কুমিল্লা ইউনিভার্সিটি ডিবেটিং সোসাইটি’র (সিওইউডিএস) দশম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী ও ডিবেটর সার্চ টুর্নামেন্ট-২০২৩ এর ফাইনাল ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে বিজয়ী হয়েছে আইন বিভাগ। এবার বিতর্কের মূল প্রতিপাদ্য ছিল ‘যুক্তির বর্ণমালা গ্রন্থিত হোক মুক্তির কবিতা’।
শনিবার (৩ ফেব্রুয়ারি) বিকাল চারটায় বিজ্ঞান অনুষদের কনফারেন্স রুমে একাউন্টিং অ্যান্ড ইনফরমেশন বিভাগ বনাম আইন বিভাগের মধ্যে বিতর্কের ফাইনাল পর্ব অনুষ্ঠিত হয়। এবার বিতর্কের বিষয় নির্ধারিত ছিল, এই সংসদ মনে করে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর অধ্যয়ন সীমিত করে কারিগরি শিক্ষা সম্প্রসারণ করা।
এ সময় জান্নাতুল ফেরদৌসের সভাপতি্ত্বে এবং কাউসার আহম্মেদ বাঁধনের সঞ্চালনায় বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন কুমিল্লার সচেতন নাগরিক কমিটি (সনাক) এর সাবেক সভাপতি বদরুল হুদা জেনু, ময়নামতি ইংলিশ স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ মেজর মেহেদী হাসান শাহরিয়ার, কুমিল্লা ইউনিভার্সিটি ডিবেটিং সোসাইটির মডারেটর ড.মোঃ আব্দুল্লাহ আল মাহবুব।
এছাড়াও আইন বিভাগের ছাত্র উপদেষ্টা সাঈদা তালুকদার রাহী, একাউন্টিং অ্যান্ড ইনফরমেশন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ফাহমিদা বেগম এবং আইন বিভাগের প্রভাষক সোহরাব হোসেনসহ ডিবেটিং সোসাইটির বিভিন্ন কমিটির বিতার্কিকরা উপস্থিত ছিলেন।
এতে একাউন্টিং অ্যান্ড ইনফরমেশন বিভাগ সরকারি দল এবং আইন বিভাগ বিরোধী দলের ভূমিকা পালন করেন।সরকারি দলের বিতার্কিকরা হলেন মাহমুদ হাসান, মোঃ শাহিদুল ইসলাম ও মোঃ আবছার উদ্দীন এবং বিরোধী দলের বিতার্কিকরা হলেন মোছাঃ কানিজ ফাতেমা রিমি, মায়মুনা বিনতে মাসুদ রাহিম এবং সানজিদা সেলিম ছোঁয়া ।
পুরস্কার বিতরণী পর্বে সেরা বিতার্কিক নির্বাচিত হয়েছেন আইন বিভাগের বিরোধীদলীয় নেতা মোছাঃ কানিজ ফাতেমা রিমি। রাইজিং ডিবেটর হিসেবে মনোনীত হয়েছেন নাজমুস সাকিব (অর্থনীতি), নাজমুল হাসান ফাহিম (ফিন্যান্স অ্যান্ড বিভাগ ), কিফায়াতুল হক (গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ), মোঃ ফারুক (ইংরেজি বিভাগ), মিশকাত ( গনিত বিভাগ) ও তাহমিদ তাজওয়ার (মার্কেটিং বিভাগ)।
ভিডিও কনটেস্টে বিজয়ী হয়েছেন আব্দুল্লাহ আল সায়েম (ফিন্যান্স অ্যান্ড বিভাগ ), মোছাঃ কানিজ ফাতেমা রিমি (আইন বিভাগ), মোঃ মাকসুদ নূর (ইংরেজি বিভাগ) এবং সেরা সংগঠক নির্বাচিত হয়েছেন আরাফাত হোসাইন সামি ও মুহসীন জামিল।
এছাড়াও বারোয়ারী বিতর্কে প্রথম হয়েছেন ফাহিমা সুলতানা রাতুয়া, দ্বিতীয় হয়েছেন তাইমুন নাহার তিশা এবং তৃতীয় হয়েছেন জান্নাতুল ফেরদৌস।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বদরুল হুদা জেনু বলেন, যুক্তি দিয়ে অন্ধ মানুষকে আলোর দিকে আনা যায় । তাই বিতর্কের কোনো বিকল্প নেই। দুই দলই বিজয়ী। এইটা গোলকধাঁধার মতো। এইখানে সবাই শিখে। যুক্তি দিয়ে সত্য ও সাহসী প্রজন্ম গড়ে তুলায় হচ্ছে বিতর্কের মূল লক্ষ্য। বিতর্ক একটা মহান মানুষ তৈরি করতে পারে।
ফাইনালে পর্বের বিজয়ী দলের নাম ঘোষণার আগে মডারেটর ড.মো: আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ বলেন, বিতর্কে কেউ হারে না। কেউ জিতে আবার কেউ অভিজ্ঞতা অর্জন করে । এই ভাবেই সামনের দিকে এগিয়ে যেতে হবে। বিতর্কে প্রচুর তথ্য উপাত্ত থাকতে হবে। বিতার্কিকদের বিনয়ী হতে হবে।
আজকের বিতর্কের বিষয় নিয়ে তিনি বলেন, সবার জন্য উচ্চশিক্ষা নয়। কারিগরি শিক্ষাও আমাদের প্রয়োজন। এজন্য আমাদের শক্ত অবস্থান তৈরি করতে হবে। বিশ্বের উন্নত দেশগুলোর দিকে তাকালে আমরা বুঝতে পারি কারিগরি শিক্ষা কতটুকু প্রয়োজন। বাংলাদেশের শিক্ষা ব্যবস্থা মূল জায়গায় নেই। না আছে স্নাতকে না আছে কারিগরিতে। তাই কারিগরি শিক্ষায় আমাদের জোর দিতে হবে।
সমাপনী বক্তব্যে জান্নাতুল ফেরদৌস বলেন, আজ সবার পার্ফরমেন্স ভালো ছিল। পরবর্তীতে আরও ভালো করতে হবে। ত্রুটিগুলো শুধরে আমাদের এগোতে হবে। শেখার আসলে শেষ নেই। আমি এই সংগঠন থেকে নেতৃত্ব শিখেছি, দূরদর্শিতা শিখেছি। কীভাবে সমস্যা সমাধান করতে হয় তা শিখেছি। আমরা চেষ্টা করলে সব টিমকে হারাতে পারবো। আমাদের এই আত্মবিশ্বাসটা থাকতে হবে। বিতর্কের সাথে থাকবেন, থাকলে কিছু না কিছু পেয়ে যাবেন।
উল্লেখ্য, এর আগে কেক কেটে কুমিল্লা ইউনিভার্সিটি ডিবেটিং সোসাইটির দশম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়। কুমিল্লা ইউনিভার্সিটি ডিবেটিং সোসাইটি ২০১৪ সালের ২৮ জানুয়ারি প্রতিষ্ঠিত হয়।