নভেম্বর ২৭, ২০২৪

বুধবার ২৭ নভেম্বর, ২০২৪

কুমিল্লায় শীতের আগমনে কয়েকশত সাদা বকের মিলনমেলা

White Buck Bird
সাদা বকের মিলনমেলা। ফাইল ছবি

কুমিল্লার সদরে কৃষি সম্পসারণ অধিদপ্তরের পতিত জমিতে প্রতিদিনই জমে সাদা বকের মিলনমেলা। আশপাশের জমির বিভিন্ন অংশে এখন টাক্টর দিয়ে হাল চাষ করছে কৃষকরা। জমিতে অল্প পানির মধ্যে সাদা বকেরা তাদের খাদ্যের সন্ধানে বেশ কিছু দিন যাবত দেখা মেলে।

স্থানীয়রা জানান, বছরের এ সময়ে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত তাদের মিলনমেলা ঘটে। প্রায় কয়েক শতাধিক বক দেখা মেলে। এ দৃশ্য দেখতে দূরদূরান্ত থেকে ছুটে আসছেন দর্শনার্থীও। তবে স্থানীয়রা বলছেন যতই শীত ঘনিয়ে আসছে ততই তাদের সংখ্যাও বাড়ছে।

স্থানীয়দের গোফরান আহমেদ এর সাথে কথা বলে জানা গেছে বিগত কয়েকবছর ধরেই শীতের মৌসুমে এ এলাকায় এসে আশ্রয় নেয় খাবারের সন্ধানে। শীতের পর তাদের আর দেখা মেলেনা। শীতের শুরুতেই ওই এলাকার পুকুরপাড় ও এর আশপাশের গাছগুলোতে তৈরি করে আবাসস্থল। সারাদিন সাদা বকেরা আধাজলে ছোট ছোট পোকা মাকড় ও মাছের খুজে উৎত পেতে থাকে। পুকুর ও আশপাশের জলাশয় থেকে মাছ শিকার করে নিজেদের ও পরিবারের খাদ্য সংগ্রহ করে।

আধা জলে ডুবসাঁতার ও ওড়াউড়ির দৃশ্য দর্শনার্থীদের মুগ্ধ করে। যার ফলে ওই এলাকায় দিন দিনই বাড়ছে পাখিপ্রেমী ও বিভিন্ন বয়সের দর্শনার্থীদের সংখ্যা। পাখি শিকারী থেকে পাখিগুলোকে সুরক্ষা দিতে স্থানীয়রা সাদা বকগুলোর দিকে সুদৃষ্টি রাখছেন। স্থানীয়দের দাবি বকগুলোর সংরক্ষণের।

স্থানীয় বাসিন্দা সাইফুল হোসেন বলেন, শীতকাল থেকে সাদা বকেরা এ এলাকায় আসতে শুরু করে, আবার শীত শেষ হতে না হতেই যেতে শুরু করে। তাদের কলকাকলিতে এ এলাকা মুখরিত হয়ে থাকে। অনেকেই আসেন এ দৃশ্য দেখতে।

আমির হোসেন বলেন, দাদা-দাদির কাছ থেকে শুনেছি কোনো এক সময় গ্রামবাংলার প্রায় প্রতিটি পুকুরের জলে সাদা বক দেখা যেতো। এখনতো সচরাচর তাদের দেখাই যায় না। যে কারণে এখানে এতো বক একসাথে দেখে যে কেউ মুগ্ধ হয়ে যায়। প্রতিদিন অনেকেই আসে পাখিগুলোর দলবেঁধে ওড়া ও খাবারের দৃশ্য দেখতে।

এ বিষয়ে কুমিল্লা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক (ডিডি) আইয়ুব মাহমুদ বলেন, সাদা বক একটি অতিপরিচিত পাখি। বাংলাদেশের হাওর অঞ্চলে তাদের বেশি দেখা যায়। তবে তুলনামূলক ভাবে এ এলাকায় সংখ্যা তেমন একটা নেই। খাবারের সন্ধানে প্রকৃতির নিয়মে তারা আসে এখানে।

আমাদের দেশ থেকে পাখি বিলুপ্ত হওয়ার প্রধান কারণ দিন দিন বন উজাড় হওয়া ও গাছগাছালি কমে যাওয়া। পাখিদের বিলুপ্তির হাত থেকে ধরে রাখতে হলে তাদের বসবাসযোগ্য অভয়াশ্রম তৈরি করে দিতে হবে।