নভেম্বর ২১, ২০২৪

বৃহস্পতিবার ২১ নভেম্বর, ২০২৪

কুমিল্লার এই গ্রামের বাজারে বসে শতবছরের নৌকার হাট

Boat market in Cumilla
ছবি: সংগৃহীত

বর্ষাকালকে বলা হয় বাঙালি জাতির অন্যতম প্রিয় ঋতু। আর বর্ষাকাল এলেই কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার রামচন্দ্রপুর বাজারে জমে উঠে শতবছরের নৌকার হাট। 

সরেজমিনে ঘুরে জানা গেছে, দেশের জনপদ রাস্তা-ঘাট ব্রিজ কালভার্ট তৈরি হওয়ায় ডিঙি, ডোঙা, সাম্পান, বজরা, গয়না, ময়ূরপঙ্খী, বালার, পানসী, ইলশা ও সওদাগরী নৌকা বড় বড় পণ্যবাহী নৌকার বিলপ্ত ঘটলেও রামচন্দ্রপুর বাজারে কোষা নৌকার হাট এখনও টিকে আছে কালের সাক্ষী হয়ে।

এই নৌকার হাটে নারায়ণগঞ্জের আড়াই হাজার, নরসংদীর মাদবদী, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা ও কুমিল্লার হোমনা, মুরাদনগর উপজেলার শত শত মানুষ নৌকা কিনতে ও বিক্রি করতে আসেন।

মুরাদনগর উপজেলা ২২টি ইউনিয়ন ৩০৮টি গ্রামের ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া তিতাস নদী, গোমতী নদী, আরচি নদী, বুড়ি নদী, অদের খাল, নিমাইজুড়ি খাল, বিল, হাওড় বাওরে প্রতিটি জনপদে বাড়ছে পানি। ফলে কদর বেড়েছে ছোট ছোট নৌকার।

গত মঙ্গলবার সাপ্তাহিক হাটে নৌকার হাট গিয়ে দেখা যায়, বাস স্টার্মিনাল ও কাচারি বাজার এলাকাজুড়ে নানা ঢংয়ের ছোট ছোট নৌকা। পুরো এলাকা দৃষ্টিনন্দন করেছে সারিবদ্ধভাবে রাখা শত শত কোষা নৌকা। ক্রেতাদের ভিড়ে জমে ওঠেছে হাট। এখানে সাধ্যের মধ্যে সব শ্রেণি-পেশার মানুষের জন্য পাওয়া যাচ্ছে নানা মাপের নৌকা। কাঠমিস্ত্রিরা এমনিতে নৌকা প্রস্তুত করে রাখেন। ভাটি অঞ্চলের মানুষ রামচন্দ্রপুর বাজার ও ডুমুরিয়া বাজার হাট থেকে নৌকা কেনেন।

এই বাজারের বিষয়ে নৌকা ঘাটের ইজারাদার মুশিদ মিয়া গণমাধ্যমকে জানান, এখানে নামে মাত্র নৌকার ট্যাক্স নেওয়া হয়। এসবের মধ্যে হাতে বাওয়া নৌকা যেমন রয়েছে, তেমনি আছে ইঞ্জিনচালিত নৌকা। ছোট নৌকা ৩ থেকে ১০ হাজার টাকা, মাঝারি নৌকা ১২ থেকে ২০ হাজার টাকা এবং বড় নৌকা ৩০ থেকে ৫০ হাজার টাকায় বিক্রি করা হয়ে থাকে।

উপজেলার কৈজুরি গ্রামের নৌকার কারিগর রামপ্রসাদ সরকার ও বিক্রেতা বিমল সরকার গণমাধ্যমকে বলেন, প্রতি সপ্তাহে ১০ থেকে ১২টি নৌকা তৈরি করে হাটে নিয়ে আসি। বর্তমানে কাঠ লোহা ও অন্যান্য সাঞ্জামাদির দাম বেড়ে যাওয়ায় নৌকা তৈরিতে খরচ বেড়েছে। আমরা জামরুল, রেইনটি, আম,কদম ও শিমুল কাঠ দিয়ে নৌকা তৈরি করি।

ছোট নৌকা কিনতে আসা নবীনগর উপজেলা রতনপুর ইউনিয়নের বাজে বিশাড়া গ্রামের মাহমুদুর রহমান সুমন গণমাধ্যমকে বলেন, আমার মাছের প্রজেক্ট আছে। আমাদের গ্রামটি ছোট। খুবই নিচু এলাকা। সামান্য বর্ষাতে রাস্তা-ঘাট-ব্রিজ তলিয়ে যায়। বর্ষার সময় একমাত্র বাহন হচ্ছে নৌকা।