সেপ্টেম্বর ২০, ২০২৪

শুক্রবার ২০ সেপ্টেম্বর, ২০২৪

নির্বাচনে কারচুপি, দুই দেশের বিরুদ্ধে ভিসা নিষেধাজ্ঞা দিলো যুক্তরাষ্ট্র

US Secretary of State Antony Blinken
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন। ছবি: সংগৃহীত

যুক্তরাষ্ট্র নির্বাচনে কারচুপি ও গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত করার পাশাপাশি দমনপীড়নের দায়ে আফ্রিকার দুই দেশ জিম্বাবুয়ে ও উগান্ডার বিরুদ্ধে ভিসা বিধিনিষেধ আরোপ করেছে। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন এ ঘোষণা দিয়েছেন।

মঙ্গলবার (৫ ডিসেম্বর) মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের বরাত দিয়ে ব্রিটিশ সংবাদ সংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে। তবে নিষেধাজ্ঞা পাওয়া কোনো ব্যক্তির নাম উল্লেখ করা হয়নি।

বিবৃতিতে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন জানান, গণতন্ত্র ক্ষতিগ্রস্ত করায় আমি জিম্বাবুয়ের বিরুদ্ধে নতুন মার্কিন ভিসা নিষেধাজ্ঞা নীতি ঘোষণা করছি। যুক্তরাষ্ট্রের অভিবাসন ও জাতীয়তা আইনের ধারা ২১২(এ)(৩)(সি) অনুসারে, জিম্বাবুয়েতে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া ক্ষতিগ্রস্ত করায় জড়িত বা দায়ী ব্যক্তিদের ওপর এই ভিসা নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হবে।

তবে মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের এই ভিসা নিষেধাজ্ঞা নীতি কেবল জিম্বাবুয়েতে ২০২৩ সালের আগস্টের নির্বাচনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য হবে, দেশটির সর্বসাধারণ নাগরিকদের জন্য নয়।

গত আগস্টে এক বিতর্কিত নির্বাচনে দ্বিতীয় মেয়াদে জয়লাভ করেন জিম্বাবুয়ের প্রেসিডেন্ট এমারসন মানাঙ্গাগওয়া। তবে তার বিরোধীরা ওই নির্বাচনে ‘বিশাল জালিয়াতি’র অভিযোগ করেছে। নির্বাচন পর্যবেক্ষকরাও বলেছেন, জিম্বাবুয়ের নির্বাচন আঞ্চলিক এবং আন্তর্জাতিক মানদণ্ড পূরণে ব্যর্থ হয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র সোমবার উগান্ডার কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ভিসা নিষেধাজ্ঞার নীতি আরও প্রসারিত করেছে। উগান্ডায় গণতন্ত্রকে ক্ষুণ্ন করার পাশাপাশি প্রান্তিক গোষ্ঠীগুলোর বিরুদ্ধে দমনপীড়ন চালানোর জন্য দায়ী কর্মকর্তাদের এই নীতির আওতায় আনা হয়েছে।

রয়টার্স বলছে, উগান্ডার এলজিবিটিকিউ-বিরোধী আইনকে বিশ্বের সবচেয়ে কঠোর আইন হিসাবে বিবেচনা করা হয়। চলতি বছরের মে মাসে পূর্ব আফ্রিকার এই দেশটিতে এই আইন কার্যকর হয় এবং ‘সমকামিতার জন্য মৃত্যুদণ্ডের’ মতো শাস্তিও এতে অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।

অবশ্য আইনটি পাস হওয়ার পর গত জুন মাসে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর উগান্ডার কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিল। এছাড়া মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্ট এর আগেও ২০২১ সালে উগান্ডায় অনুষ্ঠিত নির্বাচনের পরে দেশটির কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ভিসা বিধিনিষেধ আরোপ করেছিল। সেই নির্বাচনকে ‘ত্রুটিপূর্ণ’ বলে অভিহিত করেছিল যুক্তরাষ্ট্র।

মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন সোমবার বলেন, ‘উগান্ডার গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে দুর্বল করার জন্য বা প্রান্তিক বা দুর্বল জনগোষ্ঠীর সদস্যদের দমন করার লক্ষ্যে প্রণীত নীতি বা পদক্ষেপের জন্য দায়ী বা জড়িত উগান্ডার বর্তমান ও সাবেক কর্মকর্তা বা অন্যদের অন্তর্ভুক্ত করে ভিসা বিধিনিষেধ নীতির সম্প্রসারণ ঘোষণা করছি।’

গণতন্ত্র ক্ষুণ্ণ বলতে দেশটিতে নির্বাচনে কারচুপি, ভোটারদের ভোটাধিকার প্রয়োগে বাধা, বিরোধীদের নির্বাচনী প্রক্রিয়া থেকে বাদ, হুমকির মাধ্যমে ভোট, নির্বাচন পর্যবেক্ষক কমিটিতে ভয় দেখানো বোঝানো হয়েছে।

অ্যান্টনি ব্লিংকেন আরও বলেন, ‘(নিপীড়িত) এই গোষ্ঠীগুলোর মধ্যে পরিবেশ কর্মী, মানবাধিকার কর্মী, সাংবাদিক, এলজিবিটিকিউ প্লাস ব্যক্তি এবং সুশীল সমাজের সংগঠকও রয়েছেন।’