
কুমিল্লার চান্দিনা উপজেলার বিভিন্ন এলাকার কৃষকরা চরম বিপাকে পড়েছেন। চলতি মৌসুমের পাকা আউশ ধান ঘরে তুলতে গিয়ে তারা পড়েছেন চরম দুশ্চিন্তায়। অতিরিক্ত বৃষ্টিপাত ও শ্রমিক সংকট (কামলার অভাব) মিলিয়ে অনেক ক্ষেতের ধান জমিতেই নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।
উপজেলার বাড়েরা, মহিচাইল, মাইজখার, বেলাশহর, গল্লাই সহ বেশ কয়েকটি এলাকায় মাঠজুড়ে পাকা আউশ ধান পানিতে তলিয়ে যাওয়ার উপক্রম হয়ে গেছে। টানা বৃষ্টির কারণে জমিতে পানি জমে থাকায় ধান কাটা ও মাড়াইয়ের কাজ ব্যাহত হচ্ছে। আবার অনেক ক্ষেত্রেই ধান পড়ে গিয়ে গাছ পচে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।
স্থানীয় কৃষকরা জানান, বছরের এই সময়টাতে তারা আউশ ধান ঘরে তোলার প্রস্তুতি নেন। কিন্তু হঠাৎ করে টানা কয়েক দিনের অতিবৃষ্টি এবং পারিশ্রমিক বাড়ায় কামলার সংকট দেখা দিয়েছে। ফলে ধান কাটতে না পেরে তারা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। বিশেষ করে দিনমজুরদের মজুরি প্রতিদিন ৮০০ থেকে ১০০০ টাকা হওয়ায় দরিদ্র কৃষকদের জন্য ধান ঘরে তোলা কঠিন হয়ে পড়েছে।
মেহার গ্রামের কৃষক আব্দুর রহিম বলেন, “পাঁচ বিঘা জমিতে আউশ ধান করেছি। কিন্তু এখন কামলা পাচ্ছি না, আর যেটুকু ধান কাটছি তাও বৃষ্টিতে ভিজে যাচ্ছে।”
চান্দিনা উপজেলা কৃষি ওয়েবসাইটের হিসাব মতে, চলতি মৌসুমে চান্দিনা উপজেলায় প্রায় ৯০৫৬ হেক্টর জমিতে আউশ ধান আবাদ হয়েছে। এর মধ্যে অনেক জমির ধান পেকে গেলেও অনুকূল আবহাওয়ার অভাবে কৃষকরা তা ঘরে তুলতে পারছেন না।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা জানান, টানা বৃষ্টির কারণে কৃষকরা কিছুটা সমস্যায় পড়েছেন। তবে আবহাওয়া স্বাভাবিক হলে দ্রুত ধান কেটে ফেলার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। সেইসঙ্গে কৃষি অফিস থেকে প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।
অন্যদিকে, এলাকার কৃষকদের দাবি, সরকার যদি মজুরি ভিত্তিক কিছু সহযোগিতা করে অথবা কৃষি শ্রমিক সরবরাহে সহায়তা করে, তাহলে অনেক কৃষকের ধান রক্ষা পাবে। না হলে অচিরেই তাদের মাথার ঘাম মাটিতে মিশিয়ে ফলানো ফসল পুরোপুরি নষ্ট হয়ে যাবে।
সচেতন মহলের মতে, গ্রামীণ কৃষিতে প্রযুক্তি ব্যবহার ও শ্রমিক ঘাটতি মোকাবিলায় পরিকল্পিত উদ্যোগ এখন সময়ের দাবি। তা না হলে প্রতি বছরই এমন দুর্ভোগে পড়তে হবে কৃষকদের।