জুলাই ১, ২০২৫

মঙ্গলবার ১ জুলাই, ২০২৫

ক্যাম্পাসে ৪০০ নিম চারা রোপণের উদ্যোগ ববি শিক্ষার্থীর

Rising Cumilla -Bobby student takes initiative to plant 400 neem saplings on campus
ক্যাম্পাসে ৪০০ নিম চারা রোপণের উদ্যোগ ববি শিক্ষার্থীর/ছবি: প্রতিনিধি

শহরের অপরিকল্পিত নগরায়ণের ফলে ক্রমেই হারিয়ে যাচ্ছে প্রাকৃতিক পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য। তাপমাত্রা বৃদ্ধি ও বায়ু দূষণের মতো নানা সমস্যার মুখোমুখি হচ্ছে নগরবাসী। ঠিক এই চিত্র বদলে দিতে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী জিহাদ হোসেন SUEDA – Sustainable Urban Ecosystem Development Association নামে একটি সচেতনতামূলক প্রকল্প গঠন করেছেন। যার লক্ষ্য, নগর অঞ্চলে ইকোসিস্টেম ব্যবস্থার উন্নয়ন।

প্রকল্পটির মাধ্যমে তিনি বালুমাটি ব্যবহার করে ৪০০টি নিমবীজ থেকে চারা উৎপাদন করেছেন, যেগুলো পর্যায়ক্রমে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে রোপণের পরিকল্পনা রয়েছে।

জিহাদ হোসেন বলেন, “গত বছর আমি হার্ভার্ড ইউনিভার্সিটির Aspire Institute পরিচালিত Aspire Leaders Program-এ নির্বাচিত হই। সেখানে আমি লিডারশিপ, কমিউনিকেশন স্কিল, ক্রিটিক্যাল থিংকিং ও গ্লোবাল নেটওয়ার্ক নিয়ে পাঁচ মাস ব্যাপী প্রশিক্ষণ গ্রহণ করি। সেই প্রোগ্রামে অংশগ্রহণের পর থেকেই আমি সমাজে একটি ইতিবাচক পরিবর্তন আনার কথা ভাবতে থাকি।”

তিনি আরও বলেন, “আমার শ্রদ্ধেয় শিক্ষক অসীম কুমার নন্দী স্যারের Urban Sociology কোর্স পড়াকালীন নগরায়ন সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারি, নগরায়নের বিভিন্ন সমস্যা উদঘাটন করার চেষ্টা করি এবং গভীর পর্যবেক্ষণ করে দেখি যে দেশের শহরাঞ্চলের ৯০ শতাংশ এলাকায় ইকোসিস্টেম কার্যত অনুপস্থিত। মানুষ শহরে গাছ লাগালেও তা মূলত সৌন্দর্য বৃদ্ধির জন্য। কিন্তু প্রকৃত অর্থে, বাস্তুসংস্থান গড়ে তুলতে প্রয়োজন পরিকল্পিতভাবে বৃক্ষ রোপণ ও পরিবেশবান্ধব অবকাঠামো গড়ে তোলা।”

তিনি বলেন, “আমার এই SUEDA প্রকল্পের মূল ভিশন হলো ” একটি বাড়ি, একটি গাছ” অর্থাৎ প্রত্যেক শহরের গলির প্রতিটি বাসার সামনে অন্তত একটি করে নিমগাছ রোপণ করা এবং নতুন হাউজিং প্রকল্পে Urban Ecosystem Policy প্রয়োগ হচ্ছে কি না, তা তদারকি করা। নিমগাছ পরিবেশের জন্য উপকারী, এটি বায়ু বিশুদ্ধ করে, মশা-পোকামাকড় দূরে রাখে এবং টেকসই ইকোসিস্টেম গঠনে বড় ভূমিকা রাখে।”

এই প্রকল্প বাস্তবায়নের নমুনা ধাপে পাশে দাঁড়িয়েছেন Moral Parenting Trust Organization-এর প্রতিষ্ঠাতা লেফটেন্যান্ট কর্নেল ড. মো. মাহবুবর রহমান (অব.)। তিনি বর্তমানে মিলিটারি ইনস্টিটিউট অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজির (MIST) সহযোগী অধ্যাপক হিসেবে কর্মরত। তার অর্থায়নেই এই ৪০০ নিম গাছের চারা উৎপাদন সম্ভব হয়েছে।

প্রসঙ্গত, জিহাদ United Nations Millennium Fellowship-এর জন্যও আবেদন করেছেন এই প্রকল্প নিয়ে, যার ফলাফল এখনো প্রকাশ হয়নি। তবে তিনি অপেক্ষা না করে ইতোমধ্যেই কাজ শুরু করেছেন মাঠপর্যায়ে। বর্তমানে তিনি Aspire Institute-এর একজন Alumni এবং স্বেচ্ছাসেবক সদস্য হিসেবেও কাজ করে যাচ্ছেন।

পরিকল্পিত নগরায়নের পাশাপাশি ইকোসিস্টেম রক্ষায় এমন তরুণ উদ্যোক্তার উদ্যোগ এক নতুন দৃষ্টান্ত হয়ে উঠতে পারে বাংলাদেশের শহরাঞ্চলের জন্য। SUEDA’র মত প্রকল্প ছড়িয়ে পড়লে শহর হয়ে উঠতে পারে প্রকৃত অর্থে বাসযোগ্য এবং পরিবেশবান্ধব।

আরও পড়ুন