
কুমিল্লার চান্দিনার একটি মৃত্যুর রহস্য নিয়ে জনমনে সৃষ্টি হয়েছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া। মৃত ব্যাক্তির নাম সব্দর আলী। সব্দর আলীর মৃত্যু আত্মহত্যা নাকি হত্যা তা নিয়ে চলছে সাধারণ মানুষের মধ্যে চলছে আনাগোনা।
ঘটনার বিবরণে জানা যায়, কুমিল্লার চান্দিনার বরকইট ইউনিয়নের বরকইট দক্ষিণ পাড়ায়, আম গাছের মাঝামাঝি অংশে রশি দিয়ে ঘাড়ের অংশে পেচিয়ে একজন ব্যক্তিকে এমনভাবে বেঁধে রাখা হয়েছে যা দেখলে মনে হবে কেউ তাকে মেরে এভাবে ঝুলিয়ে রেখেছে। আর এমন দাবি নিহতের স্ত্রী ও পরিবারের। আম গাছে অর্ধ অবস্থায় ঝুলে থাকার বিষয়টি আত্মহত্যা নয় বলেও দাবি করেন নিহতের স্ত্রী।
নিহত ব্যক্তির নাম সব্দর আলী (৪৫)। পেশায় ভাঙ্গারি মালামালের ব্যবসায়ী। তিনি ওই গ্রামের মৃত আব্দুল মজিদের ছেলে। স্ত্রী ও চার সন্তান রয়েছে তার। পুলিশ বলছেন, ময়নাতদন্তের রিপোর্ট হাতে পাওয়ার পরেই জানা যাবে মৃত্যুর কারণ।
মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ১০টায় কুমিল্লার চান্দিনা উপজেলার বরকইট ইউনিয়নের বরকইট দক্ষিপাড়া আহম আলীর পুকুর পাড়ের আমগাছে অর্ধ ঝুলন্ত অবস্থায় তার লাশ উদ্ধার করা হয়।
নিহতের পারিবারিক সূত্রে জানা যায়- মঙ্গলবার ভোর ৬টায় ফজরের নামাজ আদায় করতে ঘর থেকে বের হন সব্দর আলী। গ্রামের মসজিদে নামাজ পড়ে তিনি আর বাড়ি না ফেরায় সকাল ৮টার পর থেকে পরিবারের লোকজন বিভিন্ন জায়গায় খোঁজাখুজি শুরু করে। সকাল সাড়ে ১০টায় মালেক নামের এক ব্যক্তি ঘাঁষ কাটতে গিয়ে পুকুর পাড়ে আম গাছের মাঝামাঝি স্থানে তার অর্ধ ঝুলন্ত লাশ দেখে পরিবারের লোকজনকে জানায়। পরে পুলিশ এসে লাশ উদ্ধার করে।
নিহতের স্ত্রী রীনা আক্তার জানান, মাত্র ৩ ফুট উচ্চতায় ৫ ফুটের বেশি উচ্চতার ব্যক্তি ফাঁসিতে ঝুলে কিভাবে? তার পা মাটি ও শরীর মাটিতে আর গলা রশির সাথে গাছে ঝুলে আছে। আর আত্মহত্যা করার কোন কারণ দেখছি না। তার স্বামীর সঙ্গে কারও বিরোধ নেই বলেও জানান তিনি। নিহতের স্ত্রীর দাবি, এটি আত্মহত্যা নয়। কেউ মেরে তাকে গাছের সাথে এভাবে বেঁধে রেখেছে।
চান্দিনা থানার উপ-পরিদর্শক (এস.আই) ইমাম হোসেন জানান, আমরা ঘটনাস্থলে যেভাবে তাকে পেয়েছি সেভাবে কোন মানুষ ফাঁস নিতে পারে না। তবে লাশের প্রাথমিক তদন্তে ফাঁসির আলামতও পাওয়া যায়। বিষয়টি নিয়ে আমরাও সন্দিহান। যে কারণে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। ফরেনসিক রিপোর্ট না আসা পর্যন্ত হত্যা না আত্মহত্যা নিশ্চিত ভাবে বলা যাবে না।
চান্দিনা থানার ওসি জাবেদ উল ইসলাম জানান, প্রাথমিকভাবে আমরা একটি অপমৃত্যু মামলা নিয়েছি। নিহতের স্ত্রী রীনা আক্তার বাদী হয়ে মামলাটি করেন। তবে ফরেনসিক রিপোর্ট হাতে পেলে পরবর্তী আইনি প্রক্রিয়া গ্রহণ করা হবে।