রবিবার ২৭ জুলাই, ২০২৫

যুদ্ধবিমান বিধ্বস্তে নিহত কুমিল্লার মাহতাবের কবরে বিমান বাহিনীর শ্রদ্ধা

ছবি: সংগৃহীত

মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে মর্মান্তিক বিমান দুর্ঘটনায় নিহত সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থী মাহতাব রহমান ভূঁইয়ার কবর জিয়ারত ও তাঁর প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেছে বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর একটি প্রতিনিধি দল।

আজ রোববার (২৭ জুলাই) দুপুরে উইং কমান্ডার মো. আতিক হাসানের নেতৃত্বে বিমান বাহিনী প্রধানের পক্ষে এই প্রতিনিধি দলটি কুমিল্লার দেবিদ্বারের চুলাশ ভূঁইয়া বাড়িতে মাহতাবের গ্রামের বাড়িতে আসে।

প্রতিনিধি দলটি নিহত মাহতাবের সমাধিতে শ্রদ্ধার্ঘ্য অর্পণ করে। এ সময় উপস্থিত ছিলেন উইং কমান্ডার মো. আতিক হাসান এবং মাহতাবের বাবা মো. মিনহাজুর রহমান ভূঁইয়া।

কবর জিয়ারতের পর উইং কমান্ডার আতিক হাসান সাংবাদিকদের জানান, “আমরা বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর প্রধানের প্রতিনিধি হিসেবে মাহতাব ভূঁইয়ার কবর জিয়ারতে এসেছি এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের পাশে দাঁড়াতে এসেছি।” তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ বিমান বাহিনী এই দুর্ঘটনায় গভীরভাবে শোকাহত। তাঁরা নিহতদের আত্মার মাগফিরাত এবং আহতদের দ্রুত সুস্থতা কামনা করেছেন।

তিনি এটিকে একটি পরিবারের অপূরণীয় ক্ষতি হিসেবে উল্লেখ করেন এবং জানান যে দুর্ঘটনার তদন্ত চলমান রয়েছে। তদন্ত শেষ হলে আইএসপিআর (আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর) বিস্তারিত ব্যাখ্যা প্রদান করবে।

মাহতাবের বাবা মো. মিনহাজুর রহমান ভূঁইয়া দেশবাসীর প্রতি গভীর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন, “সারা দেশের মানুষ আমার সন্তানের জন্য দোয়া করেছে, আমি সবার প্রতি কৃতজ্ঞ। আমি চাই আমার ছেলে যেন শহীদের মর্যাদা পায় – এই দোয়া করি।”

উল্লেখ্য, গত ২১ জুলাই বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর একটি যুদ্ধবিমান রাজধানীর উত্তরার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের স্কুল ভবনে বিধ্বস্ত হয়। এই মর্মান্তিক ঘটনায় মাহতাব সহ আরও অনেকে গুরুতর আহত হন। দুর্ঘটনার পরপরই সেনাবাহিনীর সদস্যরা আহতদের উদ্ধারে এগিয়ে আসেন। মাহতাবকে উদ্ধার করে প্রথমে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরে তার অবস্থার অবনতি হলে জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের আইসিইউতে ভর্তি করা হয়। তার শরীরের প্রায় ৭০ শতাংশ দগ্ধ হয়েছিল। তাঁর অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের চতুর্থ তলার আইসিইউতে নিবিড় পরিচর্যায় রাখা হয়েছিল। বৃহস্পতিবার (২৪ জুলাই) মাহতাবের মৃত্যু হয় এবং সেদিন রাতেই দেবিদ্বারের চুলাশ গ্রামে পারিবারিক কবরস্থানে তাঁকে দাফন করা হয়।

মাহতাব মাইলস্টোন স্কুলের ইংলিশ ভার্সনে সপ্তম শ্রেণিতে পড়ত। তার শিক্ষার্থী কোড নম্বর ছিল ১০১৪। প্রতিদিন তার বাবা নিজেই তাকে স্কুলে আনা-নেওয়া করতেন। দুর্ঘটনার সময়ও তিনি স্কুলের কাছেই ছিলেন। তিন ভাই-বোনের মধ্যে মাহতাব ছিল দ্বিতীয়। তার বড় বোন নাবিলা মাইলস্টোন স্কুলের দশম শ্রেণির ছাত্রী এবং ছোট বোন নাইসার বয়স মাত্র ৩ বছর। পরিবারটি ঢাকার উত্তরায় বসবাস করত।

আরও পড়ুন