জুন ৬, ২০২৫

শুক্রবার ৬ জুন, ২০২৫

কুমিল্লায় চাহিদা বেশি ছোট ও মাঝারি আকারের গরুর

ছবি: সংগৃহীত

কুমিল্লায় জমে উঠেছে কোরবানির পশুর হাট। ক্রেতা-বিক্রেতাদের উপস্থিতিতে চলছে দেশি গরু ও ছাগল বেচাকেনা। প্রাকৃতিক উপায়ে কোরবানির পশু মোটাজাতকরণ করছে খামারিরা। হাটে তুলনামূলক ক্রেতা কম থাকায় চিন্তায় খামারিরা।

এদিকে পশুর দাম নিয়ে আছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া। বিক্রেতারা বলছেন, লালনপালনের খরচ বেশি হয়েছে এবার। তাই কম দামে পশু ছাড়ার সুযোগ নেই। অন্যদিকে ক্রেতারা বলছেন, দাম কিছুটা বাড়া স্বাভাবিক না, তবে স্বাভাবিকের চেয়ে ১৫-২০ শতাংশ বেশি দাম চাচ্ছেন ব্যবসায়ীরা।

জেলা প্রাণীসম্পদ কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, প্রতি বছরের মতো এবারও স্থানীয় চাহিদার তুলনায় পশু বেশি রয়েছে কুমিল্লায়। এবার কুমিল্লায় ২ লাখ ৩৭ হাজার ৫৮৬টি কোরবানির পশুর চাহিদা রয়েছে। বিপরীতে, জেলায় মোট গবাদি পশুর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২ লাখ ৬০ হাজার ৭৫২টিতে। এই বিপুল সংখ্যক পশু জেলার অভ্যন্তরীণ চাহিদা পূরণের পাশাপাশি উদ্বৃত্তও থাকবে বলে আশাবাদী অধিদপ্তর।। তারমধ্যে বাণিজ্যিক ও পারিবারিকভাবে লালন-পালন করা হচ্ছে ১ লাখ ৯১ হাজার ৮২টি গরু, ৬০৮টি মহিষ, ৫৬ হাজার ৯৪০টি ছাগল, ১১ হাজার ৮০৫টি ভেড়া এবং ৩১৭টি অন্যান্য পশু রয়েছে। জেলার প্রতিটি উপজেলার চিত্র একই রকম।

আদর্শ সদরে ১৬ হাজার ৭৬৩টি, চৌদ্দগ্রামে ১৩ হাজার ৩৯৯টি, বরুড়ায় ২৩ হাজার ১২টি, লাকসামে ৩৩ হাজার ৮৬৭টি, নাঙ্গলকোটে ২৭ হাজার ১৭৪টি, চান্দিনায় ১৫ হাজার ২১০টি, দাউদকান্দিতে ৯ হাজার ২৫০টি, দেবিদ্বারে ১৪ হাজার ৮৪২টি, মুরাদনগরে ১৯ হাজার ৪৯টি, বুড়িচংয়ে ৯ হাজার ৬৬৪টি, ব্রাহ্মণপাড়ায় আট হাজার ৭৬৪টি, হোমনায় ১৩ হাজার ৩৬২টি, মেঘনায় আট হাজার ৭২৭টি, তিতাসে ছয় হাজার ৮৭১টি, সদর দক্ষিণে ৯ হাজার ৬৪৯টি, মনোহরগঞ্জে ১১ হাজার ৯১১টি এবং লালমাই উপজেলায় ১৯ হাজার ২৩৮টি কোরবানির পশু প্রস্তুত রয়েছে।

খামারিরা জানান, দেশি জাতের গরু ও ছাগলের চাহিদা বেশি। ফুলগাজীর খামারি মো. ফজলুল হক বলেন, ‘এবার মাঝারি ও বড় আকারের গরু বেশি এসেছে। দেশি গরুর গুণগত মান ভালো, তবে খাদ্যের দাম বাড়ায় লালনপালনের খরচ বেড়েছে।’

খামারিরা জানান, গো-খাদ্যের মূল্যবৃদ্ধির কারণে উৎপাদন খরচ বেড়েছে। ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার সদর ইউনিয়নের কল্পবাস গ্রামের খামারী মোঃ শাহ আলম বলেন, একটি গরুর পেছনে যে অর্থ খরচ করা হচ্ছে, বিক্রয় করে সেই তুলনায় লাভ করা যাচ্ছে না। এর কারণ হিসেবে তিনি বলেন গো-খাদ্যে, ভিটামিন ও রোগপ্রতিরোধক ওষুধসহ অন্যান্য খরচ অনেক বেশি সে তুলনায় গরুর দাম বৃদ্ধি হয়নি।

ক্রেতারা দাম নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া জানাচ্ছেন। রফিকুল ইসলাম নামে একজন বলেন, মাঝারি গরুর দাম ৮০ হাজার থেকে ১ লাখ ২০ হাজার টাকা। গত বছরের তুলনায় দাম ১৫-২০ শতাংশ বেশি। তবে কেউ কেউ মনে করেন, গুণগত মান বিবেচনায় দাম যুক্তিসংগত।

জেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয়ের হিসাবে, গড়ে প্রতিটি গরুর দাম ৮০ হাজার থেকে ৫ লাখ টাকা এবং ছাগলের দাম ১৫ হাজার থেকে ৪০ হাজার টাকার মধ্যে রয়েছে। সে হিসেবে এবার কুমিল্লার হাটে প্রায় ১৫০০ কোটি টাকার পশু বেচাকেনা হতে পারে।

আরও পড়ুন