
কুমিল্লার চান্দিনা উপজেলা জুড়ে ড্রেজার। উপজেলার মাধাইয়া, মহিচাইল, সুহিলপুর, বাতাঘাসী, নবাবপুর, গল্লাই ইউনিয়ন থেকে শুরু করে প্রায় সর্বত্রই চলছে ড্রেজার। ভরা বর্ষায় পানি সরবরাহের সুবিধাকে কাজে লাগিয়ে ফসলি জমি থেকে মাটি উত্তোলন করে চলছে কয়েকটি চক্র।
দিনের পর দিন ড্রেজার চালিয়ে রাতারাতি নিজেদের অর্থনৈতিক অবস্থার পরিবর্তন করছে তারা। অভিযানে পাইপ ভাঙ্গা বা ড্রেজার মেশিন জব্দ করা ছাড়া ঘটনার সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ না করায় বেপরোয়া হয়ে উঠেছে ওই ড্রেজার ব্যবসায়ী চক্র।
মাধাইয়া ইউনিয়নের মুরাদপুর গ্রামের বাসিন্দা বিল্লাল হোসেন জানান, মুরাদপুর ব্রীজ সংলগ্ন এলাকায় দীর্ঘ প্রায় ৬ মাস যাবৎ একটি ড্রেজার চলছে। এমন জায়গায় ড্রেজার বসানো হয়েছে পানি অতিক্রম করে সেখানে যাওয়ার মতো কোন সুযোগ নেই। এমনকি ওই জলাশয়ে কোন নৌকার ব্যবস্থাও নেই। ড্রেজারের ব্যবসায় সিন্ডিকেট ভিত্তিক কয়েকজন জড়িত থাকে। রাজনৈতিক দলের নাম ভাঙ্গিয়ে তারা ড্রেজার চালিয়ে ফসলি জমি ধ্বংস করে দিচ্ছে।
রবিবার (১৭ আগস্ট) বিকেলে উপজেলার মাধাইয়া ইউনিয়নের কুটুম্বপুর, মহিচাইল ইউনিয়নের পরচঙ্গা ও বাগমারা গ্রামের পৃথক অভিযান চালায় ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ফয়সাল আল নূর।
এসময় ৬টি ড্রেজার মেশিন ভাঙচুর, ৪ হাজার ফুট পাইপ ধ্বংস ও ২ হাজার ফুট পাইপ জব্দ করেছে ভ্রাম্যমাণ আদালত।
ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ফয়সাল আল নূর জানান, আমরা যেখানেই অভিযোগ পাচ্ছি সেখানেই অভিযান পরিচালনা করছি। গত ৫ মাসে অন্তত ১শ ড্রেজার ধ্বংস করা হয়েছে। তারপরও থেমে নেই তাদের তৎপরতা। এখন বর্ষা মৌসুম, পানিতে টইটুম্বর থাকা ফসলি মাঠের মাঝে ড্রেজার বসানোর কারণে সেখানে যাওয়া অসম্ভব হয়ে পড়ছে। তারপরও যতটুকু পারছি আমরা ধ্বংস করছি।
অভিযানে ড্রেজার মেশিন ভাঙচুর করা হলেও পরিচালনাকারীদের বিরুদ্ধে কেন আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে না? এমন প্রশ্নে তিনি বলেন- আমরা যখন অভিযান যাই তখন ড্রেজারের আশপাশে কাউকে পাওয়া যায় না, এমনকি ওই ড্রেজার কে পরিচালনা করে এমন তথ্য পর্যন্ত কেউ দিতে চায় না। যে কারণে ড্রেজার মালিকদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা যাচ্ছে না। তবে ড্রেজারের বিরুদ্ধে আমাদের অভিযান অব্যাহত থাকবে।