‘বঙ্গবন্ধুর বাংলায় বৈষম্যের ঠাঁই নাই; মেধা যার মেধা যার, চাকরি তার চাকরি তার; মুক্তিযুদ্ধের মূলকথা সুযোগে সমতা; স্বাধীনতার মূলকথা সুযোগে সমতা; কোটা প্রথা নিপাত যাক, মেধাবীরা মুক্তি পাক’।
আজ বৃহস্পতিবার বিকালে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় (কুবি) শিক্ষার্থীদের মুখে মুখে এসব স্লোগানে উত্তাল হয়ে উঠে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কোটবাড়ি বিশ্বরোড এলাকা। দ্বিতীয়বারের মতো চলমান এ আন্দোলনে বিভিন্ন শিক্ষাবর্ষের প্রায় সহস্রাধিক শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করেন।
কোটাবিরোধী এ আন্দোলনের নাম দেওয়া হয়- ‘বাংলা ব্লকড’। বিকেল সাড়ে তিনটা থেকে শুরু হওয়া এ আন্দোলন এখনো চলমান রেখেছেন শিক্ষার্থীরা। চার লেন মহাসড়কের দু’পাশ বন্ধ করে দেওয়ায় ওই এলাকাজুড়ে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত ওই যানজট প্রায় ১৫ থেকে ২০ কিলোমিটার এলাকায় ছাড়িয়েছে। এতে করে ভোগান্তিতে পড়েছেন বিভিন্ন যানবাহনের চালক ও যাত্রীরা।
আইসিটি বিভাগের শিক্ষার্থী মহি উদ্দিন বলেন, ‘বাংলাদেশে চাকরির বাজার খুবই প্রতিযোগিতামূলক। তার উপর সরকারি চাকরি পাওয়া যেন সোনার হরিণ কাছে পাওয়া। শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে ২০১৮ সালের সরকারের একটি পরিপত্রে ১ম ও ২য় শ্রেনির চাকরিতে সব কোটা বাতিল ঘোষনা করে।
কিন্তু সম্প্রতি হাইকোর্টের একটি রায়ে ওই পরিপত্রটি অবৈধ ঘোষণার পর পর কোটা আন্দোলন আবারো মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। বর্তমানে সরকারি বিভিন্ন দফতরে মেধাবীদের সংখ্যা খুবই কম। বিভিন্ন কোটাধারি ব্যক্তি নিয়োগ পেয়ে বর্তমানে এসকল খাতকে দুর্নীতির চরম পর্যায়ে নিয়ে গিয়েছে।
যা সাম্প্রতিক কিছু ঘটনা পর্যবেক্ষন করলে বুঝা যায়। এজন্য বাংলার অপাময় ছাত্রসমাজ মেধার ভিত্তিতে নিয়োগ চায়। যাতে করে বর্তমান সরকারের স্বপ্নের সোনার বাংলা তৈরিতে সহায়তা করতে পারি।
এর আগে গতকাল শনিবার (৬ জুলাই) রাত সাড়ে আটটায় কোটা পুনর্বহালের প্রতিবাদে মশাল মিছিল বের করেন কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) শিক্ষার্থীরা। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকে সংক্ষিপ্ত বক্তব্য প্রদান করে বিভিন্ন শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীরা।
এছড়াও গত বৃহস্পতিবার সরকারি চাকরিতে কোটাবিরোধী আন্দোলনের অংশ হিসেবে প্রায় তিন ঘণ্টা ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করেন শিক্ষার্থীরা। পরে জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার বরাবর চার দফা দাবি উত্থাপন করে মহাসড়ক ত্যাগ করেন কুবি শিক্ষার্থীরা।
জানতে চাইলে সদর দক্ষিণ সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার এমরানুল হক মারুফ বলেন, আমরা সকল ধরনের পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছি যাতে কোন ধরনের সমস্যা না হয়। আমরা উপরের মহলের সাথে কথা বলছি সেখান থেকে যে ধরনের নির্দেশ আসবে আমরা সেভাবে কাজ করবো।
সদর দক্ষিণের ইউএনও রুবাইয়া খানম বলেন, আমরা কিছুক্ষণ পর তাদের শান্ত করার চেষ্টা করবো। অন্তত রাস্তার একসাইড যেন ছেড়ে দেয়। তারপর তারা না মানলে এজিএম স্যার আসবেন৷ তারপরও না মানলে ডিসি স্যার আসবেন।