ডিসেম্বর ৫, ২০২৪

বৃহস্পতিবার ৫ ডিসেম্বর, ২০২৪

ফেসবুক-ইউটিউবে গুজব কনটেন্ট প্রতিরোধে সরকারকে ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান

RisingCumilla.Com - Youtube-Facebook
ছবি: সংগৃহীত

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক ও ইউটিউবে গুজব ও উসকানিমূলক কনটেন্ট ছড়ানো বন্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ মুঠোফোন গ্রাহক অ্যাসোসিয়েশন। এসব প্রচেষ্টা বর্তমান সামাজিক-রাজনৈতিক অস্থিরতা কমাতে এবং অর্থনীতিতে এর ক্ষতিকর প্রভাব কমাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে বলে মনে করে সংগঠনটি।

এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে সংগঠনের সভাপতি মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, “আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেয়। এরপর থেকেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিশেষ করে ফেসবুক ও ইউটিউবে দেশের অভ্যন্তরে এবং বিদেশ থেকে নানা গুজব প্রচারিত হচ্ছে। এসব গুজব এবং উসকানিমূলক কনটেন্ট রাষ্ট্রে অস্থিরতা ও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করছে। ফলে প্রতিদিনই বাড়ছে সামাজিক অস্থিরতা। যা দেশের ব্যবসা-বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক বিকাশের জন্য বিনিয়োগকে বাধার মুখোমুখি করছে।”

তিনি আরও বলেন, “এই পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের জন্য ফেসবুক ও ইউটিউবে উসকানিমূলক কনটেন্ট প্রতিরোধে সরকারকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানাই। তাছাড়া আমাদের প্রতিবেশী রাষ্ট্রের কিছু সংবাদমাধ্যমও ইউটিউব চ্যানেলে উসকানিমূলক ভিত্তিহীন সংবাদ প্রচার করছে। যা রাষ্ট্রের নিরাপত্তা ও শৃঙ্খলা জন্য অন্তরায়। তাই সরকারের উচিত এসব কন্টেন্ট বন্ধ করতে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া।”

বিবৃতিতে মহিউদ্দিন আহমেদ বেশকিছু পদক্ষেপ গ্রহণে সরকারের জন্য পরামর্শও তুলে ধরেন। সেগুলো হচ্ছে-

সচেতনতামূলক প্রচার
শিক্ষা ও প্রচার: স্কুল, কলেজ ও মিডিয়া সংস্থাগুলোর উচিত জনগণকে মিথ্যা তথ্য শনাক্ত করতে শেখানো।

ডিজিটাল সাক্ষরতা কর্মসূচি: তথ্য যাচাই এবং উৎস ক্রস-চেক করতে লোকদের প্রশিক্ষণ দেওয়া।

নির্ভরযোগ্য তথ্য সূত্র
সরকারি তথ্য সূত্র: গুরুত্বপূর্ণ তথ্যের সময়মতো ও সঠিক প্রচার নিশ্চিত করা।

ফ্যাক্ট চেকিং প্লাটফর্ম: ভুল তথ্য প্রতিরোধে স্বাধীন ও সরকার সমর্থিত সিস্টেম প্রতিষ্ঠা করা।

দ্রুত প্রতিক্রিয়ার ব্যবস্থা
বিশেষায়িত দল: ভুল তথ্য শনাক্ত ও প্রতিহত করার জন্য একক ইউনিট মোতায়েন করা।

হটলাইন ও রিপোর্টিং সিস্টেম: নাগরিকদের সন্দেহজনক কন্টেন্ট সহজে রিপোর্ট করার সুযোগ দেওয়া।

মিডিয়ার দায়িত্বশীলতা
যাচাই করে সংবাদ প্রকাশ: গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠান বা সংস্থাগুলোর ভালোভাবে তথ্য পর্যালোচনা করে সংবাদ প্রকাশ নিশ্চিত করা।

সচেতনতামূলক প্রচার: নিয়মিত অনুষ্ঠানগুলোর মাধ্যমে ভুল তথ্য চিহ্নিত করার পদ্ধতি প্রচার করা।

সর্ব সাধারণের অংশগ্রহণ
সামাজিক দায়িত্ববোধ উদ্যোগ: গুজব মোকাবিলায় কমিউনিটি নেতাদের ও ধর্মীয় সংগঠনগুলোকে যুক্ত করা।

পরিবারের সচেতনতা: পরিবারে আলোচনার মাধ্যমে সচেতনতা সৃষ্টি করে ব্যক্তিদের দায়িত্বশীল অনলাইন আচরণে শিক্ষিত করা।

প্রযুক্তিগত নজরদারি
এআই ও অ্যালগরিদম: ভুল তথ্য ছড়ানোর প্রবণতা শনাক্ত করতে উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার করা।

অ্যাপস ডেডিকেটেড: মিথ্যা তথ্য শনাক্ত এবং প্রতিরোধ করার জন্য প্ল্যাটফর্ম তৈরি করা।

আইনগত সংস্কার
বর্ধিত আইনি কাঠামো: ভুল তথ্যের বিরুদ্ধে বিদ্যমান আইনগুলোকে আরও কার্যকর করতে নীতিমালা প্রবর্তন করা।

যৌথ প্রচেষ্টা
ভুল তথ্য মোকাবিলায় সরকার, বিটিআরসি ও এনটিএমসির মতো নিয়ন্ত্রক সংস্থা, মোবাইল নেটওয়ার্ক অপারেটর, ইন্টারনেট পরিষেবা সরবরাহকারী এবং অন্যান্য স্টেকহোল্ডারদের সম্মিলিত পদক্ষেপেরে ওপর জোর দিয়েছে সংগঠনটি।

তারা সচেতনতা বৃদ্ধি এবং সামাজিক সম্প্রীতি রক্ষা করতে সরকারি ও বেসরকারি খাতের অংশগ্রহণের আহ্বান জানিয়েছে।