বঙ্গোপসাগরে সৃষ্টি হওয়া গভীর ঘূর্ণিঝড় ‘মিগজাউমের’ প্রভাবে ভারতের চেন্নাই তামিলনাড়ুসহ কয়েকটি প্রদেশে প্রবল বৃষ্টি হচ্ছে। ইতিমধ্যে ভারী বৃষ্টিতে উপকূলীয় বেশকিছু জেলায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে টানা দুদিন ধরে রেকর্ড বৃষ্টিপাত হচ্ছে। ডুবে গেছে অনেক এলাকা। খবর হিন্দুস্থান টাইমস ও এএনআই’র।
মঙ্গলবার (৫ ডিসেম্বর) দুপুরে দেশটির তামিলনাড়ু ও অন্ধ্রপ্রদেশ উপকূলে আঘাত হানতে পারে ঘূর্ণিঝড়টি। তার আগেই সোমবার (৪ ডিসেম্বর) ভারী বৃষ্টিপাতের জেরে চেন্নাইয়ে ৮ জনের মৃত্যু হয়েছে।
ভারতীয় আবহাওয়া অধিদপ্তর জানায়, বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট মিগজাউম সোমবার দুপুরে প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়েছে। আগামী কয়েক ঘণ্টা ভারি বৃষ্টির পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে।
এরই মধ্যে বিভিন্ন এলাকায় যোগাযোগব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। বৈদ্যুতিক খুঁটি এবং গাছপালা ভেঙে পড়েছে। প্লাবিত চেন্নাই বিমানবন্দরের রানওয়েও। জানমালের ক্ষয়ক্ষতি এড়াতে বন্ধ রাখা হয়েছে বিমানবন্দর।
সেখানকার স্থনীয় আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, মঙ্গলবার অন্ধ্রপ্রদেশের নেল্লোর এবং মছলিপত্তনমের মাঝখান দিয়ে স্থলভাগে আছড়ে পড়বে মিগজাউম। তখন তার গতি থাকতে পারে ঘণ্টায় ৯০ থেকে ১০০ কিলোমিটার। ঝোড়ো হাওয়ার গতিবেগ থাকতে পারে ১১০ কিলোমিটার। ঘূর্ণিঝড়টি দক্ষিণবঙ্গের অন্তত ১১ জেলায় তাণ্ডব চালাতে পারে বলেও শঙ্কা করা হচ্ছে।
চেন্নাই শহর এবং এর আশপাশের জেলাগুলোতে রাতভর ভারি বৃষ্টিপাত হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তার জন্য উপকূলীয় অঞ্চলে প্রায় ৫ হাজার আশ্রয় কেন্দ্র স্থাপন করেছে কর্তৃপক্ষ। সেখানে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে বহু মানুষকে। অনেকে ঝুঁকি নিয়েই অবস্থান করছেন বাড়িতে।
পরিস্থিতির বিবেচনায় তামিলনাড়ু সরকার সোমবার পুদুচেরি, কারাইকাল এবং ইয়ানাম অঞ্চলের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছুটি ঘোষণা করেছে। বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মীদের বাড়ি থেকে কাজ করতে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি ৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত দূরপাল্লার ট্রেনসহ রাজ্যের শতাধিক ট্রেনের শিডিউল বাতিল করা হয়েছে। এ ছাড়া জলাবদ্ধতার কারণে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে ১৪টি সাবওয়ে।
এদিকে আবহাওয়া গবেষক মোস্তফা কামাল পলাশ তার ফেসবুক স্ট্যাটাসে জানিয়েছেন, ঘূর্ণিঝড় ‘মিগজাউমে’ বাংলাদেশের উপকূলে আঘাত হানার কোনো সম্ভাবনা নাই। তবে এই ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে ৫ থেকে ৮ ডিসেম্বর পর্যন্ত বাংলাদেশে ওপরে বৃষ্টির প্রবল সম্ভাবনা রয়েছে।
ঘূর্ণিঝড় ‘মিগজাউম’ এর প্রভাবে সবচেয়ে বেশি বৃষ্টি হওয়ার শঙ্কা রয়েছে বাংলাদেশের মধ্যাঞ্চলের জেলাগুলোর ওপরে। বিশেষ করে রাজশাহী, ঢাকা, খুলনা বিভাগে উত্তরের জেলাগুলো, চট্টগ্রাম বিভাগের উত্তরের জেলাগুলোর ওপরে।
দেশের মধ্যাঞ্চলের জেলাগুলোর ওপরে ৭৫ থেকে ১২৫ মিলিমিটার পর্যন্ত বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের জেলাগুলোর ওপরে ৫০ থেকে ১০০ মিলিমিটার ও রংপুর, ময়মনিসংহ, ও সিলেট বিভাগের জেলাগুলোর ওপরে ২৫ থেকে ৫০ মিলিমিটার পর্যন্ত বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে।