
মাইগ্রেন কেবল একটি সাধারণ মাথাব্যথা নয়, এটি এক ধরনের তীব্র ও কষ্টদায়ক স্নায়বিক অবস্থা যা একবার শুরু হলে ৭২ ঘণ্টা পর্যন্ত স্থায়ী হতে পারে। সাধারণ মাথাব্যথার চেয়ে এর লক্ষণগুলো অনেক বেশি তীব্র – যেমন চোখে ঝাপসা দেখা, বমি বমি ভাব এবং আলো বা শব্দের প্রতি তীব্র সংবেদনশীলতা।
বিশেষজ্ঞদের মতে, মাইগ্রেন নিয়ন্ত্রণে রাখতে দৈনন্দিন জীবনযাত্রা ও খাদ্যাভ্যাসে শৃঙ্খলা আনা অত্যন্ত জরুরি। অনেক সময় নারীরা মাসিক চলাকালীন বা গর্ভাবস্থায় মাইগ্রেনের ব্যথায় বেশি ভুগে থাকেন। অতিরিক্ত মদ্যপান, চকলেট বা ক্যাফেইন জাতীয় খাবার মাইগ্রেনের ব্যথাকে আরও বাড়িয়ে দিতে পারে।
মাইগ্রেন কমাতে যা করবেন:
- শরীরকে হাইড্রেটেড রাখুন: মাইগ্রেন শুরু হলে শান্ত ও অন্ধকার একটি ঘরে বিশ্রাম নিন। চোখে আইসপ্যাক দিলে মাথাব্যথা ও চোখের অস্বস্তি কিছুটা কমতে পারে। দিনে পর্যাপ্ত পানি পান করে শরীরকে পানিশূন্যতা থেকে বাঁচান।
- পর্যাপ্ত ঘুম নিশ্চিত করুন: রাতে কমপক্ষে ৮ ঘণ্টা ভালো ঘুম হওয়া অত্যন্ত জরুরি। দিনেরবেলায় না ঘুমিয়ে রাতে গভীর ঘুম নিশ্চিত করার চেষ্টা করুন। যদি ঘুম না আসে, তবে বই পড়ুন বা কোনো শিথিল করার মতো কাজ করুন।
- মানসিক চাপ কমান: মানসিক চাপ মাইগ্রেনের ব্যথাকে অনেক বাড়িয়ে দিতে পারে। দুশ্চিন্তা কমাতে শ্বাস-প্রশ্বাসের ব্যায়াম, গল্পের বই পড়া বা পছন্দের কোনো কাজে সময় কাটাতে পারেন।
- নিয়মিত শরীরচর্চা করুন: প্রতিদিন হালকা ব্যায়াম বা হাঁটা শরীরকে সুস্থ রাখে, রক্ত সঞ্চালন বাড়ায় এবং মাইগ্রেনের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে। এটি ওজন নিয়ন্ত্রণেও সহায়ক।
যেগুলো এড়িয়ে চলবেন:
- খালি পেটে থাকবেন না: দীর্ঘক্ষণ খালি পেটে থাকা মাইগ্রেনের কারণ হতে পারে।
- বাইরের তৈলাক্ত ও মশলাদার খাবার: অতিরিক্ত তৈলাক্ত বা মশলাদার খাবার পরিহার করুন।
- নির্দিষ্ট কিছু খাবার: পনির, চকলেট বা ক্যাফেইন জাতীয় খাবার অতিরিক্ত পরিমাণে খাওয়া থেকে বিরত থাকুন, কারণ এগুলো মাইগ্রেন ট্রিগার করতে পারে।
মাইগ্রেন সম্পূর্ণভাবে নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন মনে হলেও, কিছু নিয়ম মেনে চললে এবং দৈনন্দিন অভ্যাসে পরিবর্তন আনলে এই ব্যথা অনেকটাই কমিয়ে আনা সম্ভব। তবে, যদি ঘন ঘন এবং তীব্র ব্যথা অনুভব করেন, তবে দেরি না করে অবশ্যই একজন চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
সূত্র: ওয়ান ইন্ডিয়া