
সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ মোট ৩ হাজার ১৯৯ কোটি ৪০ লাখ টাকা ব্যয়ে ১১টি ক্রয় প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছে।
মঙ্গলবার (০৭ অক্টোবর) সচিবালয়ে অনুষ্ঠিত ক্রয় কমিটির এই বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহ উদ্দিন আহমেদ।
অনুমোদিত প্রস্তাবগুলোর মধ্যে প্রধানত রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র থেকে ২ লাখ ২০ হাজার মেট্রিক টন গম, ভারত থেকে ৫০ হাজার মেট্রিক টন নন-বাসমতি সিদ্ধ চাল এবং বিভিন্ন দেশ থেকে মোট ২ লাখ ৩০ হাজার মেট্রিক টন সার আমদানি।
মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, যুক্তরাষ্ট্র থেকে সরকারি পর্যায়ে (জি-টু-জি) ২ লাখ ২০ হাজার মেট্রিক টন গম আমদানির একটি প্রস্তাব অনুমোদন পেয়েছে। গম সরবরাহ করবে ইউএস হুইট এসোসিয়েটস কর্তৃক মনোনীত প্রতিষ্ঠান ‘অ্যাগ্রোকর্প ইন্টারন্যাশনাল পিটিই লিমিটেড’। প্রতি মেট্রিক টন গমের দাম পড়বে ৩০৮ ডলার, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় মোট ৮২৫ কোটি ৩১ লাখ ৬৮ হাজার টাকা ব্যয় হবে।
আন্তর্জাতিক উন্মুক্ত দরপত্রের মাধ্যমে প্যাকেজ-০১-এর আওতায় ৫০ হাজার মেট্রিক টন নন-বাসমতি সিদ্ধ চাল ক্রয়ের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এই চাল সরবরাহ করবে ভারতীয় প্রতিষ্ঠান ‘মেসার্স বাগাদিয়া ব্রাদার্স প্রাইভেট লিমিটেড’। প্রতি মেট্রিক টন চালের জন্য খরচ হবে ৩৫৯.৭৭ ডলার, এবং এতে মোট বাংলাদেশি মুদ্রায় ব্যয় হবে ২১৯ কোটি ৯ লাখ ৯৯ হাজার টাকা।
বৈঠকে রাষ্ট্রীয় চুক্তির আওতায় বিএডিসি কর্তৃক চীন ও সৌদি আরব থেকে মোট ১ লাখ ৬০ হাজার মেট্রিক টন ডিএপি সার আমদানির প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
এর মধ্যে প্রতি মেট্রিক টন ৭৬৮.৭৫ ডলার দরে চীনের ‘বানিয়ান ইন্টারন্যাশনাল ট্রেডিং লিমিটেড’ থেকে প্রতি প্যাকেজে ৪০ হাজার মেট্রিক টন করে তিনটি প্যাকেজে (প্যাকেজ নং ৪, ৫ ও ৬) মোট ১ লাখ ২০ হাজার টন ডিএপি সার আমদানিতে বাংলাদেশি মুদ্রায় ব্যয় হবে ১ হাজার ১২৯ কোটি ১৪ লাখ টাকা।
অবশিষ্ট ৪০ হাজার মেট্রিক টন ডিএপি সার আমদানি করা হবে সৌদি আরব-এর মা’এডেন থেকে। প্রতি মেট্রিক টন ৭৮৪ ডলার দরে বাংলাদেশি মুদ্রায় এতে ব্যয় হবে ৩৮৩ কোটি ৮৪ লাখ ৬৪ হাজার টাকা।
এছাড়া বৈঠকে বিএডিসি কর্তৃক রাষ্ট্রীয় চুক্তির আওতায় কানাডিয়ান কমার্শিয়াল কর্পোরেশন থেকে ৮ম লটের আওতায় ৪০ হাজার মেট্রিক টন এমওপি সার আমদানির আরেকটি পৃথক প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। প্রতি মেট্রিক টন ৩৫৬.২৫ ডলার দরে বাংলাদেশি মুদ্রায় এতে ব্যয় হবে ১৭৪ কোটি ৪২ লাখ টাকা।
এছাড়া বৈঠকে সৌদি আরব-এর ‘সাবিক এগ্রি-নিউট্রিয়েন্টস কোম্পানি’ থেকে ৩য় লটে ৩০ হাজার মেট্রিক টন বাল্ক গ্র্যানুলার ইউরিয়া সার আমদানির একটি প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। প্রতি মেট্রিক টন ৪৩৫ ডলার দরে বাংলাদেশি মুদ্রায় এতে ব্যয় হবে ১৫৯ কোটি ৯৯ লাখ ৩০ হাজার টাকা।
অন্যান্যের মধ্যে বৈঠকে ‘ঢাকা ও ময়মনসিংহ বিভাগে বিদ্যুৎ বিতরণ ব্যবস্থার আধুনিকায়ন ও ক্ষমতাবর্ধন’ প্রকল্পের একটি প্যাকেজ কাজের দুটি লটের (প্যাকেজ নং ডব্লিউ-৩, লট-১ ও ২) কাজ সম্পাদনে দুটি পৃথক প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। সর্বনিম্ন দরদাতা হিসেবে দুটি লটের কাজই পেয়েছে স্থানীয় প্রতিষ্ঠান ‘আইডিয়াল ইলেকট্রিক্যাল এন্টারপ্রাইজ লিমিটেড’। এর মধ্যে লট-১-এ ব্যয় হবে ১২৮ কোটি ৯ লাখ ২৯ হাজার টাকা এবং লট-২-এ ব্যয় হবে ১২৭ কোটি ৬৩ লাখ ৭৩ হাজার টাকা।
এছাড়া বৈঠকে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ কর্তৃক বাস্তবায়নাধীন ‘ডিজিটাল সরকার ও অর্থনীতি শক্তিশালীকরণ’ শীর্ষক প্রকল্পের একটি প্যাকেজ কাজ বাস্তবায়নে ঠিকাদার নিয়োগের একটি প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এ কাজটি করবে ‘স্পেকট্রাম ইঞ্জিনিয়ারিং কনসোর্টিয়াম (প্রাইভেট) লিমিটেড। এতে ব্যয় হবে ৫১ কোটি ৮৫ লাখ ২৯ হাজার টাকা।
উল্লেখিত ১১টি মূল প্রস্তাবের বাইরে বৈঠকে দুটি প্রকল্পের ব্যয় সংশোধনের (ভেরিয়েশন) প্রস্তাব উপস্থাপন করা হয়। এর মধ্যে ‘ঢাকা ওয়াটার সাপ্লাই নেটওয়ার্ক ইমপ্রুভমেন্ট প্রজেক্ট’-এর একটি প্যাকেজ কাজের ব্যয় ১২ কোটি ৯ লাখ টাকা বাড়ানোর প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
আর পায়রা সমুদ্র বন্দরের প্রথম টার্মিনাল এবং আনুষঙ্গিক সু্বিধাদি নির্মাণ (২য় সংশোধিত)’ প্রকল্পের ১ লাখ ১২ হাজার টাকা ব্যয় হ্রাসের ভেরিয়েশন প্রস্তাবটি বৈঠকে অনুমোদন দেওয়া হয়নি।