষের প্রজনন ক্ষমতা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বলেও আশঙ্কা করছেন গবেষকরা।

সম্প্রতি টক্সিকোলজিক্যাল সায়েন্স জার্নালে প্রকাশিত এক গবেষণা প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা যায়। যুক্তরাষ্ট্রের নিউ মেক্সিকো বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল গবেষক এই গবেষণাটি পরিচালনা করেছেন।

আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম গার্ডিয়ানে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গবেষকরা ২৩ জন মানুষ এবং ৪৭টি পোষা কুকুরের অণ্ডকোষ থেকে টিস্যু সংগ্রহ করে পরীক্ষা করেছেন।

ফলাফলে দেখা যায়, প্রতিটি নমুনায় মাইক্রোপ্লাস্টিক রয়েছে। শুধু তাই নয়, অবাক করা বিষয় হচ্ছে কুকুরের চেয়ে মানুষের অণ্ডকোষে তিন গুণ বেশি মাইক্রোপ্লাস্টিকের উপস্থিতি রয়েছে।

যেখানে কুকুরের অণ্ডকোষের প্রতি গ্রাম টিস্যুতে প্লাস্টিক পাওয়া গেছে ১২২.৬৩ মাইক্রোগ্রাম, সেখানে মানুষের অণ্ডকোষে পাওয়া গেছে ৩২৯.৪৪ মাইক্রোগ্রাম প্লাস্টিক।

কীটনাশকের মতো রাসায়নিক দূষণের কারণেও কয়েক দশক ধরে পুরুষদের মধ্যে শুক্রাণুর সংখ্যা কমে আসছে।

সম্প্রতি মানুষের রক্ত, প্লাসেন্টাস এবং বুকের দুধেও আবিষ্কৃত হয়েছে এই মাইক্রোপ্লাস্টিক। যা মানুষের দেহে সরাসরি প্রভাব ফেলতে শুরু করেছে। স্বাস্থ্যের উপর এর প্রভাব এখনও অজানা হলেও মাইক্রোপ্লাস্টিককে পরীক্ষাগারে মানব কোষের ক্ষতি করতে দেখা গেছে।

তবে গবেষকরা বলছেন মাইক্রোপ্লাস্টিক শুক্রাণুর সংখ্যা হ্রাসের কারণ হতে পারে সেটি প্রমাণ করার জন্য আরও গবেষণার প্রয়োজন রয়েছে।

মূলত ২০১৬ সালে পোস্টমর্টেম করা কিছু মৃত ব্যক্তির টেস্টগুলো বিশ্লেষণ করেছিলেন বিজ্ঞানীরা। মারা যাওয়া ওই ব্যক্তিদের বয়স ছিল ১৬ থেকে ৮৮ বছর বয়স পর্যন্ত। গবেষণায় তারা এখন পর্যন্ত মানুষ এবং কুকুরের অণ্ডকোষে ১২ ধরনের প্লাস্টিক শনাক্ত করেছেন। এসব প্লাস্টিকের মধ্যে সবচেয়ে বেশি পরিমাণে ছিল পলিথিন।

এ বিষয়ে গবেষক দলটির নেতৃত্ব দেওয়া জিয়াওঝং ইউ জানিয়েছেন, মানুষের অণ্ডকোষে প্লাস্টিক উপস্থিতির বিষয়ে তারা আগেই সন্দেহ করেছিলেন। তবে এর পরিমাণ যে এত বেশি হবে, তা তারা কল্পনাও করেননি।

জিয়াওঝং ইউ মনে করেন, এভাবে প্লাস্টিক দূষণ বাড়তে থাকলে মানুষের প্রজনন ক্ষমতা ক্রমশ হ্রাস পেতে শুরু করবে। মানুষের স্পার্ম কাউন্ট কমতে থাকার জন্য এটিও কারণ হতে পারে বলে জানান তিনি। পরবর্তী প্রজন্মের জন্য তাই বড় একটি সমস্যা হিসেবে আবির্ভূত হতে পারে মাইক্রোপ্লাস্টিক।