মে ১৪, ২০২৫

বুধবার ১৪ মে, ২০২৫

ববি উপাচার্য ড. শুচিতা শরমিনকে তার পদ থেকে অব্যাহতি

ছবি: সংগৃহীত

দীর্ঘ ২৯ দিন ধরে চলছিল শিক্ষার্থীদের উপাচার্যবিরোধী আন্দোলন। শিক্ষার্থীদের ব্যাপক আন্দোলন, আমরণ অনশন এবং মহাসড়ক অবরোধের মুখে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. শুচিতা শরমিনকে অব্যাহতি দিয়েছে সরকার।

গতকাল (মঙ্গলবার) রাতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের একটি প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে তাকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। একই সঙ্গে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মো. তৌফিক আলমকে অন্তর্বর্তীকালীন উপাচার্য হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

শিক্ষার্থীদের লাগাতার কর্মসূচি, মহাসড়ক অবরোধ, উপাচার্যের বাসভবনে তালা দেওয়া এবং একাডেমিক ও প্রশাসনিক শাটডাউনের ফলে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে অচলাবস্থা সৃষ্টি হয়। সোমবার রাত থেকে শুরু হওয়া অনশনে ১১ জন শিক্ষার্থী অংশ নেন, যাদের মধ্যে ৫ জন ইতোমধ্যে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। অসুস্থদের মধ্যে রয়েছেন ম্যানেজমেন্ট বিভাগের রবিউল ইসলাম, আইন বিভাগের ওয়াহিদুর রহমান ও শওকত ওসমান স্বাক্ষর, সিএসই বিভাগের রায়হান এবং ইমন হাওলাদার।

মঙ্গলবার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব এ এস এম কাশেম স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়। অপর এক প্রজ্ঞাপনে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মো. তৌফিক আলমকে নতুন উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, মহামান্য রাষ্ট্রপতি ও চ্যান্সেলরের অনুমোদনক্রমে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় আইন, ২০০৬-এর ১০(২) ধারা এবং মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের ২৩.০৯.২০২৪ তারিখের ৩৭.০০.০০০০.০৭৯.২৫.১৯১.১১-২৯২ নম্বর প্রজ্ঞাপনের (৬) নং শর্ত অনুযায়ী বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস-চ্যান্সেলর ড. শুচিতা শরমিন, অধ্যাপক, ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে ভাইস-চ্যান্সেলর পদ থেকে অব্যাহতি দিয়ে তার মূল পদে যোগদানের অনুমতি প্রদান করা হলো। এ আদেশ অবিলম্বে কার্যকর হবে।

আন্দোলনরত শিক্ষার্থী সুজয় শুভ বলেন, “উপাচার্যকে আমরা ক্যাম্পাসে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেছি। তিনি আন্দোলনের এতদিনেও আমাদের সঙ্গে কথা বলেননি, অথচ সোমবার রাতে ফেসবুক লাইভে এসে কথা বলেন। আমরা এমন একজন ফ্যাসিস্ট ভিসি চাই না।”

মোকাব্বেল শেখ নামে এক অনশনকারী বলেন, “আমরা যৌক্তিক দাবিতে আমরণ অনশনে বসেছিলাম। আজ তা বাস্তবে রূপ নিয়েছে।”

চলমান আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরাও একাত্মতা প্রকাশ করেন। বরিশাল-কুয়াকাটা মহাসড়কে অবরোধের ফলে যানবাহন আটকে পড়ে এবং সাধারণ যাত্রীরা চরম ভোগান্তিতে পড়েন। শিক্ষার্থীরা বলেন, এটি শুধুমাত্র একটি প্রশাসনিক পরিবর্তন নয়, এটি দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের দীর্ঘদিনের প্রত্যাশার একটি জয়।

উল্লেখ্য, একইসঙ্গে ভিন্ন দুটি প্রজ্ঞাপনে উপ-উপাচার্য ড. গোলাম রাব্বানী এবং ট্রেজারার ড. মামুন অর রশিদকেও অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।

আরও পড়ুন