বেপরোয়া কার্যকলাপে জড়িয়ে পড়ছেন কিশোরেরা। এই কিশোরদের কাছে হেনস্তার শিকার হচ্ছেন নারীরা। শুধু হেনস্তাই নয়; অপরিপক্ব হাতে ঝুঁকিপূর্ণ বেপরোয়া গাড়ি চালিয়ে নিজে যেমন দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছেন, তেমনি পথচারীদেরও ঝুঁকির মধ্যে ফেলছেন।
অনিয়ন্ত্রিত এসব বাইকারেরা সড়কে তিন-চারজন একেকটি মোটর সাইকেলে চড়ে অতিরিক্ত গতিতে চালাচ্ছে গাড়ি। বিকট শব্দে অকারণে হর্ণ বাজিয়ে তিব্র শব্দ-দূষণের সৃষ্টি করছে। এই বেপরোয়া কিশোর বাইকাররা পথচারীদের কাছে আতঙ্কের নাম।
এছাড়া বেপোরোয়া গতির কারনে প্রাণও যাচ্ছে অনেকেরই। পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নাকের ডগায় এরা হাইড্রোলিক হর্ণ বাজিয়ে সড়ক-মহাসড়ক দাপিয়ে বেড়াচ্ছে।
কুমিল্লা মহানগর, গোমতি নদীর চর, সদর দক্ষিণ, চৌদ্দগ্রাম, বুড়িচং, দাউদকান্দি, লাকসাম পৌরসদরসহ ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কেও এসব কিশোর বাইকারদের দৌরাত্ম্য দেখা গেছে। স্কুল-কলেজ পড়ুয়া শিক্ষার্থীরা পর্যন্ত একটিতে তিন-চারজন চড়ে বেপরোয়া গতিতে চালাচ্ছে মোটরসাইকেল। ফলে সড়ক দুর্ঘটনায় বাড়ছে হতাহতের সংখ্যা। সচেতনমহল এ নিয়ে উৎকন্ঠা প্রকাশ করেছেন।
ড্রাইভিং লাইসেন্স ও গাড়ির বৈধ কাগজপত্র ছাড়া সড়ক মহাসড়কে মোটরসাইকেলসহ কোন যানবাহন চালানোর সুযোগ নেই। অথচ এসবের কোন বালাই নেই। সব চলছে যেন ফ্রি-স্টাইলে। সড়কে মোটরসাইকেল দাপিয়ে বেরানো বেশিরভাগ কিশোর বাইকারের বয়স ১৮-এর কম। খুঁজলে পাওয়া যাবেনা ড্রাইভিং লাইসেন্সও।
এ বিষয়ে নিরাপদ সড়ক আন্দোলনের দাউদকান্দি শাখার সভাপতি লিটন সরকার বাদল বলেন, এমন দুর্ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করে ড্রাইভিং লাইসেন্সবিহীন চালক ও কিশোর চালকদের নিয়ন্ত্রণের জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। তিনি বলেন, এ ব্যাপারে অভিভাবকদের সচেতনতা হওয়া জরুরি।
এ বিষয়ে দাউদকান্দি মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) জুনায়েত চৌধুরী বলেন, ‘ড্রাইভিং লাইসেন্সবিহীন মোটরসাইকেল চালানো বন্ধে অভিযান চালানোর উদ্যোগ নেওয়া হবে অচিরেই।’
এদিকে গত ৭ অক্টোবর সংবাদ মাধ্যমে বেসরকারি সংগঠন রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক সাইদুর রহমানের পাঠানো এক প্রতিবেদনে জানানো হয়, চলতি বছরের সেপ্টেম্বরে ১৬৪টি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় ১৭৯ জন নিহত হয়েছেন, যা মোট নিহতের ৪২ শতাংশ। মোটরসাইকেল দুর্ঘটনার হার ৪১ দশমিক ৮৩।