
নানি-দাদীদের হাতে তৈরি কোরবানির ঈদের গরুর মাংসের রেসিপি গুলোতে থাকে একধরনের অতুলনীয় ঘ্রাণ, স্বাদ আর আবেগ—যা ঈদের দিনকে আরও বিশেষ করে তোলে। নিচে একটি ঐতিহ্যবাহী, ঘরোয়া এবং সুস্বাদু গরুর মাংসের ভুনা রেসিপি দেওয়া হলো, যেটা আমাদের নানি-দাদীরা সাধারণত ঈদের সকালে রান্না করতেন।
চলুন জেনে নেই-
উপকরণ:
- গরুর মাংস (হাড়সহ): ১ কেজি
- পেঁয়াজ (স্লাইস করে কাটা): ৫-৬টি
- রসুন বাটা: ১ টেবিল চামচ
- আদা বাটা: ১ টেবিল চামচ
- শুকনা মরিচ বাটা: ১ চা চামচ (স্বাদমতো)
- হলুদ গুঁড়ো: ১ চা চামচ
- ধনে গুঁড়ো: ১.৫ চা চামচ
- জিরা গুঁড়ো: ১ চা চামচ
- গরম মসলা গুঁড়ো: ১ চা চামচ (শেষে ছিটানোর জন্য)
- দারুচিনি: ২ টুকরো
- এলাচ: ৩টি
- তেজপাতা: ২টি
- লবণ: স্বাদ অনুযায়ী
- সরিষার তেল: আধা কাপ
- পানি: প্রয়োজনমতো
- কাঁচা মরিচ: ৪-৫টি
প্রস্তুত প্রণালী:
১. তেল গরম ও ফোড়ন: প্রথমে একটি কড়াইতে আধা কাপ সরিষার তেল গরম করে তাতে তেজপাতা, দারুচিনি ও এলাচ দিয়ে হালকা ভেজে নিন। এই ফোড়ন মাংসের সুঘ্রাণ বাড়াতে সাহায্য করবে।
২. পেঁয়াজ ভাজা: এরপর স্লাইস করা পেঁয়াজ দিয়ে সোনালি বাদামি হওয়া পর্যন্ত ভাজতে থাকুন। নানি-দাদিরা বলতেন, ধৈর্য ধরে পেঁয়াজ ভাজলেই সেই পুরনো দিনের আসল স্বাদ পাওয়া যায়।
৩. মসলা কষানো: পেঁয়াজ ভাজা হয়ে গেলে একে একে আদা বাটা, রসুন বাটা, শুকনা মরিচ বাটা, হলুদ গুঁড়ো, ধনে গুঁড়ো ও জিরা গুঁড়ো দিয়ে ভালোভাবে কষিয়ে নিন। মসলা থেকে তেল আলাদা না হওয়া পর্যন্ত কষাতে থাকুন। এটাই রান্নার মূল অংশ, যা মাংসের স্বাদকে বহুগুণ বাড়িয়ে তোলে।
৪. মাংস কষানো: মসলা কষানো হয়ে গেলে গরুর মাংস দিয়ে মাঝারি আঁচে ভালোভাবে নেড়েচেড়ে কষাতে শুরু করুন। মাংস থেকে যে পানি বের হবে, তাতেই ঢেকে দিন এবং মাঝে মাঝে নেড়েচেড়ে দিন যেন কড়াইয়ের নিচে লেগে না যায়।
৫. দমে রান্না: মাংস ভালোমতো কষানো হলে প্রয়োজন অনুযায়ী সামান্য পানি দিয়ে ঢাকনা দিয়ে দিন। চুলার আঁচ কমিয়ে ধীরে ধীরে রান্না হতে দিন। এভাবে দমে রান্না করলে মাংস একদম নরম হবে এবং ভুনা স্বাদটা চমৎকারভাবে মিশে যাবে।
৬. শেষের পরশ: মাংস সেদ্ধ হয়ে ঝোল ঘন হয়ে এলে গরম মসলা গুঁড়ো ও কাঁচা মরিচ ছিটিয়ে আরও ৫ মিনিট দমে রাখুন। এতে মাংসের সুঘ্রাণ পুরো রান্নাঘরে ছড়িয়ে পড়বে।
পরিবেশন:
এই সুস্বাদু গরুর মাংস ভুনা গরম পরোটা, রুটি, বা ধোঁয়া ওঠা সাদা ভাতের সাথে পরিবেশনের জন্য একেবারে উপযুক্ত। ঈদের সকালে রুটি বা পরোটার সাথে এই মাংস খেলে নানি-দাদিদের হাতের সেই পুরোনো দিনের স্মৃতিগুলো যেন জীবন্ত হয়ে ওঠে।