সোমবার ১৪ জুলাই, ২০২৫

নোয়াখালীতে বন্যা: আউশ ও আমন ধানের পাশাপাশি সবজিরও ব্যাপক ক্ষতি

Rising Cumilla -Floods in Noakhali Extensive damage to vegetables as well as Aus and Aman rice
ছবি: প্রতিনিধি

নোয়াখালীতে টানা বৃষ্টি ও ফেনী মহুরী নদী থেকে আসা পানিতে নোয়াখালীতে আউশ ধান, আমনের বীজতলা এবং গ্রীষ্মকালীন ও শরৎকালীন শাকসবজির ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। ক্ষেতে পানি জমে দেখা দিয়েছে গোড়া পচাসহ বিভিন্ন রোগবালাই। কৃষকরা বলছে, এতে বাজারে আমন ধানের বীজের দাম বেড়েছে। বড় ধরণের লোকসানের মুখে পড়েছেন প্রান্তিক চাষীরা।

জুলাই মাসের ৭ তারিখে জেলায় মুষলধারে বৃষ্টিপাত শুরু হয়। এরপর টানা ৪দিনের বৃষ্টিতে জেলার ছয়টি উপজেলার ৫৭টি ইউনিয়নে তীব্র জলাবদ্ধতা দেখা দেয়। এতে আউশের খেত ও আমন ধানের বীজতলা পানির নিচে তলিয়ে রয়েছে। আউশের খেত ও আমনের বীজতলা তলিয়ে যাওয়ায় হুমকির মুখে পড়বে কৃষকরা। ফলে উপজেলার আউশের খেত ও আমনের বীজতলা ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

সুবর্ণচরের কৃষক নজরুল ইসলাম বলেন, চারদিক পানির নিচে ডুবে থাকায় নতুন করে বীজতলা তৈরি করার মতো উঁচু জায়গা খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। অনেকে উঁচু জায়গা আমনের বীজতলা করার জন্য ভাড়া নিচ্ছে। কিন্ত পুঁজির অভাবে নতুন করে বীজতলা তৈরি করতে হিমশিম খাচ্ছে কৃষকেরা। দ্রুত পানি না নামলে আউশ, আমন চাষের লক্ষ্যমাত্রা ব্যাহত হওয়ার হবে।

কোম্পানীগঞ্জের কৃষক আমির হোসেন বলেন, আকষ্মিক এমন দুর্যোগের মুখে পড়ে দিশেহারা কৃষক। ফলন্ত সবজিরে মাঠ পানিতে শেষ হয়ে যাওয়ায় দায়দেনা পরিশোধের চিন্তায় দিশেহারা কৃষক। ঘুরে দাঁড়ানোর জন্য সরকারের পক্ষ থেকে দ্রুত আমাদের সহায়তা প্রয়োজন।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জানায়, জেলায় মোট পাঁচ হাজার ১৯৯ হেক্টর জমির ফসল পানিতে আক্রান্ত আবস্থায় আছে। এরমধ্যে ৮৯১ হেক্টর আমনের বিজতলা, ২ হাজার ৫শ হেক্টর আউশের বীজতলা, ১ হাজার ২শ হেক্টর গ্রীষ্মকালীন সবজি, ৫৭৫ হেক্টর শরৎকারীন সবজি নিমজ্জিত অবস্থায় আছে।

জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, এখনো জেলার ছয়টি উপজেলার ৫৭ টি ইউনিয়ন জলবদ্ধতার কবলে রয়েছে। এখনো পানিবন্দী হয়ে রয়েছে প্রায় ২৪৯৫০টি পরিবার। ক্ষতির শিকার হয়েছে প্রায় ৯০ হাজার ৪০৩ জন মানুষ। বিভিন্ন উপজেলা পায়ের ৫৮ টি বাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে জলাবদ্ধতায়।বর্তমানে ২৭ টি আশ্রয় কেন্দ্রে প্রায় ১০২৩ জন মানুষ রয়েছে। ২৯ টি মেডিকেল টিম মাঠে কাজ করছে।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ড. মীরা রানী দাস বলেন, কবিরহাট, সুবর্ণচর ও সদর উপজেলায় বীজতলা ও সবজি আক্রান্তের হার অপেক্ষাকৃত বেশি। সেনবাগ এবং সুবর্ণচরের তুলনায় কবিরহাট উপজেলায় পানি স্থথ গতিতে সরছে। পানি সরে গেলে ক্ষতির পরিমাণ কমে আসবে। কৃষি বিভাগের কর্মকর্তা কর্মচারীরা সার্বক্ষণিক মাঠ পর্যায়ে থেকে কৃষকদের ফসল যাতে রক্ষা করা যায়। এ বিষয়ে তাদেরকে বুদ্ধি পরামর্শ দিয়ে হচ্ছে।

আরও পড়ুন