
কুমিল্লার চান্দিনা উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় অবৈধ ড্রেজারের বিরুদ্ধে উপজেলা প্রশাসনের সাঁড়াশি অভিযান অব্যাহত আছে। সম্প্রতি উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে ৮টি অবৈধ ড্রেজার মেশিন,৫ হাজার ফুট পাইপ ধ্বংস করা হয়েছে। সাথে সাথে অবৈধ ড্রেজার মালিকদের কে চার লক্ষাধিক টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
একইসাথে, স্থানীয় প্রশাসন জনগণকে অবৈধ ড্রেজারের বিষয়ে সতর্ক থাকতে এবং এ ধরনের কর্মকাণ্ড সম্পর্কে তথ্য দিয়ে সহায়তা করার জন্য আহ্বান জানিয়েছে উপজেলা প্রশাসন।
অবৈধ ড্রেজিংয়ের কারণে ফসলি জমির পাশাপাশি পরিবেশের ওপরও মারাত্মক নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। অনেক জায়গায় পুকুরে পাড় ভেঙে যাচ্ছে, যা আশেপাশের গ্রাম ও বাড়িঘরের জন্য হুমকি তৈরি করছে। এছাড়া, ড্রেজারের কারণে পুকুরের পানি ঘোলা হয়ে যাচ্ছে, যা মাছের প্রজনন ও জীবনচক্র ব্যাহত করছে। অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের ফলে ভারী যানবাহন চলাচলের কারণে গ্রামীণ রাস্তাগুলো ভেঙে যাচ্ছে এবং মানুষের চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ছে।
উপজেলা প্রশাসন এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী যৌথভাবে নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করছে। অবৈধ ড্রেজার মালিকদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। ইতোমধ্যে অনেক ড্রেজার জব্দ ও ধ্বংস করা হয়েছে। এই অভিযান শুধু ড্রেজার ধ্বংসেই সীমাবদ্ধ নয়, বরং এর সাথে জড়িত সিন্ডিকেটকেও চিহ্নিত করার চেষ্টা চলছে।
প্রশাসন স্থানীয় জনসাধারণের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে যে, যদি কোনো ব্যক্তি বা গোষ্ঠী অবৈধভাবে ড্রেজিংয়ের সঙ্গে জড়িত থাকে, তবে দ্রুত প্রশাসনকে জানাতে হবে। তথ্য প্রদানকারীর পরিচয় গোপন রাখা হবে বলেও আশ্বস্ত করা হয়েছে। এই সমস্যাটি শুধু প্রশাসনের একার পক্ষে সমাধান করা সম্ভব নয়। এটি একটি সামাজিক সমস্যা এবং এর সমাধানে সকলের সহযোগিতা প্রয়োজন। জনগণের সচেতনতা এবং সক্রিয় অংশগ্রহণ এই অবৈধ কার্যক্রম বন্ধে সবচেয়ে কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে।
চান্দিনায় অবৈধ ড্রেজিং একটি গুরুতর সমস্যা। এই সমস্যার সমাধানে প্রশাসনের পাশাপাশি স্থানীয় জনগণের সক্রিয় অংশগ্রহণ অত্যন্ত জরুরি। সচেতনতা বৃদ্ধি এবং তথ্যের আদান-প্রদানের মাধ্যমে অবৈধ ড্রেজিং সম্পূর্ণভাবে বন্ধ করা সম্ভব। প্রশাসন আশা করে যে, স্থানীয়রা এই উদ্যোগে শামিল হবেন এবং চান্দিনাকে অবৈধ ড্রেজিংমুক্ত রাখতে সহায়তা করবেন।