
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর পক্ষ থেকে আগামী নভেম্বর মাসে গণভোট আয়োজনের দাবি জানানো হয়েছে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) কাছে। একই সাথে, সংখ্যানুপাতিক (পিআর) পদ্ধতিতে জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের প্রস্তুতি রাখারও আহ্বান জানিয়েছে দলটি।
সোমবার (১৩ অক্টোবর) নির্বাচন ভবনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এএমএম নাসির উদ্দিন এবং অন্যান্য কমিশনারদের সঙ্গে এক বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সামনে এই তথ্য তুলে ধরেন জামায়াতের নায়েবে আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের।
জামায়াতের এই নেতা বলেন, বর্তমান নির্বাচনী পদ্ধতিতে গত ৫৪ বছরে কোনো সুষ্ঠু নির্বাচন হয়নি। এতে ‘দিনের ভোট রাতে’ হওয়ার আশঙ্কা থেকে যায়। এই প্রেক্ষাপটে, তারা কমিশনকে বিদ্যমান পদ্ধতির পাশাপাশি সংখ্যানুপাতিক পদ্ধতিরও (পিআর) প্রস্তুতি গ্রহণের জন্য অনুরোধ জানিয়েছেন।
গণভোট প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সংসদ নির্বাচন এবং ‘জুলাই সনদ’ বাস্তবায়নে গণভোট একই দিনে না করে আলাদাভাবে আয়োজন করা উচিত। তাঁর যুক্তি, একসঙ্গে নির্বাচন হলে প্রার্থীরা নিজেদের প্রচারণায় ব্যস্ত থাকবেন। ফলে গণভোটের গুরুত্ব কমে হারাবে।
তিনি মনে করেন, একই দিনে গণভোট হলে ‘রিফর্মস ইস্যু’ গৌণ হয়ে যাবে এবং সবাই দলীয় প্রার্থীর দিকে মনোযোগী হবে। বরং আলাদা দিনে ভোট হলে মানুষ মনোযোগ দিয়ে ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারবে। অতীতে ১৭ বা ২১ দিনের ব্যবধানেও গণভোট হয়েছে এবং এতে খুব বেশি অতিরিক্ত ব্যয় হয় না, কেবল ব্যালট ও কিছু আনুষঙ্গিক খরচ বাড়ে।
বৈঠকে সংখ্যানুপাতিক নির্বাচন (পিআর) পদ্ধতি নিয়েও আলোচনা হয়। জামায়াত জানিয়েছে যে এই পদ্ধতি বিশ্বের বিভিন্ন দেশে কার্যকরভাবে চালু রয়েছে। নির্বাচন কমিশন (ইসি) পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে যে সরকার যদি এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়, তবে পদ্ধতিটি বাস্তবায়নের জন্য প্রয়োজনীয় সব ধরনের প্রস্তুতি নিতে তারা সক্ষম এবং সেই অনুযায়ী তারা প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
প্রবাসী ভোটারদের ভোটাধিকার নিয়েও আলোচনা হয়। ইসি জানায়, প্রবাসীরা জাতীয় পরিচয়পত্রের (এনআইডি) পাশাপাশি জন্মসনদ ব্যবহার করেও ভোট দিতে পারবেন।
অন্যান্য দাবির মধ্যে, জামায়াত জালভোট প্রতিরোধে এনআইডির ভিত্তিতে ভোট গ্রহণের কথা বলেছে, যার জবাবে ইসি ছবিসহ ভোটার তালিকার বিষয়টি উল্লেখ করে। এছাড়াও, জামায়াত নির্বাচনে কর্মকর্তা নিয়োগে নিরপেক্ষতা বজায় রাখা এবং রিটার্নিং কর্মকর্তার নিয়োগ লটারির মাধ্যমে করার জন্য আহ্বান জানিয়েছে।
তবে ইসি সূত্রমতে, কমিশন এখন পর্যন্ত গণভোট আয়োজনের বিষয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেনি।