শিক্ষক নিয়োগে অনিয়ম পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে দীর্ঘমেয়াদি পঙ্গু করে ফেলছে বলে মন্তব্য করেছেন শিক্ষা উপদেষ্টা ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ।
তিনি বলেছেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষকদের লেজুড়বৃত্তিক দলীয় রাজনীতি, ছাত্ররাজনীতির নামে ক্ষমতার প্রদর্শনসহ নানা সমস্যা আছে। কিন্তু সবচেয়ে গুরুতর সমস্যা হয়েছে গত দেড় দশকে শিক্ষক নিয়োগে অনিয়ম। এ কারণে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো প্রাতিষ্ঠানিকভাবে পঙ্গু হওয়ার পথে রয়েছে।’
রোববার (২২ ডিসেম্বর) রাজধানীর প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলে ‘প্রথম বাংলাদেশ উচ্চশিক্ষা সম্মেলন ২০২৪’ এ প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। দৈনিক বণিক বার্তার আয়োজনে ‘উচ্চশিক্ষায় বৈশ্বিক মান: বাংলাদেশের করণীয়’ নিয়ে এ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়৷
শিক্ষা উপদেষ্টা বলেন, আমি যখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করতাম তখন শিক্ষক নিয়োগে নিয়মনীতি মানা হতো। কিন্তু গত কয়েক দশকে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে প্রভাষক নিয়োগের প্রচণ্ড অনিয়ম শুরু হয়েছে। শুধু দলীয়করণ নয়, দুর্বৃত্তায়ন উচ্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোকে পঙ্গু করে দিয়েছে।
ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেন, আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে এখনো অনেক শিক্ষক আছেন যারা আন্তর্জাতিক মানের উচ্চ পর্যায়ের গবেষক। আন্তর্জাতিক ওয়েবসাইটগুলোতে খুঁজলেই জানা যাবে তাদের গবেষণার সংখ্যা। পাশাপাশি তাদের গবেষণার সাইটেশনের সংখ্যাও উল্লেখযোগ্য যা নিয়ে আলোচনা আমাদের উচ্চশিক্ষা সংক্রান্ত আলোচনায় হতে দেখি না। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরে শুধু রাজনৈতিক আলাপ হয়, মেধাবী শিক্ষকরা আড়ালে পড়ে থাকেন। কেন তাদের আড়ালে থাকা বা কোণঠাসা হয়ে থাকা তা জানতে হবে।
সরকারি এবং বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয় শিক্ষা এবং গবেষণা বাড়ানো দরকার জানিয়ে উপদেষ্টা বলেন, ‘পূর্ববর্তী সময়ে দেশের শিক্ষাঙ্গনে নানান সংকট সৃষ্টি হয়েছে। এখানে রীতিমতো দুর্বৃত্তায়ন করা হয়েছে। আমরা সেগুলো বন্ধ করতে কাজ করছি, সেজন্য আমরা উপাচার্যসহ অন্যান্য নিয়োগের ক্ষেত্রে যোগ্য ব্যক্তিদের নিয়ে আসছি।’
দেশের বাইরে থাকা ভালো শিক্ষক এবং গবেষকদের ফিরিয়ে আনতে কাজ করা হচ্ছে জানিয়ে ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেন, ‘এটা বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর জন্য একটি বড় সুযোগ হবে। রিভার্স ব্রেইন ড্রেন হতে পারে। সে জন্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর শীর্ষ কর্তা-ব্যক্তিদের শিক্ষা গবেষণায় ভালো কাজ করতে হবে।’