
সৌদি আরব সরকার একটি যুগান্তকারী নতুন আইনের পরিকল্পনা করছে, যার আওতায় ২০২৬ সাল থেকে বিদেশি ব্যক্তি ও কোম্পানি দেশটিতে সম্পত্তি ক্রয় করতে পারবে।
এই পদক্ষেপ সৌদি আরবের উচ্চাকাঙ্ক্ষী ‘ভিশন ২০৩০’-এর একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ, যার লক্ষ্য তেল-নির্ভর অর্থনীতি থেকে বেরিয়ে এসে একটি বৈচিত্র্যময় ও বিনিয়োগবান্ধব রাষ্ট্রে রূপান্তরিত হওয়া।
প্রাথমিকভাবে, রিয়াদ ও জেদ্দাসহ আরও কিছু নির্দিষ্ট শহরে বিদেশিদের জন্য সম্পত্তি কেনার অনুমোদন দেওয়া হবে। এই শহরগুলোর বিস্তারিত তালিকা পরবর্তীতে প্রকাশ করা হবে। তবে, মক্কা ও মদিনার মতো ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ শহরগুলোতে বাড়ি কেনার জন্য বিশেষ অনুমোদনের প্রয়োজন হবে।
নতুন এই আইন ২০২৬ সালের জানুয়ারি মাস থেকে কার্যকর হওয়ার কথা রয়েছে। এর আগে, ‘ইস্তিতা’ (Istitah) নামক একটি ওয়েবসাইটে আগামী ১৮০ দিনের মধ্যে এই সংক্রান্ত নিয়মাবলী এবং অনুমোদিত এলাকার একটি প্রাথমিক তালিকা প্রকাশ করা হবে এবং জনগণের মতামত চাওয়া হবে।
কারা সম্পত্তি কিনতে পারবে?
নতুন নিয়মের অধীনে বিদেশি ব্যক্তি এবং কোম্পানি উভয়ই সৌদি আরবে জমি ও বাড়ি কিনতে পারবে। বিশেষ করে, যারা বাণিজ্যিক বা আবাসিক প্রকল্পে বিনিয়োগ করতে আগ্রহী, তাদের জন্য এটি একটি দারুণ সুযোগ।
এই আইনের মূল উদ্দেশ্যগুলো কী?
- বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণ: সৌদি আরবে বিদেশি মূলধন আকৃষ্ট করা।
- মেগা প্রকল্পগুলোকে সহায়তা: রিয়াদ, জেদ্দা এবং নিওম (NEOM) এর মতো বৃহৎ প্রকল্পগুলোর বাস্তবায়নে সহায়তা করা।
- আবাসন ও বাণিজ্যিক ভবনের সরবরাহ বৃদ্ধি: দেশের আবাসন ও বাণিজ্যিক খাতের চাহিদা পূরণ করা।
- সৌদি নাগরিকদের স্বার্থ রক্ষা: বিদেশি বিনিয়োগের পাশাপাশি সৌদি নাগরিকদের অধিকার ও স্বার্থ নিশ্চিত করা।
- মধ্যপ্রাচ্যের নতুন বিনিয়োগ কেন্দ্র: দুবাই, আবুধাবি এবং দোহার মতো শহরগুলোর পাশাপাশি রিয়াদ ও জেদ্দাকে মধ্যপ্রাচ্যের অন্যতম প্রধান বিনিয়োগ কেন্দ্রে পরিণত করা।
বিনিয়োগকারীদের জন্য পরামর্শ:
- ‘ইস্তিতা’ প্ল্যাটফর্মে নিয়মিত নজর রাখুন। এখানে নতুন নিয়মনীতি এবং অনুমোদিত এলাকা সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য প্রকাশিত হবে।
- বিভিন্ন ডেভেলপারদের প্রকল্পগুলো পর্যবেক্ষণ করুন, বিশেষ করে যারা নতুন অনুমোদিত অঞ্চলে কাজ শুরু করবে।
- ২০২৫ সালের শেষ নাগাদ এই আইনের বিস্তারিত নিয়মাবলী প্রকাশিত হবে।
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই নতুন আইন সৌদি আরবকে মধ্যপ্রাচ্যের একটি অন্যতম ‘বিনিয়োগ হটস্পট’-এ পরিণত করবে, যা আঞ্চলিক অর্থনীতিতে এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে।
সূত্র: গালফ নিউজ, মিডল ইস্ট আই