এপ্রিল ২০, ২০২৫

রবিবার ২০ এপ্রিল, ২০২৫

চান্দিনায় সরকারি খাল দখল করে দোকানপাট নির্মাণের অভিযোগ

চান্দিনায় সরকারি খাল দখল করে দোকানপাট নির্মাণের অভিযোগ
চান্দিনায় সরকারি খাল দখল করে দোকানপাট নির্মাণের অভিযোগ/ছবি: প্রতিনিধি

কুমিল্লার চান্দিনা উপজেলার মাধাইয়া ইউনিয়নের মুরাদপুর এলাকায় সরকারি খাল ভরাট করে দোকানপাট নির্মাণের অভিযোগ পাওয়া গেছে।

ঘটনার বিবরনে জানা যায়, ৩নং মাধাইয়া ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডের পশ্চিম মুরাদপুর বাজারের সংলগ্ন পশ্চিমে প্রবাহমান খালের সরকারি খাস জমি অবৈধভাবে দখল করে বহুতল ভবন ও দোকান পাট নির্মাণ নির্মাণ করছেন, অত্র এলাকার মো. কাদের মিয়ার ছেলে মো. শাহজাহান মিয়া ও শহিদ মেম্বারের ছেলে আলী আরশাদ মিয়া।

উপজেলার ৩নং মাধাইয়া ইউনিয়ন মোরাদপুর বাজারের সংলগ্ন পশ্চিম দিক অংশে নাজিরপুর গ্রামের কৃষি মাঠ ঘিরে সরকারি খালটি প্রবাহিত। পশ্চিম মুরাদপুর গ্রামের আনুমিয়া প্রধানের ছেলে মো. কাদির প্রধান, দ্বিনু দাসের ছেলে মনু দাস, লেবা দাসের ছেলে হারু দাসসহ আরো অনেকে ভবন নির্মাণসহ অবৈধ স্থাপনা নির্মাণ করছেন। চোখের সামনে খালটি দখল হলেও প্রশাসন কোন ব্যবস্থা নিচ্ছে না।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ৩নং মাধাইয়া ইউনিয়নের পশ্চিম মুরাদপুর বাজার থেকে নাজিরপুর গ্রাম দিয়ে সরকারি খাল রয়েছে। ১৫/২০ বছর ধরে সেই সরকারি খালটি ভরাট করে দখল করে শহীদ মেম্বারের ছেলে আলী আরশাদসহ আরোও অনেকে অবৈধস্থাপনা নির্মাণ করছেন।

স্থানীয় মো. আবদুর রহমানের ছেলে মো. আনোয়ার হোসেন বলেন, এটি সরকারি খাল। এক সময় প্রবাহমান ছিল। কৃষি জমির পানি এই খাল দিয়ে প্রবাহিত হতো। তবে দখল ও দূষণে খালটি আজ অস্তিত্ব সংকটে পড়েছে। দখলকারীরা প্রভাবশালী হওয়ায় ব্যবস্থা নিচ্ছে না সংশ্লিষ্টরা।

খালটি যেন দখলমুক্ত হয় প্রশাসনের কাছে দাবি জানান তিনি। কবির মিয়ার ছেলে হাজী মফিজ এলাকাবাসীর পক্ষে অভিযোগ করে বলেন, মাসোহারা দিয়ে দোকানপাট চলছে।

ফুল মিয়ার ছেলে মো. ফারক মিয়া বলেন- এ খালটির মধ্যে একাধিক অবৈধভাবে নিজের স্বার্থ হাসিলের জন্য অবৈধ স্থাপনা নির্মাণ করে যার ফলে বর্ষাকালে জলাবদ্ধতা দেখা দেয় ও কৃষি কাজে বিগ্ন ঘটে। প্রশাসনের নিকট দাবি করে বলেন- কৃষি সম্প্রসারণের লক্ষ্যে খালের মধ্যে অবৈধ স্থাপনা অপসারণের দাবিও জানান।

এই ওয়ার্ডের মো. বাতেন মেম্বার বলেন- জোরপূর্বক খাল বন্ধ করে বাড়ি নির্মাণের ফলে বর্ষাকালে পানিবদ্ধতা দেখা দেয়, যার ফলে কৃষিকাজ বিঘ্নিত হয়। তাই প্রশাসনের নিকট দাবি খালের মধ্যে যে অবৈধ স্থাপনা আছে তা উচ্ছেদ করেন। তবে আমরা আশাবাদী কৃষি কাজের সুবিধা ও পরিবেশ দূষণ রোধে জরুরি খালের অবৈধ স্থাপনা অপসারণে সহযোগিতা করবেন।

নাম না প্রকাশ শর্তে বলেন- বাজারে খাল ও খাস জমি দখল করে দোকান নির্মাণ করে রেখেছেন। স্থানীয় ভূমি অফিসে উচ্ছেদ মামলা চলমান সরকারের পক্ষে মামলার রায় পেয়েছেন কয়েক বার তবে কোন অদৃশ্য শক্তির কারণে তাদেরকে উচ্ছেদ করতে ব্যর্থ সরকার পক্ষ তাদের জানা নাই।

এ বিষয়ে মো. আ. মান্নান ও মো. খলিলুর রহমান গত ১৩ এপ্রিল সহকারী কমিশনার (ভূমি) ফয়সাল আল নূর বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ করেন।

অবৈধভাবে খাস জমি দখলের বিষয়ে কথা বলতে মো. শাহজাহান মিয়ার বাড়িতে গেলে তাকে পাওয়া যায়নি। তবে তার পক্ষে একজন বলেন- তিনি খাল দখলমুক্ত করে দিবে তবে যারা তাহার পূর্বে দখল করে রেখেছে তারা খালি করে দিলে তিনিও নিজ দায়িত্বে খালি করে দিবেন। তবে এলাকার অনেকেই খালের মধ্যে বাড়ি ও বাধ নির্মাণ করেছে। সবাই দখল করছে তাই আমরাও করেছি।

চান্দিনা উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) কর্মকর্তা ফয়সাল আল নূর বলেন, সরকারি খাল দখল করে ভবন নির্মাণের সুযোগ নেই। বিষয়টি আমি অবগত হয়েছি। আমি সরেজমিনে বিষয়টি পর্যবেক্ষণ করে দেশ ও জনস্বার্থে খাল দখলকারীদের বিরুদ্ধে অবশ্যই আইন গত ব্যবস্থা নেয়া হবে।