কুমিল্লার বিবির বাজার স্থলবন্দর দিয়ে ২০২২-২৩ অর্থবছরে বাংলাদেশ-ভারতে যাতায়াত করেছেন অর্ধলক্ষাধিক যাত্রী। স্থলবন্দরের কার্যক্রম শুরু হওয়ার পর এটি সর্বোচ্চ যাত্রী পারাপার। একইসঙ্গে বেড়েছে আমদানি-রফতানি। ফলে চলতি বছরে সরকারের ৪ কোটি টাকা রাজস্ব আয় হয়েছে।
যাতায়াতে সময় কম লাগায় এবং সুবিধাজনক স্থানে বন্দর হওয়ায় যাত্রী পারাপারে নতুন রেকর্ড গড়েছে বলে জানালেন বন্দর সংশ্লিষ্টরা।
বিবির বাজার স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ বলেন, ২০০৯ সালে বিবির বাজার স্থলবন্দরের কার্যক্রম শুরু হয়। কুমিল্লা নগরী থেকে আট কিলোমিটার দূরে এই স্থলবন্দর। শহর থেকে যেতে সময় লাগে আধা ঘণ্টা। ঢাকা থেকে দূরত্ব ১১১ কিলোমিটার ও চট্টগ্রাম থেকে দূরত্ব ১৪৭ কিলোমিটার। অপরদিকে আগরতলা থেকে এর দূরত্ব ৬১ কিলোমিটার। ফলে সুবিধাজনক স্থানে বন্দর হওয়ায় দিন-দিন যাত্রী পারাপার ও আমদানি-রফতানি বাড়ছে।
বিবির বাজার স্থল ও শুল্ক স্টেশন সূত্রে জানা যায়, বিবির বাজার দেশের ১৩তম স্থলবন্দর। ২০০২ সালের ১৮ নভেম্বর প্রতিষ্ঠিত হয়। ২০০৯ সালের ১৩ এপ্রিল থেকে কার্যক্রম শুরু হয়। গত কয়েক বছরে রফতানিকৃত প্রধান পণ্যগুলো হলো সিমেন্ট, কয়লা, কোমল পানীয়, রড, পাথর, সাবান, প্লাস্টিক ডোর, পিভিসি পাইপ, টিন, প্লাস্টিক দড়ি, বিস্কুট, কিচেন র্যাক ও ইট ভাঙার মেশিন। আমদানিকৃত পণ্যের মধ্যে উল্লেখযোগ্যভাবে রয়েছে আগরবাতি, ভুট্টা, বেল, আদা, গম, জিরা, মশলা, চাল ও তেঁতুল।
বন্দরের দেওয়া তথ্যমতে, ২০১৮-১৯ অর্থবছরে রফতানি হয়েছে এক লাখ ৫৭ হাজার ৮৪ টন পণ্য, যার মূল্য ১১৫ কোটি ৪০ লাখ টাকা, ২০১৯-২০ অর্থবছরে রফতানি হয়েছে এক লাখ ৩৩ হাজার ৮৬৯ টন পণ্য, যার মূল্য ৯৯ কোটি ৮০ লাখ টাকা, ২০২০-২১ অর্থবছরে রফতানির পরিমাণ এক লাখ ৩৭ হাজার ৫৫৬ টন পণ্য, যার মূল্য ৮৬ কোটি ৭৪ লাখ টাকা, ২০২১-২২ অর্থবছরে রফতানি হয়েছে ৯৭ হাজার ৬৮৬ টন পণ্য, যার মূল্য ৭৩ কোটি ৭২ লাখ টাকা। সর্বশেষ ২০২২-২৩ অর্থবছর রফতানি হয়েছে ৮৩ হাজার ৯২৬ টন পণ্য, যার মূল্য ২০৯ কোটি ৪১ লাখ টাকা।
এ বিষয়ে কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেট কুমিল্লার কমিশনার কাজী তৌহিদা আখতার বলেন, বছরের অন্যান্য মৌসুমের তুলনায় শীত-বসন্তকালে যাত্রী পারাপার এবং আমদানি-রফতানি বেশি হয়। অন্য সময়ে যাত্রী পারাপার এবং আমদানি-রফতানি কম হলেও বন্দর কর্মমূখর থাকে।
২০১৮-১৯ অর্থবছরে এক কোটি ৮৮ লাখ, ২০১৯-২০ অর্থবছরে এক কোটি ১০ লাখ, ২০২০-২১ অর্থবছরে ৪ কোটি টাকা, ২০২১-২২ অর্থবছরে ৩ কোটি ৪৫ লাখ এবং সর্বশেষ ২০২২-২৩ অর্থবছরে ৩ কোটি ৯৯ লাখ টাকা রাজস্ব আয় হয়েছে।
২০২১-২২ অর্থবছরে ভারত থেকে যাত্রী এসেছেন ৬৫, বাংলাদেশ থেকে গেছেন ৩৬ জন। ২০২২-২৩ অর্থবছরে এসেছেন ২৪ হাজার ১১৩, ভারতে গেছেন ২৬ হাজার ২৯৫ জন, যা বন্দরের কার্যক্রম শুরুর পর রেকর্ড যাত্রী পারাপার।
স্থলবন্দরের সুপারিনটেনডেন্ট শাহ নোমান সিদ্দিক বলেন, বিবির বাজার স্থলবন্দর-২ ভৌগলিকভাবে সুবিধাজনক স্থানে বন্দর হওয়ায় যাত্রী পারাপারে নতুন রেকর্ড গড়েছে বলে জানান তিনি।