মে ১৩, ২০২৫

মঙ্গলবার ১৩ মে, ২০২৫

বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় অচল: উপাচার্যের অপসারণ দাবিতে দক্ষিণবঙ্গ ব্লকেডের ঘোষণা

ছবি: সংগৃহীত
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. শূচিতা শরমিনের পদত্যাগের দাবিতে আগামীকাল (মঙ্গলবার) দক্ষিণবঙ্গ অচল করে দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা। তাদের এই আন্দোলনে সংহতি জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা।
সোমবার (১২ই মে) দুপুর দেড়টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রান্ডফ্লোরে শিক্ষক-শিক্ষার্থী-কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের এক অবস্থান কর্মসূচি থেকে এই অবরোধের ঘোষণা আসে।
বিক্ষোভকালে শিক্ষার্থীরা বলেন, উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে আজ ২৮তম দিনে তারা ব্লকেড কর্মসূচিতে যেতে বাধ্য হয়েছেন। তারা অভিযোগ করেন, বারবার রাষ্ট্রপক্ষকে জানানোর পরেও কোনো সাড়া মেলেনি। শিক্ষার্থীরা আরও বলেন, যদি সাধারণ মানুষের দুর্ভোগ হয়, তার জন্য কর্তৃপক্ষই দায়ী থাকবে। তারা স্পষ্ট ভাষায় জানান, আগামীকাল দুপুর ১টা ৫৯ মিনিটের মধ্যে যদি উপাচার্য শূচিতা শরমিনকে অপসারণ করা না হয়, তবে তারা দক্ষিণবঙ্গ অচল করে দেবেন।
আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী রাকিন খান বলেন, আপনারা জানেন, আমরা গত ৪ঠা মে এক দফা কর্মসূচি ঘোষণা করেছি। পরবর্তীতে আমরা ধীরে ধীরে কঠোর কর্মসূচির দিকে এগোচ্ছি। শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা সবাই আমাদের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করেছেন এবং ইতোমধ্যে একাডেমিক শাটডাউন দেওয়া হয়েছে। আমরা যেই আকাঙ্ক্ষা নিয়ে আন্দোলন করছি, সেটা শান্তিপূর্ণভাবেই করছি। কিন্তু কর্তৃপক্ষ আমাদের সেইভাবে সাড়া দিচ্ছে না।আমরা আগেই ঘোষণা দিয়েছিলাম, প্রয়োজন হলে কঠোর পদক্ষেপ নিতে বাধ্য হবো। সেই জায়গা থেকেই আমরা আগামীকাল ‘দক্ষিণবঙ্গ ব্লকেড’ কর্মসূচি পালন করতে যাচ্ছি। যদিও আমরা এটা করতে চাই না—আমাদের চাই না সাধারণ মানুষের কষ্ট হোক।আমরা চাই, আমাদের দেওয়া ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটামের মধ্যে কর্তৃপক্ষ যেন একটি সমাধান দেয়। তাহলে শান্তিপূর্ণ পরিবেশেই সমস্যার সমাধান সম্ভব হবে।
আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী মোশাররফ হোসেন বলেন, আমরা এতদিন শান্তিপূর্ণভাবে আমাদের দাবি-দাওয়া জানিয়ে আসছিলাম, এমনকি এক দফা দাবিও শান্তিপূর্ণভাবে উপস্থাপন করেছি। কিন্তু বাস্তবে দেখা যাচ্ছে, কর্তৃপক্ষ আমাদের দাবিগুলোর প্রতি কোনো কর্ণপাত করছে না। এই পরিস্থিতির প্রেক্ষিতে, আমরা বিশ্ববিদ্যালয় পরিবার আগামীকাল দুপুর ২টা পর্যন্ত সময় বেঁধে দিয়েছি। আগামীকাল দুপুর ২টার মধ্যে যদি আমাদের দাবিগুলো মেনে না নেওয়া হয়, তবে আমরা পূর্বঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী দক্ষিণাঞ্চলসহ সারাদেশ অচল করে দেব।
বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকর্ম বিভাগের প্রভাষক মুস্তাকিম বিল্লাহ বলেন, “আমরা শিক্ষার্থীদের সকল যৌক্তিক আন্দোলনের সাথে একাত্মতা পোষণ করছি।”
কোস্টাল স্টাডিজ অ্যান্ড ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট বিভাগের চেয়ারম্যান ও সহযোগী অধ্যাপক ড. হাফিজ আশরাফুল হক বলেন, “এই বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবারের শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা, কর্মচারী উপাচার্যের স্বৈরাচারী মনোভাবের কারণে কেউই ভালো নেই। এই ফ্যাসিস্ট মনোভাবের স্বৈরাচারী ভিসি যদি বহাল থাকেন, তাহলে এই বিশ্ববিদ্যালয় ধ্বংস হয়ে যাবে। এই বিশ্ববিদ্যালয়কে রক্ষার স্বার্থে আমরা শিক্ষকরা শিক্ষার্থীদের এই যৌক্তিক আন্দোলনে একাত্মতা প্রকাশ করে তাদের পাশে আছি।”
আরও পড়ুন