
কুমিল্লার ইউনিয়ন পরিষদগুলোতে পরিচালিত গ্রাম আদালতগুলো বিচারপ্রার্থীদের আস্থার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি থেকে মে মাস পর্যন্ত মাত্র চার মাসে ৬ হাজার ২৯০টি মামলা দায়ের হয়েছে, যার মধ্যে ৬৫.৪৮ শতাংশ মামলার নিষ্পত্তি হয়েছে। এই সাফল্যের পেছনে রয়েছে স্থানীয় সরকার বিভাগের ‘বাংলাদেশে গ্রাম আদালত সক্রিয়করণ – ৩য় পর্যায়’ প্রকল্পের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা।
বৃহস্পতিবার জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে গ্রাম আদালত সম্পর্কে জনসচেতনতা বৃদ্ধিতে আয়োজিত এক কর্মশালায় এই তথ্য প্রকাশ করা হয়। স্থানীয় সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানসমূহের অংশগ্রহণে সমন্বিত পরিকল্পনা প্রণয়ন বিষয়ক এই কর্মশালায় জানানো হয়, দায়েরকৃত মামলাগুলোর মধ্যে ৮০৯টি উচ্চ আদালত থেকে পাঠানো হয়েছিল, যা গ্রাম আদালতের সক্ষমতার একটি বড় প্রমাণ।
স্থানীয় সরকার, কুমিল্লার উপপরিচালক মোঃ মেহেদী মাহমুদ আকন্দ-এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এই কর্মশালায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জেলা প্রশাসক মো. আমিরুল কায়ছার। জেলা প্রশাসক তাঁর বক্তব্যে গ্রাম আদালতকে একটি সময়োপযোগী উদ্যোগ হিসেবে আখ্যায়িত করেন। তিনি বলেন, “অনেক দেওয়ানি ও ফৌজদারি বিরোধ গ্রাম আদালতে নিষ্পত্তি করা সম্ভব, এতে উচ্চ আদালতের মামলার চাপও কমবে।”
‘বাংলাদেশে গ্রাম আদালত সক্রিয়করণ – ৩য় পর্যায়’ প্রকল্পের মূল লক্ষ্য হলো দরিদ্র ও প্রান্তিক জনগণের, বিশেষ করে নারীদের, ন্যায়বিচার প্রাপ্তিতে সক্ষমতা বৃদ্ধি করা। ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন এবং বাংলাদেশ সরকারের যৌথ অর্থায়ন এবং ইউএনডিপির কারিগরি সহায়তায় এই প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হচ্ছে।
কর্মশালায় অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) পঙ্কজ বড়ুয়া, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মাহফুজা মতিনসহ বিভিন্ন সরকারি কর্মকর্তা, বেসরকারি সংস্থার প্রতিনিধি এবং গণমাধ্যমকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। স্থানীয় সরকার শাখার সহকারী কমিশনার মালিহা সুলতানা কর্মশালাটি সঞ্চালনা করেন এবং গ্রাম আদালত প্রকল্পের ব্যবস্থাপক মো. আমিনুর রহমান পাওয়ার প্রেজেন্টেশন উপস্থাপন করেন।